প্রতীকী ছবি
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা ১ ব্লকে রয়েছে জাড়া গ্রাম। সেই গ্রামেই রয়েছে জমিদার রায়দের বাড়ি। এই বাড়ির পুজো এবার পা রাখতে চলেছে ২২৪ বছরে। ঐতিহ্যপূর্ণ এই রায় বাড়ির পুজোয় এক সময় আসতেন স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে রাজা রামমোহন রায়। পা পড়েছে উত্তম কুমারেরও।
১৭২৪ খৃষ্টাব্দে রামগোপাল রায় প্রতিষ্ঠা করেন এই জমিদার বাড়ি। পরে ছেলে রাজীবলোচন রায় হন জমিদার। ‘রাজা’ উপাধি পেয়েছিলেন বর্ধমানের রাজার থেকে। তাঁর হাত ধরেই বাড়িতে দুর্গা পুজোর শুরু হয়। শোনা যায় এই রাজীবলোচন রায়ের বন্ধু ছিলেন রাজা রামমোহন রায়। তাই জাড়া গ্রামে ছিল তাঁর যাতায়াত। আবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল রায় পরিবারের। রাজীবলোচন রায়ের অনুরোধে এবং সহযোগিতায় তিনি এখানে প্রতিষ্ঠা করেন জাড়া বিদ্যালয়ের। সেই সূত্রেই নাকি পুজোর সময় বেশ কয়েকবার এখানে এসেছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয়।
আবার মহানায়ক উত্তম কুমার আসেন এই জাড়া জমিদার বাড়িতে। মহানায়ক ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী’ ছবির শুটিং করেন এই বাড়িতে। ‘কি করে বললি জগা জাড়ার গোলক বৃন্দাবন’ গানটি নাকি এই বাড়ির বর্নণা দেয় বলেও শোনা যায়।
প্রাচীন এই বাড়ির কুলদেবতা গোপাল। রয়েছে শিব, বিষ্ণু, কালী সহ আরও নানা দেবদেবীর মন্দির। এক সময়ে রূপোর পালকিতে করে নবপত্রিকা স্নানে নিয়ে যাওয়া হত। আজ অবশ্য সেই পালকি আর নেই। তবে এখন নিয়ম মেনে শোভাযাত্রা করে নবপত্রিকা স্নানে নিয়ে যাওয়া হয়। পুজোর দিনে ব্যবস্থা থাকে নরনারায়ণ সেবার। কুলদেবতাকেও নিয়ে আসা হয় দুর্গা দালানে। পুজোর ক’টা দিন সেখানেই থাকেন গোপাল। পুজোর ভোগ রান্নাতেও রয়েছে বিশেষ রীতি। বাড়ির দীক্ষিত মেয়েরাই রান্না করতে পারেন ভোগ। সাহায্য করতে পারেন বাড়ির ছেলেরা। এই বাড়ির পুজোয় আরেক বিশেষ নিয়ম হল সিঁদুর খেলা। দশমীতে নয়, সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীর দিনে। ২২৪ বছরের এই পুজো দেখতে আজও বহু দূর থেকে ছুটে আসেন মানুষ।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy