এ বার পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে যে বারোয়ারি প্যান্ডেলগুলিতে না গেলেই বিরাট 'লোকসান' হয়ে যাবে, সেগুলির মধ্যে নিঃসন্দেহে অন্যতম হল - শ্যামপুকুর এলাকার উত্তর কলকাতা সার্বজনীন দুর্গোৎসব। কেন একথা বলছি? কারণ, এই এলাকাই হল কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পাড়া!
পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে শুভাশিস চক্রবর্তী জানান, তাঁদের এই বারোয়ারি পুজোর বয়স এ বার ৯৪ বছর হল। আর এ বারই প্রথম তাঁরা থিম পুজোয় সামিল হলেন! এক্ষেত্রে স্বয়ং ভদ্রমশাই ছাড়া আর কী-ই বা থিম হতে পারে! এই ভাবনা ও আবেগ থেকেই এ বছরের থিমের নামকরণ করা হয়েছে - 'এবার শুধু ভদ্র কথা'!
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরনিগমের অন্তর্গত এই ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০বি রামধর মিত্র লেনে যে বাড়িটি রয়েছে, একটা সময় সেই বাড়িরই বাসিন্দা ছিলেন প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। তাঁর নামে পাড়ায় একটি মঞ্চ রয়েছে। প্রতি বছর সেই 'বীরেন্দ্র মঞ্চ'-এর সামনেই দশভূজার পুজোর আয়োজন করা হয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এ বছরের প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী সুশান্ত দাস।
অন্যদিকে, থিম ভাবনা রূপায়নের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তাঁর নাম - শম্ভু সাহা। তিনি জানান, আজ থেকে বহু দশক আগে যখন প্রথম বার রেডিয়োয় ভদ্রমশাইয়ের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী সম্প্রচারিত হয়েছিল, সেই সময় শহর কলকাতার বাসিন্দাদের অন্দরমহলে যেমন আবহ ছিল, মণ্ডপসজ্জায় সেই আবেশই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
মণ্ডপসজ্জায় সবথেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে দেওয়ালচিত্র। সে দিকে চোখ গেলেই মনে হবে, আমাদের প্রিয় শহরটি বুঝি টাইম মেশিনে চেপে কয়েক দশক পিছিয়ে গিয়েছে। পুরোনো কলকাতার অবয়ব ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের প্রতিকৃতি এবং রেডিয়ো ও কলকাতা বেতার অফিসও মণ্ডপসজ্জায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।