প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

দেবীর গায়ের রং কালো, জানেন কোথায় হয় কৃষ্ণবর্ণের দুর্গা প্রতিমার পুজো?

মা দুর্গা হবেন গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা– এটাই প্রচলিত ধারণা। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। কৃষ্ণবর্ণের দুর্গারও আরাধনা হয় বাংলায়।

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৫
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

দেবী দুর্গার বর্ণনায় বলা হয়, মা দুর্গা হবেন গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা। তেমন রূপে প্রতিমা গড়েন বাংলার মৃৎশিল্পীরা। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে, কৃষ্ণবর্ণের দুর্গারও আরাধনা হয় এই বাংলাতেই। শাস্ত্র অনুযায়ী, দুর্গা হবেন অতসী পুষ্পবর্ণা। অতসী শব্দের অভিধানিক অর্থ ক্ষুমা। গ্রাম বাংলার ক্ষুমা ফুলের বর্ণ কিন্তু কালো। ফলে তেমন ভাবে দেখলে কালো দুর্গা অশাস্ত্রীয় নয়।

বাংলার নানা প্রান্তে কালো দুর্গা প্রতিমার পুজো হয়। সেগুলো মূলত পারিবারিক দুর্গাপুজো। বর্ধমানের ভট্টাচার্য পরিবারে যেমন প্রায় তিনশো বছর ধরে ‘ভদ্রকালীরূপী দুর্গা’র পুজো হচ্ছে। দেবীর রং কালো। পুজো শুরু হয়েছিল ওপার বাংলায়। প্রচলিত কাহিনি অনুসারে, এই পরিবারের পূর্বপুরুষ হরিদেব ভট্টাচার্যকে দেবী দুর্গা স্বপ্নাদেশ দিয়ে ভদ্রকালীরূপে পুজো করতে বলেন। সেই থেকেই কালো দুর্গার আরাধনা চলছে ভট্টাচার্য বাড়িতে। যদিও কেউ কেউ বলেন, প্রতিমাশিল্পী ভুলবশত কালো রং করে ফেলেছিলেন এবং সময় না-থাকায় ওই মূর্তিই পুজো করা হয়।

দেশভাগের পর ভট্টাচার্য পরিবার এপার বাংলায় চলে আসে। পরিবারের কিছু সদস্য কর্মসূত্রে নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। আসানসোল ও কলকাতায় পুজো শুরু হয়। সাতের দশক পর্যন্ত আসানসোলে, তার পরে বছর পাঁচেক দুর্গাপুরে পুজো হয়। এর পরে কলকাতার বেলেঘাটায় পুজো স্থানান্তরিত হয়। বর্ধমানের পাশাপাশি বেলেঘাটার রামকৃষ্ণ নস্কর লেনের ভট্টাচার্য বাড়িতেও কালো দুর্গার পুজো হয়। কালো দুর্গা প্রতিমার ক্ষেত্রে দেবীর বাম দিকে থাকেন গণেশ এবং ডান দিকে কার্তিক। পূর্ববঙ্গে শুরু হওয়া অধিকাংশ পুজোয় গণেশ ও কার্তিকের প্রচলিত স্থানের এমন অদল-বদল দেখা যায়।

নদিয়া জেলাতেও কালো দুর্গার আরাধনা হয়। হাঁসখালির বাহিরগাছি গ্রামের দেবীমূর্তির রং কুচকুচে কালো। এই পুজো আশ্রমের, যা এলাকায় শান্তি আশ্রম বলে পরিচিত। একদা এই পুজো ছিল বাংলাদেশের পাবনা জেলার স্থলগ্রামের জমিদার বাড়ির। সেই বাড়ির ভূপেশচন্দ্র ভট্টাচার্য হিমালয় ভ্রমণে বেরিয়ে সন্ন্যাসী হয়ে যান। বাহিরগাছিতে এসে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে দুর্গাপুজো শুরু করেন তিনিই। জানা যায়, ভুল করে দেবীর গায়ে কালো রং করে ফেলেছিলেন মৃৎশিল্পী। জনশ্রুতি রয়েছে, ঘুমের ঘোরে রং করতে গিয়ে বিপত্তি বাধান পটুয়া। তার পরে দেবী স্বপ্নাদেশে জানান, কৃষ্ণবর্ণের রূপেই পুজো হোক।

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে ধনকৈল গ্রামের পাকড়াশি বাড়ির দুর্গাও কালো। ওপার বাংলার পাবনায় এই পুজোর সূচনা। বাংলার প্রায় প্রতিটি কালো দুর্গা পুজোর শিকড় রয়েছে ওপার বাংলায়। কোথাও দুর্ঘটনা, কোথাও পটুয়ার ভুল, আবার কোনও পরিবারে দেবীর স্বপ্নাদেশের কাহিনি। যেন লৌকিক ভাবে দেবীর কালো রূপের নির্মাণ হয়েছে!

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy