Tradition of 415-year-old Chitteswari Durga Puja dgtl
Dakat Barir Durga Puja
স্বপ্নাদেশে ডাকাতের হাতে শুরু হয় পুজো! জানেন কলকাতার প্রাচীনতম দুর্গা মন্দির কোথায় অবস্থিত?
ডাকাত থেকে দেব ভক্ত—চিত্তের হাতে গড়া দুর্গামূর্তি আজও দাঁড়িয়ে কাশীপুরে
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:২৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
১। কলকাতা শহরের বয়স কত? ১৭৮৬ সালের ২৪শে অগস্ট জব চার্নক এই শহরে প্রথম পা রেখেছিলেন। সেই হিসেব অনুযায়ী কলকাতার বয়স ৩৩৮ বছর। তবে কলকাতা হাইকোর্ট সেই ধারণাটি বাতিল করে দিয়েছে। তাই এখন নিশ্চিত করে বলা কঠিন এই শহরের আসল বয়স কত।
০২১২
২। তবে কলকাতার জন্ম রহস্য যা-ই হোক না কেন, এই শহরের উত্তর দিকে অবস্থিত কাশীপুরের কাছে যে মা দুর্গার মন্দিরটি রয়েছে তার প্রতিষ্ঠা ১৬১০ সালে। অর্থাৎ কলকাতার বয়সের থেকে এই মন্দির প্রাচীন।
০৩১২
৩। এই মন্দিরের নাম আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা মন্দির। মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক রুদ্ধশ্বাস কাহিনি।
০৪১২
৪। ষোড়শ শতকের কুখ্যাত ডাকাত সর্দার চিত্তে ডাকাতি করে বড়লোকের সম্পত্তি লুঠ করে তা গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। দেবীর আশীর্বাদ না নিয়ে কোনও ডাকাতই সে কালে ডাকাতি করতে যেত না।
০৫১২
৫। তবে চিত্তের আরাধ্য দেবী ছিলেন কালী। এই ডাকাতের জীবনে হঠাৎ এক নতুন ঘটনা ঘটে।
০৬১২
৬। দেবী দুর্গা তাঁর স্বপ্নে আসেন এবং নির্দেশ দেন গঙ্গা থেকে ভেসে আসা এক প্রকান্ড কাঠের টুকরো দিয়ে যেন দেবীর প্রতিমা তৈরি করা হয়। দেবী এখানে নির্দেশ দিয়েছেন, তাই চিত্তে তাঁর আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।
০৭১২
৭। তৈরি হয় চিত্তেশ্বরী দুর্গা প্রতিমা। সেই প্রতিমা এখনও সযত্নে এই মন্দিরে রাখা আছে। এই প্রতিমাটিকে কলকাতার সব থেকে পুরনো দুর্গা প্রতিমা বলে মনে করা হয়।
০৮১২
৮। আজ কাশীপুরের খগেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রোডে দাঁড়িয়ে আছে সেই মন্দির, ১৬১০ সাল থেকে যেখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে পুজো হচ্ছে। লাল-হলুদের রঙে মোড়া মন্দিরের নাটমন্দিরে প্রতি দিন ভক্তদের ভিড় জমে।
০৯১২
৯। দুর্গা এখানে একা, সঙ্গে নেই গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী বা সরস্বতী। সাদা সিংহ মহিষাসুরের হাত কামড়ে ধরেছে, পাশে রয়েছে বাঘের উপস্থিতিও।
১০১২
১০। মন্দিরের চার পাশে শিব, হনুমান, মা শীতলা, জগন্নাথ-সুবদ্রা-বলরাম, এমনকী লোকনাথ বাবার আসনও আছে। এক কোণে শতাব্দী প্রাচীন নিমগাছ আর অব্যবহৃত শ্মশান পড়ে রয়েছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে, শোনা যায় সেখানে এক কালে তন্ত্রসাধনা চলত।
১১১২
১১। দুর্গা এখানে বিসর্জন পান না। বর্তমানে রায়চৌধুরী পরিবার দেখাশোনা করে এই ঐতিহাসিক পুজোর।
১২১২
১২। জানা যায়, এই অঞ্চলের চারপাশ এক সময় জঙ্গলে ঢাকা ছিল। এমনকী রাতের বেলায় এখানে বাঘেরও আনাগোনা চলত। তাই মা দুর্গার পায়ের কাছে বাঘের প্রতিমা রাখা হয়েছে। এ বার পুজোয় এক বার এই পুজো দেখে আসবেন নাকি? (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)