বাঁকুড়ার গোপবাঁন্দীর দাস পরিবারের লক্ষ্মীপুজোর বয়স ২৫০ বছরেরও বেশি। কথিত আছে, দেবী লক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছিলেন দাস পরিবারের পূর্বপুরুষ তিলক দাস। প্রথমে কুঁড়ে ঘরে শুরু হয় ধনদেবীর আরাধনা। প্রায় ছয় পুরুষ ধরে দাস পরিবার লক্ষ্মীর আরাধনা করছে। এই পরিবারের প্রতিমায় দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে একই চালায়, দেবীর দুই পাশে থাকেন জয়া, বিজয়া। যদিও স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, দেবীর দুই পাশে দুই পরি থাকেন। দ্বিভুজা দেবী দুই হাতে যেন বরাভয়, কৃপা দান করেন।
সংগৃহীত চিত্র।
কোজাগরী পূর্ণিমায় শুরু হয়ে পাঁচ দিন ধরে পুজো চলে। তার পর প্রতিমা বিসর্জন হয়। আগে অস্থায়ী মণ্ডপে পুজো হলেও, এখন স্থায়ী মন্দির তৈরি হয়েছে। কোজাগরী পুজোর পাশাপাশি মন্দিরে নিত্যপুজো হয়। লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে মেতে ওঠে গোটা গ্রাম। কয়েক দিন ধরে খাওয়া-দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে। গ্রামবাসীরা সামিল হন। দেবী লক্ষ্মীর নামে দশ বিঘা জমি রয়েছে, তা থেকে পুজোর ব্যয়ভারের একাংশ বহন করা হয়।
সংগৃহীত চিত্র।
বর্তমানে দাস পরিবারের পুজোর পাঁচ জন পালাদার রয়েছে। তিলক দাসের পুত্র শ্যাম দাসের পাঁচ জন ছেলের মধ্যে পুজোর দায়িত্ব ভাগ হয়েছিল। আজ প্রায় একশো বছরের অধিক সময় ধরে সেই পাঁচ পালাদারই রয়েছে, আর বিভক্ত হয়নি। ফি বছর এক এক পরিবারের পালা পড়ে। প্রতি বছর পাঁচ পালাদারের ঘর থেকে পাঁচটি লক্ষ্মী ও ঘট নিয়ে আসা হয় মূল লক্ষ্মী মন্দিরে। রয়েছে দাস পরিবারের নিজস্ব পুকুর। সেই পুকুর থেকে জল ভরে ঘট নিয়ে মন্দিরে আসেন এক একটি পালাদার পরিবার। তার পর শুরু হয় মূল পুজো। পুজোর সময় মন্দিরে আসেন দমোদর অর্থাৎ নারায়ণ। গোটা বছর জুড়ে এক মাস এক মাস করে দমোদর এক একটি পালাদারের ঘরে ঘোরেন। কোজাগরী পুজোর সময় তিনি লক্ষ্মী মন্দিরে পুজো পান। পুজো শেষে আবার কোনও এক পালাদারের ঘরে ফিরে যান।
আরও পড়ুন:
পাঁচ দিনের পুজোর চতুর্থ দিন গোটা গ্রাম পরিক্রমা করা হয়। ঢাক, বাদ্যি নিয়ে বের হন দাস পরিবারের সদস্যরা, থাকেন গ্রামবাসীরাও। গ্রামের নানা দেবতার থানে পুজো করতে করতে এগিয়ে চলে শোভাযাত্রা। গ্রামের হরি মন্দির, লক্ষ্মীতলা, ভৈরব স্থানে পুজো করা হয়। বিলি করা হয় চিড়ে প্রসাদ। এটাই দাস পরিবারের লক্ষ্মী পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব। পুজো শেষে পঞ্চমদিনে প্রতিমা বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে এনে মন্দিরে রাখা হয়। সেই কাঠামোটিকে পুজো করা হয় বছরভর, আবার তাতেই পরের বছরের প্রতিমা গড়া হয়। বিসর্জনের পর মূল মন্দির থেকে পালাদারদের ঘরে ফিরে আসে লক্ষ্মী মূর্তিগুলি।
তথ্যঋণ: দীপাঞ্জন দাস
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।