কথাতেই বলে, হিন্দুদের একশো তেত্রিশ কোটি দেব-দেবী। আর তাঁদেরই অন্যতম হলেন তিনি। পূজিত হন খাস বাংলার বুকেই। দুর্গা নবমীতে মধ্যরাতে নিভৃতে পুজো পান মহামারী দেবী।
বাঁকুড়ার জামকুড়ি গ্রামের রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে রয়েছে মহামারী পট। তাতেই পূজিত হন এই দেবী, কোনও মূর্তিতে নয়। তাঁর ভয়াবহ রূপ দেখলে গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য।
কিন্তু কেন এমন নাম? জনশ্রুতি অনুযায়ী, মল্লভূমে কলেরার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শুরু হয়েছিল এই মহামারী দেবীর পুজো। দেবীর স্বপ্নাদেশেই নাকি আঁকা হয় তাঁর এই পট। শোনা যায়, যে শিল্পী এই পট এঁকেছিলেন, তিনি নাকি তার পরেই মারা যান। পরবর্তীতে কালের নিয়মে সেই পট জরাজীর্ণ হয়ে গেলেও কেউ ভয়ের চোটে তাকে পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করেননি।
অবশেষে ২০১১ সালে আবার সেই পট পুনর্নির্মাণ করা হয়। জামকুড়ির রাজ পরিবারের অনুরোধে কোনও রকম ভয় না পেয়েই এই কাজ করেন কৃপাময়ী কর্মকার। এই কৃপাময়ী থাকেন বনবীরসিংহ গ্রামে। এই গ্রামের কর্মকার পরিবার বংশপরম্পরায় রাজরাজেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপট এঁকে আসছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই অনুরোধও তাঁদের কাছেই গিয়েছিল, যা ফিরিয়ে দেননি কৃপাময়ী। বর্তমান সময়ে মহামারী দেবী তাঁরই আঁকা পটে পুজো পান।
প্রসঙ্গত, কেবল জামকুড়ির রাজরাজেশ্বরী মন্দিরের মহামারী দেবী নন, মাজডিহা গ্রামের মহাপাত্র পরিবারের ৪৫০ বছরের পুরনো দুর্গার পটচিত্রও নতুন করে আঁকেন তিনি। তাতেই এখন পুজো হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।