এ বার পুজোয় একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার মতো কাউকেই পাচ্ছেন না। আর তাই ঠিক করে ফেলেছেন একাই বেড়াতে যাবেন। একা বেড়াতে যাওয়ার সুবিধা এবং অসুবিধা, দুটোই কিন্তু আছে। প্ল্যান করার আগে বরং দুটো দিক নিয়েই ধারণা থাকুক।
অসুবিধা: অসুবিধার কথা দিয়েই শুরু করা যাক। ধরুন, মনের মতো একটা জায়গা গেলেন। চার পাশে যা যা দেখছেন, সবই কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে ইচ্ছে করছে। এ দিকে, না আছে পাশে কেউ, না আছে ফোনের নেটওয়ার্ক। এমতাবস্থায় মনের কথা মনেই থেকে যেতে বাধ্য। সাধ্য না থাকলে বাধ্য হওয়া ছাড়া উপায় কী! এই গোপন কথাটিই গোপন থাকত না, যদি সঙ্গে এক জন মনের মতো সঙ্গী থাকত।
এ তো গেল দার্শনিক ভাবনা। একটু বাস্তবটাও তলিয়ে দেখা যাক। ধরা যাক, বেড়াতে গিয়ে জ্বর এল! খাবারটা আর কিনে আনতে ইচ্ছে করছে না। সঙ্গে এক জন থাকলে সুবিধা হত না কি?
কিংবা ধরুন, বড়সড় লটবহর নিয়ে স্টেশনে বা বিমানবন্দরে পৌঁছলেন। ঠিক এমন সময়েই প্রকৃতির ডাক এল। এবার কি তবে সব ব্যাগপত্র নিয়েই শৌচাগারে যাবেন নাকি? সঙ্গে এক জন থাকলে এই সময়ে কত সুবিধাই না হত!
এ ছাড়াও ঘরের ভাড়া, গাড়ির খরচ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাবারের খরচও ভাগ হয়েই যেত। তাতে বাজেট একটু কমত বই কী! এ সবই দোকা বা তার বেশি জনে বেড়াতে যাওয়ার সুবিধা। আর একা যাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা।
সুবিধা: এ বার আসা যাক একা বেড়ানোর সুবিধায়। খুবই সরল ব্যাপার। আপনিই নিজের মর্জির মালিক। সকাল ৭টায় বেরোবেন, নাকি ১০টায়— পুরোটাই আপনার ইচ্ছা। কোন দিন কী খাবেন, আদৌ খাবেন কি না, তা নিয়েও কেউ আপনাকে বলতে আসবে না। কতটা খরচ করবেন, কতটা বাঁচাবেন— সেই সিদ্ধান্তও আপনার।
আরও পড়ুন:
এ সব বস্তুবাদী ভাবনার বাইরেও আরও কিছু আছে, যা একা ঘোরার ক্ষেত্রে লাভের।
একা বেরিয়ে পড়লে অনেক বেশি করে নতুন মানুষের সঙ্গে আলাপ করার, তাঁদের জীবন বা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন। শুধু মানুষ কেন, প্রকৃতির সঙ্গেও বেশি করে মিশে যাওয়ার সুযোগ থাকবে একা গিয়ে হাজির হলে। সঙ্গী যিনিই থাকুন, তাঁর সুবিধা-অসুবিধা দুটোই থাকে। সেই বিষয় নিয়েও মাথা ঘামাতে হয় না একা বেড়ালে। মানে পুরোপুরি ‘মি টাইম’।
একা বেড়াতে গেলে মনঃসংযোগ বাড়ে বলেও দাবি করেন কেউ কেউ। যে হেতু প্রতি মুহূর্তে নিজের খেয়াল রাখতে হয়, চার পাশের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়, তাই মনের উপরে নিজের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায় একা বেড়ালে– এমনই মত অনেকের। পাশাপাশি বাড়ে আত্মবিশ্বাসও। সম্পূর্ণ অচেনা পরিবেশে নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে গিয়ে সাহসও বেড়ে যায় এই সময়ে।
শেষ কথা: তা হলে কী সিদ্ধান্ত নিলেন? একা বেড়াবেন? নাকি কারও সঙ্গে যাবেন? সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না যাঁরা, তাঁদের জন্য বরং থাক একটা বিশেষ পরামর্শ। পছন্দের মানুষ বা দলের সঙ্গেই বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করুন। শুধু নির্দিষ্ট গন্তব্যে একাই পৌঁছে যান তিন-চারটে দিন আগে। সকলের সঙ্গে ঘোরাও হবে। আর তার আগে একা একা ঘোরার স্বাদও মিটবে। কে বলতে পারে, এতে হয়তো ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে আপনার।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।