প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

রোমাঞ্চকর ভ্রমণের স্বাদ নিতে চান? চলুন তবে এই গ্রামে

এক কালে যে গ্রামে ছিল বহু মানুষের বাস। আজ সে গ্রাম শুনশান। যাবেন নাকি এমন গাঁয়ে হাড় করা ভয়ের স্বাদ নিতে?

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৬

এ যেন শোলে-র ঠাকুরসাব-এর সেই গ্রামটা। গব্বরের হানায় যে গ্রাম তছনছ হয়ে গিয়েছিল। ভারত লাগোয়া বাংলাদেশের এই গ্রামটা অনেকটা তেমন।

গ্রামের নাম চান্দাপাড়া। মাঝখানে কাঁটাতার। এপার বাংলা-ওপার বাংলায় বিভক্ত। এ পারে ভারতের অংশে গ্রামটিতে কিছুটা জনবসতি থাকলেও, ও পারে বাংলাদেশের মধ্যে পড়া চান্দাপাড়া বর্তমানে একেবারে জনশূন্য। পরিত্যক্ত এক গ্রাম! কিন্তু কেন?

বেশ কিছু বছর আগেও যেখানে মাঠের পর মাঠ, নানান ফসলের জমি, শস্যশ্যামলা ক্ষেত দেখা যেত! বিস্তীর্ণ চরাচর জুড়ে বাঁশ ঝাড় ছিল। সবুজ চারা গাছ থেকে বড় বড় বৃক্ষ, সব শোভা পেত। ফসল জমির মাঝ খান দিয়ে সুন্দর কাঁচা রাস্তা ছিল। চাষী চাষের কাজে সেই পথ দিয়ে রোজ দিন সকাল-বিকেল আনাগোনা করত! সেই গোটা গ্রামটা আজ পরিত্যক্ত! সম্পূর্ণ জনমানবহীন। কেন?

অথচ ওপার বাংলার পঞ্চগড় উপজেলার গরিণাবাড়ির অন্তর্গত বর্তমানের এই অদ্ভুত গ্রামের পাশেই এ পারে ভারতের সুদূর ছড়ানো সবুজ চা-বাগান। মানুষের ঢল। উড়ে চলা পাখির কুঞ্জন। কিন্তু কাঁটাতারের ওপারেই চান্দাপাড়া গ্রামে কেবল নীরবতা, জনপ্রাণীহীন শূন্যতা! যে করুণ ছবির একমাত্র সাক্ষী একটা মসজিদ!

কিন্তু এহেন বর্তমান অভিশপ্ত গ্রামেও একটা সময় বংশানুক্রমিক ভাবে বিভিন্ন পেশার মানুষজনের বসবাস ছিল। তাদের পরিবার-পরিজন থাকত। কেউ কৃষক, কেউ বা ব্যবসায়ী, আবার কেউ শ্রমিক। এ রকমের সব মিলিয়ে ৭০টি পরিবারের বাস ছিল চান্দাপাড়া গ্রামে। শুধু বসবাসই ছিল না। এরা সুখে-শান্তিতে ছিল। বিভিন্ন উৎসবের সময়ে জড়ো হয়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়াত।

২০০০ সালে অমন সুন্দর দৃশ্যপট এক খুনের ঘটনার ধাক্কায় পুরো পাল্টে যায়। তার কিছু দিন আগে থেকেই অবশ্য বিপদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। গরু চোরদের দাপট, সন্ধে নামলেই শান্ত গ্রামে ডাকাতদের হানা, লুট, এমনকী গ্রামের নিরীহ নারীদের ওপর অত্যাচার। সব বর্বরতা ধীরে ধীরে বেড়ে চলছিল। যার জেরে এক দিকে প্রায়ই পুলিশি অভিযান যেমন হচ্ছিল গ্রামে, তেমনই অন্য দিকে ডাকাতির বহর কমার চেয়ে বরং বেড়ে চলেছিল। যা আগে কখনও দেখেনি চান্দাপাড়া! শেষ মেশ একদিন গ্রামের দু’পক্ষের রোষানলের জেরে তুমুল সংঘর্ষে এক ব্যক্তি খুন হয়।

উপায়ন্তর না খুঁজে পেয়ে শেষমেশ গ্রামবাসী ভিটে মাটি ছেড়ে ছুড়ে চান্দাপাড়া থেকে পালাতে থাকে। দেখতে দেখতে একদিন সেই কলরব মুখর গ্রাম জনশূন্য পরিত্যক্ত গ্রাম হিসেবে বাংলাদেশে পরিচিত হয়ে উঠল। আজ সেখানকার বাড়িঘর, মাঠঘাট, রাস্তা, নলকূপ, সব পরিত্যক্ত।

চান্দাপাড়ার যে অভিশাপের কালের সাক্ষী হিসেবে কেবল রয়েছে একটা মসজিদ। আর তার লাগোয়া একটা কুয়ো এবং নলকূপ। মসজিদের মতো সেগুলোও পরিত্যক্ত। অথচ এক কালে ওই কুয়োর জলে পবিত্র হয়ে মসজিদে নমাজ পড়তে বসত গ্রামবাসীরা। নলকূপের জল খেত নমাজের পর নিজেদের উপোস ভাঙতে।

আজ সেই সব কিছু নীরব-নিথর! তার মধ্যেও শুধু একটাই টিমটিমে আশার আলোর সন্ধান যেন মেলে! যখন পাশের গ্রাম মীরগড়ের বাসিন্দাদের তরফে দাবি শোনা যায়, চান্দাপাড়ার কালের সাক্ষী মসজিদের আশু সংরক্ষণের।

ওটা তো কেবল মসজিদ-ই নয়, আজকের জনশূন্য চান্দাপাড়া গ্রামের এককালের প্রাথমিক পাঠশালাও যে ছিল!

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

Bangladesh Durga Puja Holiday Destinations
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy