মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা
ভ্রমণের ঠিকানা হিসেবে এই উপমহাদেশের মানুষের কাছে সে ভাবে জনপ্রিয় নয় কাসাব্লাঙ্কা। তবে ইউরোপ বা আমেরিকার পর্যটকদের কাছে এই শহরের আকর্ষণ কিন্তু অনেক বেশি। কারণ তার কসমোপলিটান সংস্কৃতি।
কী ভাবে পৌঁছোবেন: মরক্কোর সবচেয়ে বড় শহর কাসাব্লাঙ্কা। তবে রাজধানী নয়। রাজধানী রাবাত হয়ে এ শহরে যাওয়া যেতে পারে। দিল্লি বা মুম্বই, দুই শহর থেকেই অবশ্য রাবাতের বিমানের ভাড়া বেশি। তাই ভারত থেকে যেতে হলে সরাসরি কাসাব্লাঙ্কার বিমান ধরাই ভাল।
থাকা-খাওয়া: এই শহরে থাকার জন্য খুব বেশি খরচ করতে হবে না। ভারতীয় টাকায় রাত পিছু ১০০০ টাকায় খুব ভাল হোটেলের ঘর ভাড়া পাওয়া যায়। যাঁরা শহরের কেন্দ্রে থাকতে চান, তাঁরা এর চেয়ে কম টাকায় হোস্টেলের বেড পাবেন। যাঁরা কোলাহল থেকে অনেক দূরে থাকতে চান, তাঁরাও শহরের কেন্দ্র থেকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটারের মধ্যে হোটেল পাবেন। খরচ একই। তবে শহর ঘোরার জন্য হাতে বেশি দিন না থাকলে, শহরের কেন্দ্রে থাকাই ভাল। আর খাওয়ার জন্য শহরের কেন্দ্রে রয়েছে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। কোফতা স্যান্ডউইচ, স্যালাড খেয়ে পেট ভরাতে অসুবিধা না থাকলে খুব সস্তায় খাওয়াদাওয়া মেটাতে পারেন। যাঁরা মদ্যপান পছন্দ করেন, তাঁরা এই সব রেস্তরাঁয় সস্তায় বিয়ার পাবেন। বিয়ার বা অন্য পানীয়ের সঙ্গে পপকর্ন আর জলপাই (অলিভ) দেওয়া হয় বিনামূল্যে।
কাসাব্লাঙ্কায় দ্রষ্টব্য: আদি যুগে এই শহরের পত্তন করেছিলেন মৎস্যজীবীরা। তার পরে কখনও রোমান, কখনও পর্তুগীজরা এই শহর দখল করে। পর্তুগীজদের হাতে শহর ধ্বংসও হয়। তারা পরে নতুন করে শহরটি তৈরিও করে। কিন্তু সেটি ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যায়। ফের নতুন করে শহর নির্মাণ করেন মরক্কোর সুলতান। স্প্যানিশ ব্যবসায়ীরা শহরের নামকরণ করেন কাসাব্লাঙ্কা। ১৯০৭ সালে ফরাসিরা এখানে কলোনি তৈরি করে। এই ইতিহাস থেকেই আন্দাজ করা যায়, এ শহর কেন এত কসমোপলিটান। শহরের স্থাপত্য, শিল্প, সংস্কৃতি— সবেতেই এই কসমোপলিটান ইতিহাসের ছাপ।
দ্রষ্টব্যের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে রাজা দ্বিতীয় হাসানের মসজিদ। মরক্কোর বৃহত্তম মসজিদ এটি। পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম। মরক্কোর দুই প্রধান মসজিদের একটি, যে দু’টিতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও অন্য ধর্মের মানুষ প্রবেশ করতে পারেন। মসদিজের তলায় রয়েছে হামাম। সেটিও দেখার মতোই। তবে হামাম হিসেবে এটি এখন ব্যবহার হয় না।
এই মসজিদ ছাড়া শহরের অন্যতম দেখার জায়গা সৈকত এলাকা। এক সময়ে এখানে বিলাসবহুল রিসর্ট ছিল। এখন রিসর্টে থাকার ট্রেন্ড কমেছে। মূলত নাইটক্লাবে যাঁরা যেতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এই এলাকা প্রাণকেন্দ্র।
তবে কাসাব্লাঙ্কার আসল আকর্ষণ এখানকার স্থাপত্য। একেবারে আধুনিক থেকে আর্ট ডেকো— সব যুগেরই প্রতিনিধিত্ব করার মতো স্থাপত্য রয়েছে এই শহরে। তবে নিজের মতো ঘুরে খুব বেশি জানা যাবে না সে সম্পর্কে। কাসামেময়ার-এর মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কনডাক্টেড ট্যুরে এই শহরের স্থাপত্য ঘুরিয়ে দেখায় পর্যটকদের। সঙ্গে জানায় ইতিহাসও। তেমন কোনও সংস্থার সাহায্য নিলে ভাল। নয়তো এই ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইটটির অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy