প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরে নিন রোমিয়ো-জুলিয়েটের শহর, রাস্তার বাঁকে দেখা হবে ইতিহাসের সঙ্গে

ইতালির ভেরোনা শহরের প্রতিটা বাঁকেই ইতিহাসের হাতছানি। আর সঙ্গে কালজয়ী এক প্রেম। ছুটি উপভোগের সেরা ঠিকানা ইউরোপের এই শহর।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০৮
ভেরোনা শহর

ভেরোনা শহর

এ যেন, পায়ে হেঁটে সাহিত্যের পাতায় ঢুকে পড়া! শেক্সপিয়ারের ‘রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর কথা জানেন না বা শোনেননি এমন সাহিত্যপ্রেমী বোধ হয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রেমের চিরন্তন প্রতিমূর্তিই হয়ে রয়ে গিয়েছে নাটকের দুই চরিত্র। কিন্তু বাস্তবে কি তাঁরা কখনও ছিলেন? এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত।

রোমিয়ো এবং জুলিয়েট বাস্তবেই ছিলেন বলে মনে করেন যাঁরা, তাঁদের দাবি— ইতালির ভেরোনাই হল এই দুই চরিত্রের শহর। ফলে যদি প্রেমে থাকে আস্থা, সাহিত্যে থাকে টান আর হাতে থাকে দিন পনেরোর ছুটি, তা হলে ঘুরে আসতে পারেন এই শহর থেকে।

রোমিয়ো-জুলিয়েটের সেই প্রেমের বারান্দা।

রোমিয়ো-জুলিয়েটের সেই প্রেমের বারান্দা।

কী ভাবে পৌঁছবেন: প্রথমেই একটা কথা বলে রাখা ভাল। ভারতের মতো দেশ থেকে শুধু ইতালির ভেরোনা শহর দেখার জন্য কেউ ইউরোপ যাবেন না। কারণ প্লেনের ভাড়া, ভিসার খরচের মতো বিষয়গুলো তো আছেই। তাই যাঁরা ইতালি বা ইউরোপের কোনও দেশ বেড়াতে যাচ্ছেন, তাঁরা নিজেদের তালিকায় ঢুকিয়ে নিতে পারেন এই শহর। ইতালি বেড়াতে গেলে রোম, ফ্লোরেন্স, ভেনিসের মতো শহরই থাকে তালিকার প্রথম দিকে। তার সঙ্গে জুড়ে নিতে পারেন এটি। যাঁরা ভেনিস বা মিলান যাচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে এই শহরে যাওয়াটা তুলনায় সহজ। কারণ ভেরোনা এই দু‘টো শহর থেকে কাছে। বলা ভাল, এই দু‘টো শহরের মাঝামাঝি একটা জায়গায়। ফলে ইতালি বেড়াতে গেলে, ভেনিস থেকে ট্রেনে পৌঁছে যেতে পারেন ভেরোনা। আবার রোম থেকেও ট্রেনে যেতে পারেন। তবে তাতে সময় লেগে যাবে ঘণ্টা পাঁচেক। তবে সবচেয়ে সহজ হল মিলান থেকে ত্রেনর্দের ট্রেনে করে ভেরোনা যাওয়া। রিজিওনাল ট্রেন। ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগে যেতে। ভারতীয় টাকায় মাথাপিছু হাজার দেড়েক।

দেখার কী কী আছে: ভেরোনা এমন এক শহর, যেখানে আধুনিকতা এবং ইতিহাসের ভগ্নাবশেষ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। কোনও বিরোধ নেই। ইতালির অন্য শহরের মতোই। কিন্তু এই শহরে সেই মিলন বোধ হয় আরও একটু বেশি। শহরে পা দিয়েই ডান-বাঁয়ের দৃশ্যের বৈপরীত্য তাক লাগায় যে কাউকেই। কিন্তু এই শহরকে অনুভব করাটাই আসল। ওপর ওপর ভ্রমণ করলে হয়তো সুবিচার হবে না রোমিও জুলিয়েটের শহরের প্রতি। দেখতে হবে খুঁটিয়ে।

দেখার তালিকায় প্রথমেই থাকবে ‘এরিনা’র নাম। এটি একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার। গড়ন অবিকল রোমের কলোসিয়ামের মতো। কিন্তু কলোসিয়ামের একটা অংশ ভাঙা। কিন্তু ভেরোনার এরিনা প্রায় গোটা। ভিতরে ছোট একটা অংশ ভূমিকম্পে ধ্বসে গিয়েছিল, যা বাইরে থেকে দেখে বোঝা মুশকিল, বাকিটা অক্ষত। সময় হিসাব করে গেলে এখানে অপেরা দেখার সুযোগও পেতে পারেন।

তালিকার দু’নম্বরে থাকবে কাসতেলভেচ্চো। চতুর্দশ শতকের দুর্গ। ঘুরে দেখার মতো জায়গা। এরিনা দেখার জন্য যতটা ভিড়, তার অর্ধেকও চোখে পড়বে না কাসতেলভেচ্চো দেখতে গিয়ে। লাল ইঁটের তৈরি দুর্গ। আদিজে নদীর পাশের এই দুর্গে রাখা আছে ইতালির রেনেশাঁ যুগের একাধিক পেইন্টিং। সঙ্গে আছে মিউজ়িয়াম। যাঁরা ইতিহাসের কাছে সময় কাটাতে ভালবাসেন, একটু শান্তিতে বসে ছবি বা অন্য শিল্পকলা দেখতে পছন্দ করেন, তাঁদের এই দুর্গ হতাশ করবে না।

এর পরের জায়গা ভেরোনার দুয়োমো। ইংরেজিতে যা হল ক্যাথিড্রাল, ইতালিয়ানে তাই হল দুয়োমো। এই দেশের সব শহরের কেন্দ্রেই একটি করে দুয়োমো রয়েছে। মিলানের দুয়োমা পৃথিবীবিখ্যাত। ভেরোনার দুয়োমা খুব বেশি বড় না হলেও, শিল্পকলায় এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের নিরিখে কোনও ভাবেই পিছিয়ে থাকবে না এটি। ভূমিকম্প কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবুও অষ্টম শতকে তৈরি হওয়া এই স্থাপত্যে আজও দেখার মতো জায়গা। সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য তৈলচিত্র, অসংখ্য গথিক শিল্পকলা।

ভেরোনার এরিনা, যে অ্য়াম্ফিথিয়েটারের গোটাটাই অটুট

ভেরোনার এরিনা, যে অ্য়াম্ফিথিয়েটারের গোটাটাই অটুট

এবার আসা যাক, চার নম্বর জায়গায়। যে জায়গা দেখার জন্যই মূলত এখানে আসা। সেই ‘রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর বিখ্যাত বারান্দা। নাটকে আছে, এখানে লুকিয়ে দেখা হয়েছিল দু’জনের। সেই বিখ্যাত বারান্দা বা ব্যালকনিও ভেরোনার দেখার জায়গা। যে বাড়ির বারান্দা এটি, তার নাম ‘কাজ়া দি জুলিয়েত্তা’। বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়াবে জুলিয়েটের বাড়ি। তবে একটা মজার কথা না বললেই নয়। এই বাড়ির সঙ্গে শেক্সপিয়ারের নাটকের কোনও সম্পর্ক নেই। এই শহরে ওই দুই চরিত্রের জন্ম কল্পনা করে পরবর্তীকালে পুরনো একটি বাড়িকে জুলিয়েটের বাড়ি বলে সাজানো হয়েছে। এমনকি ব্যালকনি বা বারান্দাটাও বাড়ি তৈরির সময় ছিল না। ১৯৩৬ সালে সেটি বাড়ির সঙ্গে যোগ করা হয়। তবে এটি দেখার মতোই একটি জায়গা।

এই শহরে থাকবেন কোথায়: ইতালির অন্য শহরের নিরিখে ভেরোনায় থাকার জায়গার ভাড়া তুলনায় বেশি। কারণ এখানে পর্যটকের সংখ্যা কম। ফলে হোটেল বা হস্টেলও কম। কম বয়সিরা হস্টেলে মাথা গুঁজে নিতে পারেন। রাত প্রতি জনপিছু ভারতীয় টাকায় হাজার দেড়েকে হয়ে যাওয়া উচিত। হোটেলের খরচের অবশ্য কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই।

এখানকার বিখ্যাত খাবার কী কী: ইতালি এলে সকলেই পিৎজ়ার কথা বলেন। কিন্তু ভেরোনা পিৎজ়ার জন্য বিখ্যাত নয়। এই শহর বিখ্যাত তার পাস্তার জন্য। হরেক রকমের পাস্তা পাওয়া যায় এখানে। তবে এর পাশাপাশি রয়েছে একটি বিশেষ পদও। এর নাম কাভাল্লো। মূল উপাদান ঘোড়ার মাংস। যাঁদের কোনও ধরনের মাংসে অরুচি নেই, তাঁরা খেয়ে দেখতে পারেন এটি।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

travel Ananda Utsav 2024
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy