বিদেশ বললেই মলদ্বীপ আর সুইজারল্যান্ড মনে হলে, খরচের কথা ভেবে হাত কামড়াতে হয়। আর থাইল্যান্ড-ভিয়েতনামে তো দীঘার মতো ভিড়। নাহ, আর ভিড় এড়িয়ে বিদেশে বেড়াতে যেতে সঞ্চয় উপুড় করে দিতে হবে না। পুজো পুজো মনে বিদেশেই কয়েক দিনের নিভৃতবাস কাটিয়ে নেওয়া যাবে এবং কম খরচেই। এমনই স্বল্প চেনা ৪টি জায়গার খবর এখানে।
যদি বলা হয়, ফোনের দামে বিদেশ ঘুরতে যাওয়া যাবে। তা হলে গাছ থেকে পড়বেন না। সত্যি একটা ফোনের দামের থেকেও কম দামে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের স্মৃতি সারা জীবন মণিকোঠায় থেকে যাবে। নাহ, ব্যাংকক বা পটায়ার কথা বলছি না। কোলাহলের বাইরে বিদেশে ছুটি কাটাতে আর ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙার প্রয়োজন নেই। ভারতের বাইরে এমন কিছু গন্তব্য রয়েছে যেখানে যেতে বাজেটের সঙ্গে আপসও করতে হয় না৷ পকেট না পুড়িয়ে কী ভাবে এই রকম গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় আর বাড়তি খরচ না করে কোথায় থাকতে হয়, সে সম্পর্কেও খোঁজ এখানে।
১. বালি, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার অসংখ্য দ্বীপের মধ্যে বালি অনেক দিন থেকেই ছুটি কাটাতে যাওয়ার অন্যতম জায়গা হয়ে হাতছানি দিয়ে এসেছে। কিছুদিন কোভিডের আগেও ভিসা ছাড়াই ইন্দোনেশিয়া যাওয়া যেত। এখন অবশ্য বালি পৌঁছে ভিসা নেওয়া যায়। বালিতে বিভিন্ন বাজেটের মানানসই থাকার হোটেল আর খাবারের রেস্তরাঁ আছে।
কী ভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে বালি সরাসরি বিমান রয়েছে। আগে থেকেই বুক করলে ৩০ হাজারের মধ্যে হয়ে যাবে৷ বালিতে চলাফেরার জন্য স্কুটার ভাড়া পাওয়া যায়। খরচ বাঁচাতে গাড়ির থেকে সেটাই ভাল হবে।
কোথায় থাকবেন: বালিতে বাজেট হোটেল এবং গেস্টহাউসের অভাব নেই। বাজেট একটু বাড়ালেই বুটিক হোটেল পাওয়া যায়। বিশেষ করে উবুড বা সেমিনাক অঞ্চলে থাকায় সাশ্রয়ী হবে।
খরচ
জন প্রতি বাজেট (৫ রাত, ৬ দিন): ৬৫০০০ টাকা, জনপ্রতি (৪ রাত, ৫ দিন): ৫৫০০০ টাকা।
২. ক্রাবি, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের এই অঞ্চল ফুকেতের মতো ব্যস্ত না হলেও ফুকেতের থেকে বেশি রোমান্টিক। থাইল্যান্ডের জন্য ভিসা যে কোনও এয়ারপোর্টে নেমেই পাওয়া যায়। বিভিন্ন দ্বীপে দ্বীপে ঘোরার ট্যুপ ক্রাবি পৌঁছে বুক করলেই ভাল হবে। এমনিতে থাইল্যান্ড সস্তা জিনিসের জন্য সু-পরিচিত। সুস্বাদু রাস্তার খাবার, কম খরচে পাওয়া স্থানীয় যাতায়াত এবং বাজেটে থাকার ব্যবস্থার শেষ নেই।
কী ভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে ক্রাবির সরাসরি ফ্লাইট না থাকলেও, ব্যাঙ্কক হয়ে যাওয়ার অনেক অপশন রয়েছে। বাজেট এয়ারলাইন্সে আপনি রিটার্ন টিকিট পেয়ে যাবেন ২৫ হাজারের মধ্যেই। অফ-পিক সিজন বা ব্যাঙ্কক-ক্রাবির টিকিট আলাদা কিনলে সাশ্রয় করতে পারবেন আরও।
কোথায় থাকবেন: নির্জনতা চাইলে পি পি দ্বীপের বিকল্প নেই। পি পি দ্বীপে যেতে হলে ক্রাবি থেকে বোট পাওয়া যায়। পি পি হক বা ক্রাবি, হোটেল আর সমুদ্র সৈকতে বাংলোর অভাব নেই।
খরচ
জন প্রতি বাজেট (৫ রাত, ৬ দিন): ৫২০০০ টাকা, জনপ্রতি (৪ রাত, ৫ দিন): ৪৭০০০ টাকা।
৩. সাপা, ভিয়েতনাম
ভিয়েতনাম যে অবিশ্বাস্যভাবে বাজেট-বান্ধব, এ তো বলার অপেক্ষা রাখে না। ভিয়েতনামের রাস্তার খাবার শুধু মাত্র সুস্বাদু নয়, সাশ্রয়ীও। বাসস্থান সহ ভ্রমণ খরচ তুলনামূলকভাবে কম। তবে আমরা বলব, কোলহলের বাইরে ভিয়েতনামের উত্তরের পাহাড়ি শহর সাপায় যেতে।
কী ভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে হ্যানয় শহরে প্রথমে যেতে হবে। রিটার্ন ফ্লাইট মোটামুটি ২০ হাজার টাকায় হয়ে যাবে। বাকি রাস্তার জন্য রয়েছে ভিয়েতনামের অসাধারণ ট্রেন।
কোথায় থাকবেন: ভিয়েতনাম বাজেট-বান্ধব গেস্টহাউস এবং মাঝারি দামের হোটেলের কম নেই। বিশেষ করে হ্যানয়ের মতো বড় শহরে। সাপা শহরের মাঝেও অনেক কম দামের হোটেল পাওয়া যায়।
খরচ
জন প্রতি বাজেট (৫ রাত, ৬ দিন) ৬৮০০০ টাকা, জনপ্রতি (৪ রাত, ৫ দিন), ৫৯০০০ টাকা
৪. ক্যান্ডি, শ্রীলঙ্কা
পুজোর আগে বা পরে ছুটির জন্য শ্রীলঙ্কার এই শহরের বিকল্প পাওয়া শক্ত। আসলে বছরের বাকি সময় খুব গরমের জন্য শ্রীলঙ্কাকে এড়িয়ে যাওয়া যেতেই পারে, কিন্তু ঠান্ডা শীতের মরশুমে এমন ছবির মতো সাজানো শহরকে অবহেলা করলে পাপ লাগতে পারে।
কী ভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে প্রথমে কলম্বো যেতে হবে। রিটার্ন ফ্লাইট টিকিট পচিশ হাজারের মধ্যেই হয়ে যাবে। সময় বাঁধা না হলে খরচ কমাতে চেন্নাই থেকেও শ্রীলঙ্কার ফ্লাইট নিতে পারেন। তার পরের দেড়শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিন ট্রেন বা গাড়িতে। মোটামুটি চার ঘণ্টা লাগবে ক্যান্ডি পৌছাতে। দু’টো পথই মন ভাল করে দেবে।
কোথায় থাকবেন: কলম্বো এবং ক্যান্ডি দুই জায়গায় অনেক বাজেটের হোটেল পাবেন। আসলে ক্যান্ডি শহরের কাছেই ৬০০ ভারতীয় টাকায় খুব ভাল হোটেল পাওয়া যায়।
খরচ
জন প্রতি বাজেট (৫ রাত, ৬ দিন): ৭২০০০ টাকা, জনপ্রতি (৪ রাত, ৫ দিন): ৬৫০০০ টাকা।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy