নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে বেশ কিছু বদল এসেছে। যার হাত ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন অসুখও। এমনই একটি অসুখ হল নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। কী ভাবে এই রোগে আক্রান্ত হন মানুষ? কী কী সমস্যা দেখা যায়? নিরাময়ের রাস্তা কী? এমনই বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল, কলকাতার গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং লিভার রোগ বিভাগের পরিচালক, চিকিৎসক মহেশ কুমার গোয়েঙ্কা।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ভারত এবং অন্যান্য দেশে জনসংখ্যার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মদ্যপান অথবা বিশেষ কিছু ওষুধ সেবন করলে লিভারে ফ্যাটের সঞ্চয় হয়। যা অন্যান্য বিভিন্ন অসুস্থতা ডেকে আনে। কিন্তু যখন এই দুই কারণ ছাড়াই এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন সেই রোগকে বলা হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার।
অ্যালকোহল বা ড্রাগের উপস্থিতি না থাকলেও কী ভাবে শরীরে বাসা বাঁধে এই রোগ? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এর একাধিক চিকিৎসাজনিত কারণ রয়েছে, যে গুলি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চরক্তচাপ, অস্বাভাবিক কোলেস্টেরল ইত্যাদি। এক সঙ্গে এগুলিকে মেটাবলিক সিনড্রোমও বলা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, মেটাবলিক সিনড্রোম যুক্ত রোগীদের মধ্যে এই রোগ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি দেখা যায়। অন্য ভাবে বলা যায়, প্রতি দুই জনের এক জনেরই ফ্যাটি লিভার রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
বিশ্বব্যাপী এই রোগটিকে সাধারণ মনে হলেও, চিকিৎসক গোয়েঙ্কা এই রোগকে হালকা ভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যদিও বহু মানুষ এই রোগটিকে সঙ্গে নিয়েই বসবাস করে থাকেন। কিন্তু তাঁদের অবিলম্বে গুরুতর পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। সঠিক ভাবে পরিচালনা না করলে এই রোগ লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস এমনকি ক্যানসারে পরিণত হতে পারে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ উপসর্গবিহীন। অর্থাৎ যে কোনও কারণে লিভারে ফ্যাট জমা হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা রোগীরা কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা উপসর্গ অনুভব করবে না।
তা হলে কোনও রোগী কী ভাবে বুঝবেন যে তিনি এই রোগে আক্রান্ত? এর পরবর্তী পদক্ষেপই বা কী?
এ বিষয়ে চিকিৎসক গোয়েঙ্কা জানাচ্ছেন, ‘শনাক্তকরণের সব থেকে সহজ পদ্ধতি আলট্রাসাউন্ড। যাতে দেখা যায় যে লিভারে ফ্যাট জমতে শুরু করেছে। অথবা লিভার ফাংশন টেস্ট। কোনও অস্বাভাবিকতা থাকলে বোঝা যায় এই ক্ষেত্রে। সাধারণত কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে, রোগের প্রকোপ নিশ্চিত করার জন্য অগ্রিম আরও কয়েকটি পরীক্ষা করতে হলে বলা হয়। যদি কোনও ব্যক্তি অন্যান্য অন্তর্নিহিত অবস্থার জন্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত এই টেস্টগুলি করানো জরুরি।
বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং এই রোগ বুঝতে পারার সুবিধা থাকায় নিরাময়ের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। একজন দক্ষ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা না করালে, এই রোগ এক বার ফাইব্রোসিস পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, পরণিত মারাত্বক হতে পারে। তাই কখনও যদি মনে হয়, কোনও ঝুঁকি রয়েছে, তা হলে আপনার কাছের অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালে চলে আসুন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ নিন। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা সম্ভব।
এই প্রতিবেদনটি অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল কলকাতা –এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy