—প্রতীকী চিত্র।
এ বারের খরিফ মরসুমে কেন্দ্র কত চটের বস্তার বরাত দেবে, রাজ্যের চটকলগুলিকে তার পূর্বাভাস তারা দিয়েছিল গত মে মাস। সেই মতো কাঁচামাল কেনা-সহ উৎপাদনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল চটশিল্প। কিন্তু তাদের অভিযোগ, এ মাসে আচমকা বরাত ছাঁটাই করেছে কেন্দ্র। আগামী দু’মাসও সেই ধারা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে। এর জেরে পুজোর মুখে হঠাৎই সঙ্কটে রাজ্যের চটশিল্প। তাদের দাবি, বরাত কমায় উৎপাদনও কমাতে বাধ্য হবে চটকলগুলি। সে ক্ষেত্রে সংশয় দানা বাঁধবে কর্মীদের মজুরি ও বোনাসকে ঘিরে। সমস্যায় পড়বেন পাট চাষিরাও।
জুট কমিশনার দফতর সূত্রের অবশ্য বার্তা, বরাতের পরিমাণ পুর্নবিবেচনা করা হতে পারে। যদিও এই আশ্বাসে তেমন ভরসা নেই চটকল মালিকদের। তাঁদের দাবি, অতীত অভিজ্ঞতা বলছে পুনর্বিবেচনার পরে আদতে বরাত কমেছে।
ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত জানান, এ বার গমের ফলন ভাল হয়েছে। এ দিকে কেন্দ্রের ধার্য করা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে দর পাওয়া যাচ্ছে বেশি। তাই চাষিরা বেসরকারি ক্রেতাদের কাছে গম বিক্রিতে বেশি উৎসাহী। তা ছাড়া ছত্তীসগঢ় সরকার ধান কম কিনেছে, এই কারণ দেখিয়ে সেখানে চটের বস্তার সরবরাহ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। ফলে সব মিলিয়ে খাদ্যশস্য রাখার জন্য সরকারের চটের বস্তা কেনার প্রয়োজন কমেছে। এ মাসে বরাতও কমেছে প্রায় ৪০%। উল্লেখ্য, খাদ্যশস্য রাখার ক্ষেত্রে ১০০% এবং চিনির জন্য প্রয়োজনের ২০% চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
এই পরিস্থিতিতে চটশিল্পের আশঙ্কার কথাগুলি জানিয়ে জুট কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে আইজেএমএ। সেখানে তারা বলেছে, অক্টোবর ও নভেম্বরের জন্য মাসে ১.৪৮ লক্ষ বেল (প্রতি বেলে ৫০০ বস্তা থাকে) বরাত দেওয়া হয়েছে। অথচ কেনার কথা প্রতি মাসে প্রায় ৩.৫০ লক্ষ বেল। রাঘবেন্দ্রের দাবি, ‘‘বরাত কমায় চট শিল্পের প্রায় ৫০% কর্মী কাজ হারাবেন।’’
আইজেএমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়ারও দাবি, উৎপাদন প্রায় ৫০% ছাঁটতে হবে। ফলে কম কর্মীর প্রয়োজন হবে। পুজোর আগে তাঁদের বেতন প্রায় অর্ধেক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কমতে পারে বোনাস। সেপ্টেম্বর থেকেই বরাত কমিয়ে দেওয়ার ফলে ইতিমধ্যে মিল বন্ধ হতে শুরু করেছে। এ বার পাটের উৎপাদন খুব ভাল হলেও উৎপাদন কমায় পাট কেনা কমবে। তাতে সমস্যায় পড়বেন পাট চাষিরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy