Advertisement
০২ মে ২০২৪

কয়েক হাজার কোটির জাল মুদ্রা-সহ গ্রেফতার ব্যবসায়ী

এ যেন আলিবাবার গুহা! বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ গুদামের মতো। কিন্ত ভিতরে সাজানো রয়েছে বস্তা বস্তা নোট। সেই বস্তায় ভারতীয় টাকা তো রয়েইছে, সঙ্গে আছে ডলার, ইউরো, লিরা, দিনারও! তবে সবই জাল। শনিবার হাওড়ার ডোমজুড়ে চন্দ্রশেখর জায়সবাল নামে এক ছাঁট ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে এমনই চারশো বস্তা জাল নোট উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। তারা জানিয়েছে, ওই গুদাম থেকে জাল টাকা ছাপানোর যন্ত্র, শিট, নকশা ও রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া টাকা। —নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া টাকা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৫ ০১:৫৪
Share: Save:

এ যেন আলিবাবার গুহা! বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ গুদামের মতো। কিন্ত ভিতরে সাজানো রয়েছে বস্তা বস্তা নোট। সেই বস্তায় ভারতীয় টাকা তো রয়েইছে, সঙ্গে আছে ডলার, ইউরো, লিরা, দিনারও! তবে সবই জাল।

শনিবার হাওড়ার ডোমজুড়ে চন্দ্রশেখর জায়সবাল নামে এক ছাঁট ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে এমনই চারশো বস্তা জাল নোট উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। তারা জানিয়েছে, ওই গুদাম থেকে জাল টাকা ছাপানোর যন্ত্র, শিট, নকশা ও রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে। মোবাইলের সিম, উন্নত প্রযুক্তির ইন্টারনেট ডঙ্গলও মিলেছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসটিএফ) অমিত জাভালগি বলেন, “ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রে জঙ্গি যোগাযোগের আশঙ্কা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ব্যবসায়ীর মানিকতলার বাড়ি থেকেই জাল নোট তৈরির যন্ত্রপাতি পাওয়া গিয়েছে।”

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চন্দ্রশেখর কারও বরাত নিয়ে এই জাল নোট ছাপাচ্ছিলেন। সীমান্তবর্তী এলাকার আন্তর্জাতিক জাল নোট চক্রের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ মিলেছে। এই চক্রে আর কে কে জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসটিএফের কর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া জাল ভারতীয় নোটের আর্থিক মূল্য ১০ কোটি টাকা। বিদেশি মুদ্রার আর্থিক মূল্য এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, দেশি-বিদেশি নোট মিলিয়ে আর্থিক মূল্য কয়েক হাজার কোটি হতে পারে।

এসটিএফ সূত্রে খবর, সম্প্রতি চন্দ্রশেখরের বিষয়ে খবর পান গোয়েন্দারা। তার পরেই ওই ব্যবসায়ীর উপরে নজরদারি শুরু হয়। গত শুক্রবার বৌবাজার মোড় থেকে চন্দ্রশেখরকে পাকড়াও করে পুলিশ। এসটিএফের দাবি, সে সময়ও তাঁর কাছে হাজার টাকার ২০০টি জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছিল।

গোয়েন্দারা জানান, চন্দ্রশেখরকে জেরায় জানা যায়, শহর ও সংলগ্ন এলাকায় জাল নোট ছাপানোর কারবার তাঁর। চক্রের আরও কয়েক জনের নাম বলেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই ডোমজুড় ও মানিকতলায় হানা দেন গোয়েন্দারা। ডোমজুড়ের গুদামটি সম্প্রতি তিনি ভাড়া নিয়েছিলেন। ওই গুদামের মালিককেও জেরা করছেন গোয়েন্দারা। গুদামের ভাড়া নিয়ে মালিকের সঙ্গে চন্দ্রশেখরের কী কথা হয়েছিল, জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৯৮২ সালে লোহার ছাঁট ব্যবসায়ী হিসেবে জীবন শুরু করেন চন্দ্রশেখর। ধীরে ধীরে লোহার ডিলার। কবে থেকে এই জাল নোটের কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাইছে না পুলিশ। একটি সূত্র জানায়, চন্দ্রশেখরের যাতায়াত ছিল বিভিন্ন দেশে। এই জাল নোট কারবারের সূত্রেই সেই যাতায়াত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ পুলিশের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক কোনও চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এই কারবারের। চন্দ্রশেখরের নামে এর আগেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chandrasekhar jaiswal stf fake currency
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE