গলগল করে বেরোনো ধোঁয়া, রোগীদের নিয়ে ছুটোছুটি, রোগীর আত্মীয়দের ভয়ার্ত মুখ। সব মিলিয়ে সোমবার কিছু ক্ষণের জন্য যেন আমরির আতঙ্ক টাটকা হয়ে উঠেছিল বাইপাসের অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতালে। যদিও আগুন বেশি ছড়ায়নি। তবে প্রবল ধোঁয়ার জেরে প্রায় ৫০ জন রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও দমকলের কর্মীরা।
দমকল জানায়, সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ হাসপাতালের দোতলার অপারেশন থিয়েটারে ‘ওটি লাইট’ থেকে আগুন লাগে। তখন অস্ত্রোপচার না চলায় বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। পৌঁছয় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এক দমকলকর্মী।
যদিও আগুন নেভানো নিয়ে টানাটানি শুরু হয় হাসপাতাল ও দমকল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। হাসপাতাল দাবি করেছিল, দমকল আসার আগে তারাই আগুন নেভায়। তাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দমকলকর্মীরা। পরে অ্যাপোলোর সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের ও দমকলের কর্মীরা মিলিত ভাবে আগুন আয়ত্তে আনেন।’’ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। হাসপাতালের তরফে অগ্নি-সুরক্ষা বিধি মানা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে দমকলের তরফে ফুলবাগান থানায় এফআইআর করা হয়েছে।
দমকলের এক অফিসার জানান, হাসপাতালের দু’টি তলায় দশটি ওটি। ৯ নম্বরে তখন সবে অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। ১০ নম্বর ওটিতে অস্ত্রোপচার শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা। তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন, ন’নম্বর ওটি থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তা দেখেই অস্ত্রোপচার স্থগিত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিক্রমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার প্রস্তুতি
দমকল সূত্রে খবর, ওটি লাইট গরম হয়ে স্ফুলিঙ্গ বেরোয়। তা থেকে আগুন লাগে সি-আর্ম মেশিনে। সেটি পুরো পুড়ে যায়। সব দিক বন্ধ হওয়ায় ঘর ভরে যায় ধোঁয়ায়। পুড়ে যায় রোগীর শয্যাও। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একতলার ইমার্জেন্সি ধোঁয়ায় ঢাকা। কর্মীরা মাস্ক লাগিয়ে রয়েছেন।
হাসপাতালের তরফে প্রথমে বলা হয়, দমকলকে ডাকা হয়েছে নিয়মরক্ষার জন্য। তা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দমকলকর্মীরা। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন দমকলের ডিজি জগমোহন। কর্মীরা তাঁকে হাসপাতালের ওই মন্তব্যের কথা জানান। দমকলের এক অফিসার জানান, তাঁদের কর্মীরাই দরজা ভেঙে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিকেলের দিকে রানাবাবু বলেন, ‘‘দমকলকর্মীদের সাহায্যেই আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে।’’ হাসপাতালে গিয়ে দমকলমন্ত্রী জানান, ধোঁয়া বার করার ভাল ব্যবস্থা থাকলে তা এত ছড়াত না। এ দিনের ঘটনা নিয়ে দমকলের ডিজি-র থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন শোভনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy