দক্ষিণেশ্বরের মতো কালীঘাট মন্দিরেরও আমূল সংস্কার চায় সরকার। সেই কাজ এ বছরেই শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কার নিয়ে মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে মন্দিরের ট্রাস্টি কমিটির কর্তা-সহ সেবায়েতদের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, কালীঘাট মন্দিরের মূল কাঠামো বজায় রেখেই সংস্কার করবে কলকাতা পুরসভা। কোনও দোকানদারকে উচ্ছেদ করা হবে না। তবে কাউকে কাউকে একটু সরানো হতে পারে। আকর্ষণ বাড়াতে ঢেলে সাজা হবে মন্দির। সেই কাজ ঠিক করতে কলকাতা পুরসভাকে একাধিক প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৩১ অগস্টের মধ্যে ওই রিপোর্ট সরকারকে জমা দিতে বলা হয়েছে। তার পরে ফের বৈঠক ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর দক্ষিণেশ্বর মন্দির সংস্কারের কাজে বেশ খানিকটা এগিয়েছে। তারকেশ্বর, বক্রেশ্বর, তারাপীঠ মন্দিরেরও সংস্কার হচ্ছে। এ বার কালীঘাট মন্দিরের সৌন্দর্যায়নে হাত দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরেই ওই মন্দিরের সংস্কার নিয়ে বৈঠক হয়েছিল। সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কাজ এগোয়নি বেশি দূর।’’ কালীঘাট দেশের অন্যতম জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্র। প্রতিদিন হাজার মানুষ আসেন। তীর্থক্ষেত্রের সব পরিকাঠামো দিয়েই গড়া হবে কালীঘাটকে। সংস্কার হবে দুধপুকুরের। নবান্ন সূত্রের খবর, দক্ষিণেশ্বরের মতো কালীঘাট মন্দিরেও স্কাইওয়াক তৈরি করার কথা ভাবছে সরকার।
এ দিনের বৈঠকে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। মমতা জানান, মন্দির চত্বরে ঢোকা ও বেরোনোর রাস্তা প্রশস্ত করা হবে। দক্ষিণেশ্বরের কথা মাথায় রেখে কলকাতা পুরসভা উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করবে। আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে কালীঘাট থানাকে মন্দিরের কাছাকাছি আনা হতে পারে। সবটাই নির্ভর করবে পুরসভার নকশার উপরে।
মুখ্যমন্ত্রী যে কালীঘাট মন্দির নিয়ে বৈঠক করবেন, তা আগেই জানা ছিল পুরসভার। গত শনিবার এ নিয়ে পুরসভার একাধিক বরো চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, পদস্থ কর্তা এবং ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে বৈঠক হয় পুরভবনে। পুর প্রশাসন বর্তমানে কালীঘাট চত্বরে কী পরিষেবা দেয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কি না, আলোচনা হয় তা নিয়ে। এক অফিসার জানান, পানীয় জল সরবরাহ, নিকাশি, জঞ্জাল অপসারণের কাজ কেমন হচ্ছে, তার হিসেব নেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাস্তাঘাট এবং আলোর ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে কী করা দরকার, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকার পথ আরও প্রশস্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরাও। তাঁদের মতে, মন্দিরের ভিতরে অনেক দোকান রয়েছে। সেগুলি একটু এ দিক ও দিক সরানো গেলে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের পথ সুগম হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy