মুখ্যমন্ত্রীর নামকরণের পর কাটতে চলল ৩৪ মাস। সরকারিভাবে এখনও লোকে জানে না কোথায় ‘মা ফিরে এলো’। কোথায়ই বা ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’। ফি বছর এই দুই সাজানো প্রকল্পের পিছনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা। কিন্তু মূলত প্রচারের অভাবে দর্শক যৎসামান্য। দেরিতে হলেও সম্বিত ফিরেছে তদারকি সংস্থা কেআইটি-র। লোকের নজর কাড়তে চলতি বছরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ওই দুই নাম দুই প্রকল্পের আশপাশে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সঙ্গে বাড়ানো হবে দুই প্রকল্পের আকর্ষণ। সমীক্ষার জন্য আজ, বুধবার নগরোন্নয়ন দফতরের পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারেরা অকুস্থলে যাবেন।
রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পরিত্যক্ত গুদাম সারিয়ে ২০১১ সালে চালু হয় দুর্গা সংগ্রহশালা। ২০১২-র ১২ ডিসেম্বর সরকারিভাবে সেটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দেন ‘মা ফিরে এলো’। শহরের বাছাই ১৪টি প্রতিমা রাখা হয়েছে সেখানে। একই দিনে ওই স্টেডিয়ামের পশ্চিম দিকে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন ‘অ্যাকোয়া ফ্লোটিং মিউজিক্যাল ফাউন্টেন’-এর। তিনি এর নাম দেন ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দুই প্রকল্পের কোথাও নেই নামফলক। আশপাশের দোকানি, বাসিন্দাদেরও জানা নেই এই সরকারি নাম।
তদারকি সংস্থা কেআইটি-র খাতাতেও তোলা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ওই দুই নাম। ‘মা ফিরে এলো’ কেআইটি-র কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে পরিচিত ‘আর্ট গ্যালারি’। আর ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’-এর পরিচিতি ‘ফ্লোটিং আলট্রা ফার্স্ট মিউজিক্যাল ফাউন্টেন’ হিসাবে।
কেন এই হাল?
নগরোন্নয়ন দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, দু’টি প্রকল্পের পাশেই গোড়ায় কিছু ফ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দুই নাম লেখা হয়েছিল। সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এবার স্থায়ীভাবে লেখানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেবল প্রকল্পের পাশেই নয়, লোককে জানাতে মূল রাস্তার পাশেও বড় করে ওই নাম লেখা হবে। আর কেআইটি-র খাতাতেও সংশ্লিষ্ট দুই প্রকল্পে শীঘ্রই ব্যবহার করা হবে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নাম।’’ পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ববি হাকিম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহেই গত দু’বছরে রবীন্দ্র সরোবরের ভোল বদলে গিয়েছে। পর্যায়ক্রমে ওই অংশের আরও উন্নতি হচ্ছে। এই মানোন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০ কোটি টাকা।’’
কীভাবে মানোন্নয়ন হবে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের এই দুই প্রকল্পের?
নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, মোট সাত হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে ‘মা ফিরে এলো’। এর মধ্যে মূল গ্যালারির আয়তন ৩০০ বর্গমিটার। আশপাশে আরও সবুজায়নে হাত দেওয়া হয়েছে। আর, ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’ পরিবেশ দফতর খরচ করেছিল প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। প্রতি সন্ধ্যায় সাড়ে ছ’টা থেকে ২০ মিনিট, শনি ও রবিবার ৬টা ২০ ও পৌনে সাতটা থেকে ২০ মিনিটের দু’টি লেজার শো হয়। ২৭ মিটার লম্বা এই ঝর্ণার আশপাশে সুন্দর রেলিং বসবে। সবুজায়ন হবে এখানেও। উন্নত হবে আলোর ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy