Advertisement
১০ মে ২০২৪

পঞ্চায়েতে টিকিট না পেলে গুরুত্বপূর্ণ পদ

দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ওই ব্যাপারে প্রকাশ্যেই বলেছেন, “টিকিট না পেয়ে অন্য দলে যাওয়া বা নির্দল হয়ে দাঁড়ানো পুরনো ট্রেন্ড। আর টিকিট সবাই পাবে না। যে কয়েকটি আসন রয়েছে সেই অনুসারেই টিকিট পাবে। বাকি নেতা-কর্মীদের দলে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তাহলে কোনও সমস্যা থাকবে না।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০৫
Share: Save:

পঞ্চায়েতে টিকিট পাওয়ার লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীদের। যাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন, তলে তলে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। বিজেপিও টোপ দিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মী বা জনপ্রতিনিধিরা বিজেপিতে যোগ দিলে মিলবে পঞ্চায়েতের টিকিট। এই অবস্থায় কোচবিহারের অঞ্চলে অঞ্চলে নজরদারি শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল। আশঙ্কিত জেলা নেতাদের অনেকেই দাবি তুলেছেন, যারা পঞ্চায়েতে টিকিট পাবেন না দলে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হোক, তা হলে অনেকটাই রোধ করা যাবে ক্ষোভ।

দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ওই ব্যাপারে প্রকাশ্যেই বলেছেন, “টিকিট না পেয়ে অন্য দলে যাওয়া বা নির্দল হয়ে দাঁড়ানো পুরনো ট্রেন্ড। আর টিকিট সবাই পাবে না। যে কয়েকটি আসন রয়েছে সেই অনুসারেই টিকিট পাবে। বাকি নেতা-কর্মীদের দলে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তাহলে কোনও সমস্যা থাকবে না।”

সেই সঙ্গে তিনি অবশ্য দাবি করেন, মুকুলবাবুর সঙ্গে দলের কেউ যোগাযোগ করছেন এমন কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই। তাঁর কথায়, এমন কেউ করবে বলে মনে করছি না। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল রঞ্জন দে অবশ্য দাবি করেছেন, যারা প্রকৃত তৃণমূল। শুরু থেকে লড়াই করেছেন তাঁরা ওই দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “এমন অনেকেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন। এমন নেতা-কর্মীরা দলে এলে বিজেপি টিকিট দেবে।”

গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই কোচবিহারে বিজেপির শক্তি বাড়তে শুরু করে। সেখানেই ক্রমশ শক্তি ক্ষয় হতে শুরু করে বামেদের। লোকসভা ভোটে সে চিত্র ফুটে উঠেছে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় তৃণমূলের সঙ্গে যে লড়াই করবে বিজেপি—তা একবাক্যে স্বীকার করছেন সবাই। এই অবস্থায় মুকুলবাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় চাপে পড়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জরাজীর্ণ কোচবিহারে যে অনেকেই বিজেপির দিকে ঝুঁকতে পারেন, সে আশঙ্কা করছেন দলের নেতারাই।

দিন কয়েক আগে তৃণমূকের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির মিটিঙে উদয়নবাবুর সেই সুর শোনা গিয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে বক্তব্যেই বলেছেন, সতেরোশো আসনের জন্য সতেরো হাজার প্রার্থী তৈরি হয়ে আছে। গ্রামে গ্রামে অনেকেই নিজেদের প্রাত্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন। অনেককে আবার অঞ্চল নেতৃত্ব প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সুব্রতবাবু সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “মুকুল রায় তৃণমূলে থাকার সময়ে প্রায় সবার সঙ্গেই তাঁর ভাল সম্পর্ক ছিল। তিনি বিজেপিতে যাওয়ায় ওই সুযোগকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবেন অনেকে। ভিতরে ভিতরে যোগাযোগের একটা চেষ্টা হবে। তবে সব ঠিক থাকলে আমরা তা রুখে দেব।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে কারও যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতাদের কাজে অখুশি মানুষ। তাঁদের যে টুকূ সংগঠন ছিল তাও ভেঙে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE