Advertisement
০৪ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

চিনই প্রথম ওই বিতর্কিত ভূখণ্ডের ভিডিয়ো প্রকাশ করে হুলস্থুল বাঁধায় এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত চিনা মিডিয়া নানা ভাবে ইন্ধন জোগায়। ভুটানের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ভারত সরকার তখন এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়।

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০২:৩০
Share: Save:

ঠেকানোর উদ্যোগ কই

• সংবিধানের ২৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের ফ্যাক্টরি, খনি বা যে কোনও রকম ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ নিষিদ্ধ। শিশুশ্রম নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৬ মোট ৮৩টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে দু’একটা ‘কিন্তু’ রয়েই গেছে।

১) আইনে বলা হয়েছে স্কুল-ফেরত শিশুরা গৃহস্থালির কাজে সাহায্য করতে পারে। এটা কিন্তু পরোক্ষে শিশুশ্রমকে‌ মদত দেয়।

২) এই কাজে নিয়োজিত শিশুরা বাড়িতে পড়াশোনায় কখন সময় দেবে? শিশুশ্রমে‌ নিযুক্তদের যেমন উদ্ধার করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা প্রয়োজন, তেমনই নিয়োগকর্তাদেরও আইনের আওতায় আনা উচিত। রমরমিয়ে চলছে শিশুশ্রমের বাজার, কিন্তু প্রশাসনের তরফে তেমন উদ্যোগ ক‌ই?

আবু তাহের

ভগবানগোলা, মুর্শিদাবাদ

কে পিছোবে?

• বলা হয়েছে, ‘অতি ক্ষুদ্র সেনা-সংবলিত, নিজের প্রতিরক্ষায় প্রায় অসমর্থ,... ভুটানও অবস্থাগতিকে দ্বিশক্তি সংকটে হাবুডুবু খাইতেছে’ (‘মুণ্ড চাঁচিবার নীতি’, সম্পাদকীয়, ৪-৭)। আসলে চিনের সঙ্গে ভুটানের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এবং সে দেশের প্রতিরক্ষার জন্যে ভারত ভুটানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। চুম্বি উপত্যকার কাছে ভুটানের সীমান্ত লঙ্ঘন করার অভিযোগে ভুটান চিনের বিরুদ্ধে সীমান্ত লঙ্ঘনের হুঁশিয়ারি জারি করেছে এবং চুক্তি অনুসারে ভুটানের সৈন্যের সঙ্গে ভারত সেখানে ৩০০০-এর মতো সৈন্য মোতায়েন করেছে। চিনের দিক থেকে দেখলে, এ ভাবে ভুটানকে সাহায্য করতে গিয়ে ভারত চিন-ভুটানের বিতর্কিত সীমা লঙ্ঘন করেছে আর এ ভাবে চিন ও ভারতের আবহমান কালের বিরোধে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে ভূখণ্ড নিয়ে চিন ও ভারতের আকচাআকচি, তা সরাসরি ভারতের নয়, ভারতের পথে বিতর্কিত ভূখণ্ডও নয়, কিন্তু যা রক্ষা করতে ভারত ভুটানের কাছে চুক্তিবদ্ধ।

চিনই প্রথম ওই বিতর্কিত ভূখণ্ডের ভিডিয়ো প্রকাশ করে হুলস্থুল বাঁধায় এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত চিনা মিডিয়া নানা ভাবে ইন্ধন জোগায়। ভুটানের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ভারত সরকার তখন এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়। অনর্থক হইচই বাঁধানোর জন্যে চিনকে দোষারোপ করে এবং ১৯৬২ সালের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে অরুণ জেটলি চিনকে উপযুক্ত জবাব দেন।

চুম্বি উপত্যকায় বিতর্কিত ডোকলাম মালভূমি চিন, ভারত ও ভুটান— তিনটি দেশের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিনের পক্ষে চুম্বি উপত্যকায় এই মালভূমি দিয়ে ভুটানে ঢুকে পড়তে পারলে ভারত আক্রমণ করার নতুন পথ খুলে যাবে। রাস্তা তৈরি শেষ হলে প্রয়োজনমত খাবার ও যুদ্ধের অন্যান্য সরঞ্জাম তাড়াতাড়ি সৈন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। অন্য দিকে, ডোকলাম মালভূমি ‘চিকেন নেক’ নামে শিলিগুড়ির একেবারে উত্তর সীমায় ২৭ কিলোমিটার চওড়া ভূখণ্ডের দিকে মুখ করা। নির্মীয়মাণ রাস্তা শেষ হওয়ার পর ভবিষ্যতে যে কোনও অজুহাতে চিন ওই চিকেন নেক দখল করে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে ভারতের মূল ভূখণ্ডকে পৃথক করে দিতে পারে।

এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই কোনও গোলাগুলি ছোড়েনি এবং তিনটি দেশই নিজের নিজের যুক্তিতে অনড়। এ ধরনের আন্তর্জাতিক বিরোধ সহজে মেটার নয়। যুদ্ধ এড়ানোর জন্যে কোনও একটি দেশকে কিছুটা পিছোতে হবে। কিন্তু সে দেশ কোনটি, সেটাই দেখার।

মনোজ ঘোষ

কলকাতা-৬১

বাঁচাতে চান কি?

• খবরে জানলাম, রাজ্য বিজেপি কর্তারা ‘বাংলা বাঁচাও’ স্লোগান তুলে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করছে (‘বাংলা বাঁচাতে পথে বিজেপি’, ১৩-৭)। সেই মহান সৎবুদ্ধিসম্পন্ন অখণ্ডতাবাদী বিজেপি কর্তাদের উদ্দেশ্যে বলি, যদি এই জগৎসেরা বাংলাকে ভালবাসেন, যদি প্রকৃতই বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করার চক্রান্ত থেকে বাঁচাতে চান, তা হলে যান না অশান্ত পাহাড়ের কোনও মূল কেন্দ্র থেকে আন্দোলনটা শুরু করুন! তবেই জানব, আপনারা অখণ্ডভারত তথা এই ঐতিহ্যবাহী বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্তে শামিল নন।

মনে রাখবেন, ২০১৪ সালে কোনও এক সময় আপনাদের মহান নেতা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিংহ মহাশয়ও উসকানিমূলক প্রেরণা দিয়েছিলেন। তাই সব শেষে সকল রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের উদ্দেশ্যে বলি, এই আলাদা করার প্রবণতা বা তাকে সমর্থন করার রাজনীতি ছাড়ুন। না হলে, এক দিন সমস্ত জাতিগুলি এক-একটি করে রাজ্য বা জেলা আদায় করার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে মেতে উঠবে। আসুন, সবাই মিলে বলি, আর কোনও ভাগাভাগি নয়, একটা দেশ একটাই নীতি। যে নীতি মানবশৃঙ্খলের ভবিষ্যৎ বজায় রাখতে একত্রিত হতে পারে।

অরবিন্দ সিংহ

বরাহনগর

স্কুল পরিদর্শন

• সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে আমরা রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা লক্ষ করছি। কিন্তু শিক্ষকের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে ‘বিদ্যালয় পরিদর্শন’ অপর একটি অত্যন্ত কার্যকর কার্যক্রম। শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে পরিদর্শনের ভূমিকা অপরিসীম। দেশের মানুষের শিক্ষার বাস্তব অবস্থার চিত্রটি শিক্ষাবিদ-সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় পরিদর্শক পদে কর্মরত থাকাকালীনই প্রত্যক্ষ করেছিলেন। অথচ বর্তমানে রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে পরিদর্শন ব্যবস্থা একেবারে তথৈবচ। জেলা স্তরে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল। এ বার কাউন্সিলের অধীনে গড়ে ৬০-৭০টি বিদ্যালয় নিয়ে একটি করে সার্কল বা চক্র। প্রত্যেক সার্কল-এর দায়িত্ব সামলান এক জন সাব ‘ইন্সপেক্টর অব স্কুল’ বা ‘অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক’। ইদানীং সাব ইন্সপেক্টর অব স্কুলস সর্বশিক্ষা মিশনের ‘সার্কল প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর’ পদেরও দায়িত্বে। বিভিন্ন জেলায় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পদ দীর্ঘ দিন শূন্য থাকায় চার-পাঁচটি পর্যন্ত চক্রের দায়িত্বে এক জন মাত্র সাব ইন্সপেক্টর। সুতরাং পরিদর্শকদের বিপুল
পরিমাণ প্রশাসনিক কাজের চাপ সামলাতে হচ্ছে।

অপর দিকে, জেলায় মাধ্যমিক শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তরে আছেন ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর অব স্কুলস (এসই)। এ ছাড়া মহকুমার দায়িত্বে থাকেন এআইএস বা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর অব স্কুলস। ব্যস, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিদর্শন ব্যবস্থার ‘ম্যান পাওয়ার’-এর এখানেই ইতি! অবাক লাগে, মাধ্যমিক শিক্ষায় ব্লক স্তরে কোনও ইন্সপেক্টর পদই নেই! পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে সমিতি এডুকেশন অফিসারের নিযুক্তি হয়েছে পঞ্চায়েত অধীন এসএসকে/এমএসকে দেখাশোনার জন্য। ইতিমধ্যে রাজ্যে প্রচুর জুনিয়র হাই ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। ফলে, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরে পাহাড় প্রমাণ কাজের চাপ। তাই, পরিদর্শকগণের বিদ্যালয় পরিদর্শনের ফুরসত কোথায়!

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রক ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে কয়েকটি প্রস্তাব— ১) প্রতিটি চক্রে সাব ইন্সপেক্টর অব স্কুল-এর শূন্যপদে নিয়োগ; ২) চক্রস্তরে আরও একটি করে ডেপুটি বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর অব স্কুলস পদ সৃষ্টি ও নিয়োগ; ৩) মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য ব্লকস্তরে পৃথক সাব ইন্সপেক্টর পদের অনুমোদন ও জুনিয়র-মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক দেখভালের নিমিত্ত ব্লক স্তরে কার্যালয় স্থাপন (উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষায় যা সার্কল বা চক্রস্তরে বিকেন্দ্রিত রয়েছে)। এতে জেলা পরিদর্শক অফিসের কাজের চাপ অনেকটাই কমবে। গুরুত্ব পাবে পরিদর্শন প্রক্রিয়া।

সাবির চাঁদ

রেজিনগর, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE