Advertisement
০৫ মে ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

অনীশের ছবির অভিঘাত এমনই, সম্প্রতি পর্তুগালে এক প্রদর্শনীতে এক দর্শক ছবিটা দেখতে দেখতে সত্যিই ছবির উপরে পড়ে যান, ছবিটা যেন সম্মোহন করেছিল তাঁকে।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

ক্যানভাস জুড়ে হাঁ করে আছে রক্তাক্ত ক্ষত

‘ব্রেক্সিট’-আবহে ছবি এঁকেছেন শিল্পী অনীশ কপূর। নাম ‘আ ব্রেক্সিট, আ ব্রোক্সিট, উই অল ফল ডাউন’। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ব্রিটেনের মানচিত্রকে দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছে রক্তলাল একটা গভীর খাত, এক অতলান্ত শূন্যতার মুখ খুলে দিয়েছে সে। ছবিটার দিকে তাকিয়ে দর্শক যেন ওই শূন্যতার মধ্যে পড়ে যাবেন, সেই পতনের কোনও শেষ নেই। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রের হয়ে আঁকা অনীশের এই ছবি আসলে গণভোট ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে আসার ভোটের প্রেক্ষিতে শিল্পীর বক্তব্য। ব্রেক্সিট-বিরোধী অনীশ সম্প্রতি বলেছেন, ব্রিটেনের বর্তমান রাজনৈতিক অসাড়তা এক অদ্ভুত মানসিক পতনের ছবি, ‘‘আমরা যেন জাতি হিসেবে এক না-জানা শূন্যে প্রবেশ করেছি।’’ ছবিতেও সেই আত্মপীড়ন, গ্লাসগো থেকে দক্ষিণ উপকূল পর্যন্ত হাঁ-করে আছে এক মারাত্মক ক্ষত। এ যেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রক্তাক্ত সেই ট্রেঞ্চগুলোর একটা। অনীশের ছবির অভিঘাত এমনই, সম্প্রতি পর্তুগালে এক প্রদর্শনীতে এক দর্শক ছবিটা দেখতে দেখতে সত্যিই ছবির উপরে পড়ে যান, ছবিটা যেন সম্মোহন করেছিল তাঁকে। অনীশের এই আশ্চর্য কাজ দেখার সুযোগ এই মুহূর্তে লন্ডনের পিটসহ্যাঙ্গার মিউজ়িয়ামে।

অতলান্ত: ব্রেক্সিট নিয়ে অনীশের ছবি। ডান দিকে, অনীশ কপূর

গুপ্তচর রাজপুত্র

গল্পের জেমস বন্ড কাজ করেন ‘হার ম্যাজেস্টি’স সিক্রেট সার্ভিস’-এর হয়ে। এ বার জানা গেল, রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের নাতি প্রিন্স উইলিয়াম সম্প্রতি তিন সপ্তাহ ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থার কাজে সময় কাটিয়েছেন। টেমসের তীরে এক সপ্তাহ কাটিয়েছেন এমআই-সিক্স’এর সদর দফতরে, জেমস বন্ডের প্রত্যেকটা ছবিতে যে বাড়িটা দেখা যায়। আর এক সপ্তাহ কাটিয়েছেন এমআই-ফাইভ’এর কার্যালয়ে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে যাদের কাজ। তৃতীয় সপ্তাহটা কেটেছে পশ্চিম লন্ডনের গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশনস হেড কোয়ার্টার্স (জিসিএইচকিউ)-এ, সারা বিশ্বের কথাবার্তা নাকি যেখানে ‘বাগিং ডিভাইস’ লাগিয়ে শোনা যায়! রাজপুত্র ক্যান্টিনে দুপুরের খাবারও খেয়েছেন রোজ।

ভূয়োদর্শী

অভিজ্ঞ: পার্থসারথি সোম

সারা বিশ্বে তাঁর পরিচয় ‘ভারতের ট্যাক্সম্যান’। অর্থনীতিবিদ পার্থসারথি সোম আইএমএফ-এ ছিলেন কয়েক দশক, স্প্যানিশে দক্ষ মানুষটি ভেনেজ়ুয়েলা, চিলে-সহ দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশকে কর সংস্কারের কাজে সাহায্য করেছেন। ব্রাজ়িলে তিনি নায়ক, নাইটহুডের সমতুল্য সম্মান পান। পি চিদম্বরম অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন দেশে ফেরেন তাঁর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হয়ে। মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পার্থই প্রথম জিএসটি চালু করার কথা বলেছিলেন। তাঁকে চেয়েছিল ব্রিটিশরাও। ২০০৮-এ তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের কর সংস্কার বিষয়ক পরামর্শদাতা রূপে আমন্ত্রিত হন। তদানীন্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের ব্যক্তিগত আগ্রহে ‘হার ম্যাজেস্টি’স রেভেনিউ অ্যান্ড কাস্টমস’ বিভাগে প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি। একদা দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্স-এ পার্থসারথির শিক্ষক মনমোহন সিংহ তাঁকে একপ্রকার নিমরাজি হয়েই ছেড়েছিলেন। এখন লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এর শিক্ষক পার্থ সম্প্রতি প্রকাশ করলেন তাঁর স্মৃতিকথা ‘ভিরটুস ইন আরডুইস’। কর্মসূত্রে চল্লিশেরও বেশি দেশ ঘোরা এই মৃদুভাষী বাঙালির স্মৃতির সম্ভার বিপুল। বইয়ে আছে চেন্নাইয়ে গভর্নর’স হাউসে জওহরলাল নেহরুকে দেখার স্মৃতিও। এগারো বছরের বালক পার্থকে নেহরু তাঁর কোটের ল্যাপেলে লাগানো গোলাপটা খুলে দিয়েছিলেন, বসিয়েছিলেন নিজের পাশে।


ছকভাঙা

রাজকুমার হ্যারি ও মেগান মার্কলের ঠিকানা এখন উইন্ডসরের ফ্রগমোর কটেজ। মেগান এ মাসেই মা হবেন, এর মধ্যেই তাঁকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই, কারণ তিনি বলেছেন প্যাডিংটনে সেন্ট মেরি’জ় হাসপাতালের লিন্ডো উইংয়ে— যেখানে এর আগে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা আর ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট— তিনি যাবেন না, তাঁর সন্তানের জন্ম হবে উইন্ডসরেই। মানেটা এই: কেটের মতো মা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি সেজেগুজে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন না। ডাচেস অব সাসেক্স মেগান নিজে প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়াকে অপেক্ষা করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE