স্কুলে ঢুকতে মিনিট পাঁচেক দেরি হয়েছিল। তাই এক ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দেননি শিক্ষক। অভিযোগ, পরে ওই ছাত্রের মা তাঁর ছেলেকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার অনুরোধ জানাতে এলে তাঁকেও অপমানজনক কথা বলে তাড়িয়ে দেন শিক্ষকেরা। সেই অপমানে বাড়ি ফিরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করল ওই ছাত্র। পুলিশের কাছে এই অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ছাত্রের পরিবার। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বালির একটি স্কুলে।
পুলিশ জানায়, সাহেব হাজরা নামে ওই ছাত্রকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি ও আর এক সহকারী শিক্ষক প্রতাপচন্দ্র ভট্টচার্যের নামে বালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ছাত্রের পরিবার। পাশাপাশি, অভিযুক্ত শিক্ষকদের গ্রেফতারির দাবিতে থানায় জড়ো হন সাহেবের পরিবার, পাড়ার লোকেরা ও অন্য ছাত্র-অভিভাবকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেলুড় ও নিশ্চিন্দা থানার পুলিশও বালি থানায় চলে আসে। যদিও স্কুলের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে সাহেবের পরিবার জানিয়েছে, নবম শ্রেণির ছাত্র সাহেবের এ দিন ১১টা থেকে মৌখিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু স্কুলে ঢুকতে পাঁচ মিনিট দেরি হওয়ায় ওই ছাত্রকে প্রথমে পরীক্ষা দিতে বাধা দেন ইতিহাসের শিক্ষক প্রতাপবাবু। তিনি ওই ছাত্রকে প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যান।
কিন্তু পরীক্ষায় বসতে না পেরে বাড়ি ফিরে মাকে গোটা ঘটনাটি জানায় সে। এর পরে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যান মিতালীদেবী। তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, “ছেলেকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার জন্য স্যরেদের অনুরোধ করি। কিন্তু স্যরেরা কোনও কথা শোনেননি।” ছাত্রের পরিবার জানিয়েছে, মাকে অপমানিত হতে দেখে স্কুল থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যায় সাহেব। বাড়ি ফিরেই ঘরে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে সে। কিন্তু পাড়ার কয়েক জন তা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি বলেন, “ছেলেটি দেরিতে এসেছিল তাই ওকে দাঁড়াতে বলেছিলেন প্রতাপবাবু। পরীক্ষার দায়িত্বে ওই শিক্ষকই ছিলেন। আমি তখন ক্লাস নিচ্ছিলাম। ছেলেটি আমার কাছেও এসেছিল। পরে কথা বলব বলে আমিও ওকে দাঁড়াতে বলেছিলাম। কিন্তু ও বাড়ি চলে যায়।” প্রতাপবাবু বলেন, “ছাত্রটি সাড়ে ১১টায় এসেছিল। তাই প্রধান শিক্ষক ওকে ক্লাসে না ঢুকে দাঁড়াতে বলেছিলেন। আমিও বলেছিলাম একটু অপেক্ষা করতে। পরীক্ষা অবশ্যই নেওয়া হবে। কিন্তু ছেলেটি ধৈর্য্য হারিয়ে বাড়ি চলে যায়।” তবে ছাত্রটি ও তার মাকে কোনও রকম অপমানজনক কথা বলা হয়নি বলেই দাবি করেছেন ওই শিক্ষকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy