‘নাথবতী অনাথবৎ’-এ শাঁওলী
নাটক। এই শব্দটা উচ্চারণ করলেই যে মানুষেরা মনের আঙিনায় হাজির হতে থাকেন, তাঁদের অনেকের অভিনয়ই আমি দেখার সুযোগ পাইনি। কিন্তু আমি শাঁওলী মিত্রকে দেখেছি। সলতে পাকানোর সময় থেকেই শাঁওলীদির অভিনয় আমার দর্শনের মধ্যে ছিল। কমবয়সে রেডিয়ো-নাটকে শুনেছি, বাচিক অভিনয়ে পরিমিত আবেগ ও বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে কী অসাধারণ ভাবে শ্রোতাকে এক অন্য জগতে নিয়ে চলে যাচ্ছেন শাঁওলী মিত্র।
শুরুর দিকে ওঁর ‘নাথবতী অনাথবৎ’, ‘কথা অমৃতসমান’-এর মতো বিখ্যাত প্রযোজনাগুলি যেন একটা বিরাট শিক্ষাঙ্গন মেলে ধরছিল আমার সামনে। সেখানে আমি যে শুধু ছাত্রের মতো নোট নিচ্ছিলাম, তা নয়। উনি হাত ধরে যেন টেনে নিয়ে যেতেন মঞ্চে আর আমিও যেন একাত্ম হয়ে ওঁর সঙ্গেই অভিনয় করতাম। পরবর্তী কালে বিতত বিতংস’ কিংবা ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’ দেখেও একই ভাবে মুগ্ধ হয়েছি। শম্ভু মিত্র রচনাসমগ্রে ওঁর লেখা ভূমিকাটি পড়ে মনে হয়েছিল, পরতে পরতে কী অসামান্য সমাজবোধ। বাবার কথা বলতে গিয়ে নিজের চিন্তার স্ফূরণ ঘটেছে সেখানে। অভিনেতার বাইরেও একজন চোখ-কান খোলা রাখা সচেতন মানুষ ছিলেন শাঁওলীদি। মনে পড়ে, ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’, ‘রুদ্ধসঙ্গীত’ দেখে ফোন করে ভাললাগার কথা জানিয়েছিলেন। যেহেতু উনি দেবব্রত বিশ্বাসকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন, তাই ‘রুদ্ধসঙ্গীত’-এর কোন জায়গায় আরও কী করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে পরামর্শও দিয়েছিলেন। এ ভাবে সব সময়ে দূর থেকেই উনি আমার হাত ধরে ছিলেন।
অনুলিখন: সায়নী ঘটক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy