লকডাউনে একসঙ্গে গান তৈরি করছেন বাংলার শিল্পীরা।
লকডাউনে তৈরি হল গান। অনুপম, শ্রীজাত, অনিন্দ্য, চন্দ্রিল। এত দিন একসঙ্গে একটাও গান লেখেননি তাঁরা। গৃহবন্দি হয়ে লিখলেন।
কী লিখলেন তাঁরা?
‘মনখারাপকে দূরত্বে ভাগ করে
আংটির মতো সাজিয়েছি মধ্যমায়
এই গান তার মানে খুঁজে পাবে
তোমার আমার নিজস্ব তর্জমায়...’
ঘরবন্দি অনুপম, জন্মদিন কাটিয়েছেন বাড়ি থেকে ভক্তদের জন্য লাইভে গান শুনিয়ে। এ বার বন্ধুদের নিয়ে গান লেখায় উদ্যোগী হলেন। “একদিন শ্রীজাতদার সঙ্গে ভিডিয়ো কল করতে করতেই বললাম, চল, কয়েক জন মিলে একটা গান লিখি। এমনিতে তো এ ভাবে কাজ হয় না। আমি কয়েকটা লাইন লিখলাম। তার পর একে একে শ্রীজাতদা, অনিন্দ্যদা, চন্দ্রিলদা… প্রত্যেকের নিজস্ব ভঙ্গি মিলে গেল এক গানে,” বললেন অনুপম।
সামনের দিন অচেনা। পথের খবর নেই।
‘নিজেকে কুড়িয়ে ঝিনুকের মতো শুনি
সমুদ্রধ্বনি কোথাও বাজছে কি না…’
“দম বন্ধ হয়ে আসা জীবনে চার জনে মিলে গান তৈরি করলাম। যাঁদের হাজার হাজার মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে, সেই মজদুরদের কাছে হয়তো এই গানের মানে নেই। কিন্তু আমরা যারা প্রিভিলেজ ক্লাস, শিল্পকে মেন্টালি আর ফিজিক্যালি আফোর্ড করতে পারি, তাদের কাছে এই গান মুক্তির স্বাদ এনে দেবে।” শ্রীজাত তাঁর বিশ্বাসের জায়গায় কথা বললেন।
আরও পড়ুন: এক রাতে আক্রান্ত বাড়ল ২৪০, দেশে আক্রান্ত ১৬৩৭, মৃত ৩৮
আরও পড়ুন: বেলঘরিয়ার করোনা আক্রান্তের মৃত্যু, অত্যন্ত সঙ্কটে নয়াবাদের বাসিন্দা
গানের নাম নিয়ে চার জন পুরোপুরি সিদ্ধান্তে না এলেও শ্রীজাত বলছেন, তিনি ‘নির্বাসনের গান’ এই নামই ভেবেছেন। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে তাঁর আগামী ছবি ‘#প্রেম-টেম’-এর এডিট নিয়ে ব্যস্ত। বললেন, “খুব কিছু কাজ নেই, আমার কাছে গানের কিছু লাইন এল। অনুপমের সঙ্গে আগেও কথা হয়েছিল। লিখে দিলাম… এই সময় আমাদের এই প্রচেষ্টায় যা তৈরি হল তা হল ‘লকডাউন শিল্প’।’’
বাড়িতেই বন্ধুদের আবদারে কলম ধরেছেন চন্দ্রিল ভট্টাচার্য। “এটা অনুপমের ভাবনা। ও তো আমাদের লেখায় সুরও দিয়ে ফেলেছে। ও-ই গানটা গাইবে,” যোগ করলেন তিনি।
গ্রাফিক্স— তিয়াসা দাস।
কেউ ভাবেননি করোনাকে ঘিরেই গান লিখবেন। এই গান কোনও প্রযোজকের ফরমায়েশি গান ছিল না। ভিডিয়ো কল আর বাড়ি-বন্দি অবসরে একলা সময়ের ফসল নেমেছে কবিতার দগ্ধ মাঠে। আজ মানুষ ছায়া থেকেও যেন সরে সরে… গানে আসছে সেই সঙ্কেত,
‘বেলা বয়ে বয়ে যায়, বেলা বয়ে
যায় এ শহরে
জাহাজেরা ঘুমে যায় উদাসী
হাওয়ায় এ শহরে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy