৪ দিনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটের ৩ সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু হল। গত সাত দিনে ওই ইউনিটে মারা গিয়েছে ৭টি সদ্যোজাত। সদ্যোজাত না হলেও রক্তে সংক্রমণ ঘটে শিশুবিভাগে মারা গিয়েছে আরও এক শিশু। মৃতের পরিবারের একাংশ ও এসএনসিইউতে থাকা সদ্যোজাতের আত্মীয়েরা রবিবার হাসপাতালের ওই ইউনিটে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্তে সংক্রমণ ঘটে গত বৃহস্পতি, শুক্র এবং শনিবার ১টি করে সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়।
এসএনসিইউতে থাকা সদ্যোজাত পর পর সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রন্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ-ও। তাঁরাও মনে করেন এসএনসিইউতে রক্তে সংক্রমণ ঘটে শিশু মৃত্যুর ঘটনা কাম্য নয়। কী ভাবে ওয়ার্ডে সদ্যোজাতরা রক্তের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছেন তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস এ দিন দেওয়া হয়। এসএনসিইউ-এর রক্ষণাবেক্ষণে উদাসীনতার কথা মেনে নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “সংক্রমণে শিশুদের মৃত্যু হওয়া উচিত নয়। দেখভালে কিছু ত্রুটি হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। বিস্তারিত দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” শিশুবিভাগের কাজে কলকাতা স্বাস্থভবনে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই বিভাগের প্রধান মৃদুলা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সেপ্টিসেমিয়ায় তিনটি সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। আরও একটি ৩ মাসের শিশু মারা গিয়েছে। অন্য সদ্যোজাত যারা মারা গিয়েছে তাদের কেউ জন্মাবার পর কাঁদেনি। কারও ওজন মাত্রিতিরিক্ত কম ছিল।” তিনি মনে করেন, অনিয়মের জেরে এসএনসিইউতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। না হলে সংক্রমণে এসএনসিইউতে শিশু মৃত্যু হওয়া উচিত নয়। তাঁর আশঙ্কা, ওই ইউনিটে খুশি মতো লোকজন ঢুকে যাচ্ছে। যা কাম্য নয়। কেন না ওই ইউনিট সংক্রমণ মুক্ত করে রাখা হয়। যে কেউ খুশি মতো ওই ওয়ার্ডে যাতায়াত করলে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া শিশুদের কাছে যাওয়ার আগে মায়েদের একাংশ যথাযথ পোশাক ব্যবহার করছেন না। বাইরের পোশাকেই ঢুকে যাচ্ছেন। হাত না-ধুয়েই শিশুদের কোলে নিচ্ছেন। তা ছাড়া লেবার ওয়ার্ড থেকে সংক্রমণ ঘটছে কিনা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন চিকিৎসকদের একাংশ।
মাঝে মধ্যে এসএনসিইউ’র ওয়ার্ড জীবাণু মুক্ত করা হয়। সেই কাজও ঠিক মতো হচ্ছে না বলে স্বাস্থ্যকর্মী আর, চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন। এসএনসিইউ’র নোডাল অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী সুপার ইসমাইল শেখ। তিনি এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। শিলিগুড়ির বাসিন্দা সুশান্ত ভৌমিকের শ্যালকের মেয়ে ওই ওয়ার্ডে রয়েছেন। তিনি বলেন, “অধিকাংশ সময় জুনিয়র চিকিৎসকরা শিশুদের দেখছেন। এখন ফের শুনছি এসএনসিইউতে নাকি সংক্রমণ ছড়িছে পড়ছে। তাই পরিবারের সকলেই এই বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy