Advertisement
০৮ মে ২০২৪

সব ভাষার পথ আজ বাংলায় মিশেছে

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই দিনটি পালন করছে আম বাঙালি। আজ বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন। অর্ধনমিত রাখা হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হয় শোকের কালো পতাকা। শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা বাংলাদেশেই স্কুল-কলেজ এবং প্রশাসনের উদ্যোগে পূর্ণ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।দিনের প্রথমার্ধে, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁদের পর শহিদ বেদিতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০১
Share: Save:

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই দিনটি পালন করছে আম বাঙালি। আজ বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন। অর্ধনমিত রাখা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হয় শোকের কালো পতাকা। শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা বাংলাদেশেই স্কুল-কলেজ এবং প্রশাসনের উদ্যোগে পূর্ণ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

দিনের প্রথমার্ধে, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দেন শেখ হাসিনা। তাঁদের পর শহিদ বেদিতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। পরে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল, সেনাবাহিনীর তিন প্রধান, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও ভাষা সৈনিকরা।

পড়ুন- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি গেয়ে ভাষা শহিদদের স্মরণ বারোটি ভাষায়

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্ব মিটে গেলে এ দিন শহিদ মিনার সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ দিন সকাল থেকেই নামে মানুষের ঢল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সর্ব স্তরের মানুষের ভিড় অনেকটাই বেড়ে যায়।দীর্ঘ লাইনে ফুল আর ছোট ছোট পতাকা হাতে লাইন বেঁধে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় সব বয়সের, সব শ্রেণির আর সব পেশার মানুষকেই।

রবিবার সকাল থেকেই ঢল নামে ঢাকার রাস্তায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহিদ বেদির সামনে দেখা যায় মানুষের দীর্ঘ লাইন। কিন্তু কোথাও বিশৃঙ্খলা নেই। আট থেকে আশি সব বয়সের মানুষকে হাতে ফুল এবং ছোট ছোট পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সদর দফতরে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান। শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রবাসীরা। রাষ্ট্রসংঘের বাংলাদেশে মিশনে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।

রাত দেড়টা:

শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েক শো নেতাকর্মীদের এক সঙ্গে শহিদ বেদিতে উঠতে বাধা দেন আয়োজকরা। তাতে বচসা বেধে যায় দু’পক্ষের। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাত ১২টা ১ মিনিট:
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পর একে একে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবর্গ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশের সেনা প্রধান আবু বেলাল মো. শফিউল হক, বিমান বাহিনীপ্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার ও নৌ বাহিনীর প্রধাননিজামউদ্দিন আহমেদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বাংলাদেশের পুলিশ মহাপরিদর্শক একে এম শহীদুল হক ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজানান। এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম সুপ্রীম কোর্টের পক্ষেথেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।



ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গ্রন্থমেলার অমর একুশের অনুষ্ঠানসূচি:
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে আগামীকাল রবিবার বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে থাকছে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, কবিতা পাঠের আসর ও বক্তৃতানুষ্ঠান। এ দিন মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়। যা একটানা চলবে রাত আটটা পর্যন্ত। গ্রন্থমেলার কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।

শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

সকাল সাড়ে ৭টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে রয়েছে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে সভাপতিত্ব করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। এ ছাড়া বিকেল ৪টায় অমর একুশে গ্রন্থ মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে অমর একুশে বক্তৃতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। বক্তৃতা প্রদান করবেন সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

ঢাকায় শুরু হয়েছে বইমেলা।

বেনাপোল চেকপোস্টে দুই বাংলার মোহনায় ভাষাপ্রেমীদের মিলনমেলা
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে দুই বাংলার মোহনায় হতে যাচ্ছে ভাষাপ্রেমীদের মিলনমেলা। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এর আয়োজন করেছে কাঠপেন্সিল ইভেন্টস।
দৃষ্টিনন্দন মঞ্চে থাকবে ভাষা শহীদের স্মরণে স্থানীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, পতাকা বিনিময়, দুই বাংলার বিশিষ্টজনদের মধ্যে ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও ফুলেল শুভেচ্ছা, অতিথি আপ্যায়ন, আলোচনা ও মতবিনিময়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলবে বিকেল পর্যন্ত। এখানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী ও ভাওয়াইয়া শিল্পী সফিউল আলম রাজা।

ঢাকার রাজপথে চলছে প্রস্তুতি

২০০০ সাল থেকে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছে কাঠপেন্সিল। প্রতিবারই দুই দেশের (ভারত ও বাংলাদেশ) মন্ত্রীবর্গ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সামাজিক ব্যক্তিত্বরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।। এবারও ব্যতিক্রম হবে না।
কাঠপেন্সিল ইভেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও ভাষা দিবসে সকাল থেকেই বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় দুই বাংলার মানুষের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠবে বলে আমাদের আশা। বাংলা ভাষার প্রতি আবেগাপ্লুত হয়ে দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীরা একত্র হয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করবেন। এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকাটি তোরণ, মঞ্চ, ফেস্টুন, ব্যানারসহ বর্ণিল আয়োজনে সাজানো হয়েছে।’

সৌজন্য: বাংলা ট্রিবিউন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE