ভারতী সিংহের ওজন কমার আগে ও পরে। ছবি: সংগৃহীত
যদি কেউ ‘ফাস্টিং ফর হেল্থ’ বলে গুগ্লে সার্চ করেন, তা হলে নিমেষে ৬০ লক্ষের উপর রেজাল্ট চলে আসবে। এখন বহু চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী মনে করেন, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যদি শরীরে কোনও রকম খাদ্য না যায়, তা হলে অনেক রোগ-ব্যাধি দূরে রাখা সম্ভব। এতে হজমশক্তিও বাড়ে এবং শরীরের বিপাক হারও নিয়ন্ত্রিত হয়। সপ্তাহে এক কিংবা দু’দিন উপোস করে থাকার চল অনেক যুগ থেকেই রয়েছে। এখনও বেশ কিছু ডায়েট মেনে চলে সেই নিয়ম। ৫:২ ডায়েটে সপ্তাহে ৫ দিন যা ইচ্ছা খাওয়া যায় এবং বাকি দু’দিন ৫০০ ক্যালরির মধ্যে বেঁধে ফেলতে হয় সারা দিনের খাদ্যতালিকা। অন্য আরেক জনপ্রিয় ডায়েট— ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। এই ধরনের ডায়েটে দিনে ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। তকে অনেকেই ১২-১৪ দিয়ে শুরু করেন। আবার অনেকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্তও টেনে দেন। সম্প্রতি কমেডিয়ান ভারতী সিংহ জানিয়েছেন যে ১৭ ঘণ্টা করে উপোস করে তিনি ১৫ কেজি কমিয়ে ফেলেছেন। তাঁর ডায়েট নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। সকলেই এখন জানতে চাইছেন, কী করে ঘি-পরোটার মতো যাবতীয় খাবার খেয়ে, কোনও শরীরচর্চা না করেই ১৫ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেললেন ভারতী।
কিন্তু এ ভাবে এতক্ষণ না খেয়ে থাকা কী শরীর পক্ষে ভাল? এতে কোনও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে না তো? চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন, এতে শরীরের উপকারই বেশি হয়। সেগুলি কী রকম, দেখে নেওয়া যাক।
১। শরীরে যেহেতু গ্লুকোজ আর তৈরি হয় না, তাই জমানো গ্লুকোজ বা গ্লাইকোজেন থেকে এনার্জি নেওয়া শুরু করে শরীর। সেটাও শেষ হয়ে গেলে শরীরের ফ্যাট ঝরিয়ে এনার্জি নেয় শরীর।
২। কিছু দিন এমন চলতে থাকলে শরীর কিটোসিস মোডে চলে যায়। যার মানে ফ্যাট থেকেই মূলত এনার্জি তৈরি করে শরীর। তাই ওজনও কমে চটপট।
৩। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে মাঝে মাঝে উপোস করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
৪। ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য এই পদ্ধতি দারুণ উপকারি। এতে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমে এবং হৃদরোগের আশঙ্কাও কম হয়।
৫। কিছু গবেষণা বলছে, প্রস্টেট ক্যানসার এবং কোলোন ক্যানসারের মতো রোগের আশঙ্কা কমে নিয়মিত উপোস করলে। তবে এই নিয়ে এখনও অনেক গবেষণা চলছে।
৬। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে দেখা গিয়েছে অ্যালজাইমার্স বা পারকিনসন’স-এর মতো নিউরোলজিক্যাল অসুখ কম হচ্ছে।
কিন্তু কিটোসিসের কিছু বাজে দিকও রয়েছে। যেমন রক্ত অনেক বেশি অ্যাসিডিক করে তোলা বা মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়া। শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে উপোস করা কিডনির এবং লিভারের পক্ষেও ক্ষতিকর।
যে কোনও ধরনের উপোস শুরু করার আগে কিছু মাথায় রাখতে হবে।
১। অ্যানিমিয়া থাকলে কোনও রকম উপোস করা চলবে না।
২। নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে যাঁদের তাঁদেরও খাওয়াদাওয়া সারা দিনে সময় মতো করতে হবে।
৩। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য কোনও রকম উপোস একেবারেই চলবে না।
৪। ডায়াবিটিস থাকলে বিশেষ নিয়মে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার সময়ও ঠিক করতে হবে।
৫। কোনও রকম ইটিং ডিসঅর্ডার থাকলে মনোবিদের পরামর্শ মেনে চলুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy