গুমোট গরমকে সঙ্গে নিয়েই উৎসবের রেশ আকাশে বাতাসে।
গুমোট গরমকে সঙ্গে নিয়েই উৎসবের রেশ আকাশে বাতাসে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই আলোর মালায় সেজে উঠছে শহর, মফস্সল। বিভিন্ন জায়গায় বাজির বাজারে উপচে পড়ছে ভিড়। কালীপুজোর আগেই শুরু হয়েছে বাজি পোড়ানোর ধুম। একটা কথা মাথায় রাখা উচিত বাজির আগুন থেকে সাবধান না হলে দুর্ঘটনা হতে পারে যখন তখন। আনন্দের দিনগুলো আরও আনন্দ মুখর করে তুলতে গেলে বাজি পোড়ানোর সময়ে কয়েকটা কথা মনে রাখা দরকার। সাবধানতা নিয়েও আচমকা বিপদ আসতে পারে। ঠান্ডা মাথায় তার মোকাবিলা করতে হবে। ভয় পেয়ে চেঁচামেচি করলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না। ছোটদের বাজি পোড়ানোর সময় সঙ্গে বড়দের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন। খোলা ছাদে বা উঠোনে বাজি জ্বালানো উচিত। ঘরের লাগোয়া ঘেরা বারান্দা বা জানলা দিয়ে বাজি ছোড়া বিপজ্জনক। টুনি বাল্ব লাগানোর সময়েও সাবধানতা নেওয়া দরকার। ইলেকট্রিক শক লাগা থেকে বাচ্চাদের সাবধানে রাখতে হবে। কালীপুজোর সময় প্রায় প্রত্যেক প্লাস্টিক সার্জেনের কাছে রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিনগুনেরও বেশি হয়ে যায়। নিরাপদে আলোর উৎসব পালন করার আগে জেনে রাখুন কয়েকটি টিপস ।
আগুনে পোড়ার একমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা ঠান্ডা জল। বাজি জ্বালানোর জায়গার পাশে কল বা বালতি ভর্তি জল রেখে দেওয়া মাস্ট। ফুলঝুরি বা রংমশালের আগুনের ফুলকি হাতে পায়ে লাগলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পোড়া জায়গা জলে ডুবিয়ে রাখা উচিত। ডাক্তারি মতে আগুনে পোড়ার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে ঠান্ডা জলে পোড়া অংশ ডুবিয়ে রাখলে উপকার হয়। টানা চার পাঁচ মিনিট জলে পোড়া অংশ ডুবিয়ে রাখা দরকার। নিদেন পক্ষে রানিং ওয়াটার অর্থাৎ কলের জলের নীচে পুড়ে যাওয়া হাত বা পা রেখে দিতে হবে। এর ফলে তাপমাত্রা কমবে ও ডিপ বার্ন আটকানো যাবে। বেশি পুড়ে গেলে অবশ্যই কাছাকাছি চিকিত্সাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। শরীরের দশ শতাংশের বেশি পুড়ে গেলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। আমাদের শরীরের একটা হাত দশ শতাংশ ধরে হিসেব করতে হবে।
বাজি পোড়াতে যাওয়ার সময় অবশ্যই সুতির পোশাক পরতে হবে, কৃত্রিম সুতোর পোশাক নয়। স্বাভাবিক পোষাক পরে বাজি জ্বালানো উচিত। ঝোলা, বেশি ঘেরওয়ালা বা কৃত্রিম সুতোর পোশাক পরে বাজি জ্বালাতে গেলে ভয়ানক বিপদের সম্ভাবনা থাকে। ভাল দোকান থেকে ব্র্যান্ডেড বাজি কেনা উচিত। সঠিক মানের বাজি না হলে বিপদের সম্ভাবনা বাড়ে। খোলা ছাদে বা উঠোনে বাজি জ্বালানো উচিত, ঘরে বা ঘেরা বারান্দায় নয়। হাতের কাছে একটা ফার্স্ট এড বক্স রেখে দিলে ভাল। ফুলঝুরি, রং মশাল, চরকি বা তুবড়ি জ্বালানোর পর পোড়া অংশ লোহার বালতিতে বালির মধ্যে বা ছাদের এককোনে বালি রেখে তাতে ফেলতে হবে। বাজির শেষাংশ ছুঁড়ে যেখানে সেখানে ফেললে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি আগুনের ফুল্কি থেকে বিপদের সম্ভাবনা থাকে।
প্রদীপ বা বাতির কাছাকাছি পর্দা বা গ্যাস সিলিন্ডার যেন না থাকে খেয়াল রাখতে হবে। ছাদে খোলা জায়গায় বাতি জ্বালালে ভাল হয়। অনেকেই ত্বকের বিভিন্ন অ্যালার্জিতে কষ্ট পান। সে ক্ষেত্রে বাজি জ্বালানোর আগে শরীরের খোলা অংশে নারকেল তেল মেখে নিলে বাজির ধোঁয়া সরাসরি ত্বকে লাগবে না, ব্যারিয়ার থাকলে চট করে ত্বকের সমস্যা হবে না। রং মশাল, রকেট বা তুবড়ি হাতে নিয়ে ছুড়বেন না। প্যাকাঠি ব্যবহার করলে ভাল হয়। তুবড়ি জ্বলতে জ্বলতে নিভে গেলে অযথা খোঁচালে বার্স্ট করতে পারে। আগুন যেমন মারাত্মক আরও বেশি মারাত্মক কার্বন মনো অক্সাইড। ঢাকুরিয়ার হাসপাতালে আগুন লেগে রোগীদের মৃত্যুর কারণ ছিল এই কার্বন মনো অক্সাইড। তাই আগুন লাগলে দরজা জানলা বন্ধ করে দেবেন না। আর ধোঁয়ার মধ্যে থেকে বিপদ বাড়াবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy