নৈশভোজে: রবিবার প্রণব-সনিয়া। —নিজস্ব চিত্র।
আনন্দে আটখানা তিনি। গত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যখন নরেন্দ্র মোদীর নামে ‘চায়ে পে চর্চা’ শুরু করেছিল, তখনই এর পাল্টা ‘রাহুল দুধ’ বিলি শুরু করেছিলেন বছর তিরিশের আনোয়ার হুসেন।
সেটা ২০১৪। এর পরে রাহুলের নামে বেচেছেন ভেষজ চা, এমনকী সস্তায় পেঁয়াজও। আর এখন যখন রাহুল গাঁধী কংগ্রেসের সভাপতি, উৎসাহ বাঁধ মানছে না গোরক্ষপুরের এই নবীন কংগ্রেস নেতার। ‘ব্র্যান্ড-রাহুল’কে আরও জনপ্রিয় করে তোলার জন্য কোমর বেঁধে নামছেন তিনি। তবে আনোয়ার এ বারে কী করবেন, তা নিয়ে গোরক্ষপুরে যথেষ্ট কৌতূহল থাকলেও এখনই সেই রহস্য ভাঙছেন না এই রাহুল-ভক্ত।
শুরুটা ছাত্র-রাজনীতির পথ ধরে। ২০০৫-এ গোরক্ষপুরে যুব কংগ্রেসের সভায় গিয়েছিলেন রাহুল। সেখানে তাঁর বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়ে সে বছরই কংগ্রেসে যোগ দেন আনোয়ার। তার পর থেকে যোগী আদিত্যনাথের ঘাঁটি এই গোরক্ষপুরে রাহুলের নাম ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেননি আনোয়ার।
আরও পড়ুন: গুজরাত মডেল: বাজনা আর বাস্তবে কিন্তু বিস্তর ফারাক
উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে তিনি বিলি করতেন ‘রাহুল গোলাপ’। রাহুল আর অখিলেশ যাদবের জুটি তাঁর মতে ছিল ‘করন-অর্জুন কা জোড়ি’। গত বছর নভেম্বরে নরেন্দ্র মোদী নোটবন্দির কথা ঘোষণা করার পরে ব্যাঙ্ক-এটিএমের সামনে তখন দীর্ঘ লাইন। এখানে ওখানে লোকে মূর্ছা যাচ্ছেন। আনোয়ার তখন লাইনে দাঁড়ানো লোকজনকে চাঙ্গা রাখতে, তাঁদের তেষ্টা ও ক্লান্তি দূর করতে হাজির হতেন ‘রাহুল হার্বাল চা’ নিয়ে। আবার পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া হতে দেখে কিছু দিন আগে তিনি পাঁচ টাকা কেজি দরে ‘রাহুল পেঁয়াজ’ বেচতে শুরু করেন।
আনোয়ারের অ্যাপার্টমেন্টটিও পুরো রাহুলময়। রয়েছে রাহুলের ছবির গ্যালারি। তাঁর কফি মগেও ছবি রাহুলের। এমন অবিচল রাহুল-ভক্তির জেরেই আনোয়ারকে দলের জেলা সম্পাদক করা হয়েছে সম্প্রতি। তাঁর কথায়, ‘‘এতগুলি বছর রাহুলকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা করে গিয়েছি। তাঁর সঙ্গে দেখাও করেছি। আমাকে তিনি বলেছিলেন, তোমার মতো যুবকদের প্রয়োজন কংগ্রেসে।’’
স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী সুরহিতা করিমের কথায়, ‘‘কংগ্রেসের প্রসার ঘটাতে আনোয়ারের মতো নেতারা প্রচণ্ড খেটে চলেছেন। অভিনব সব পন্থা বার করছেন। এখন যখন রাহুলজি কংগ্রেসকে সুপ্রাচীন এক নবীন দল (গ্র্যান্ড ওল্ড ইয়ং পার্টি) হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন, তখন আনোয়ারদের মতো নেতারা নিশ্চিত ভাবেই দলকে চাঙ্গা করে তোলার কাজে বড় ভূমিকা নেবেন।’’
দলে রাহুল-জমানা শুরু হওয়ার পরে এ বারে ঠিক কী করতে চলেছেন আনোয়ার? ব্র্যান্ড রাহুলের প্রচার চলবেই। তবে দলের পদ পাওয়ার পরে সম্ভবত আর আগের মতো খেয়ালি-হুজুগে ঝাঁপাতে চান না আনোয়ার। পরিণত রাজনীতিকদের মতোই বলেছেন, ‘‘তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রাহুলজি খুবই জনপ্রিয়। তাঁর অভিষেকের পরে এ বারে আমার লক্ষ্য, কংগ্রেসকে আরও মজবুত করে তোলা। তরুণ-তরুণীরা যাতে আরও বেশি করে কংগ্রেসে যোগ দেন সেই চেষ্টা চালানো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy