Advertisement
০২ মে ২০২৪

গৌরী-হত্যার পরে বিজেপির প্রশ্রয়েই কি টুইট-ফৌজ

গৌরী-হত্যার পরে গুজরাতের এক ব্যবসায়ী নিখিল দাধিচের অশালীন টুইট নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। বিতর্কের পর নিখিল টুইট থেকে মুছে দিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফলো করেন বলে গর্বিত’— এই পোস্টটি। কিন্তু বিরোধীদের হাজার চাপেও প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ‘আনফলো’ করেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

গৌরী লঙ্কেশ খুন হওয়ায় টুইটে যিনি উল্লাস করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও তাঁকে ‘আনফলো’ করেননি। এ নিয়ে বিজেপির সাফাই— নরেন্দ্র মোদী এমন এক বিরল ব্যক্তি যিনি বাক-স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন। কাউকে ‘ব্লক’ বা ‘আনফলো’ করেন না। আর তিনি কাউকে ‘ফলো’ করলে সেটা তাঁর শংসাপত্র হতে পারে না।

কিন্তু সত্যিই কি মোদী যাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুসরণ করছেন, তাঁরা নিছক সাধারণ ব্যক্তি? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কি সত্যিই তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই? না ছবিটা আসলে উল্টো— সোশ্যাল মিডিয়ায় এই অশালীন প্রচারের পিছনে আসলে মদত রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের?

গৌরী-হত্যার পরে গুজরাতের এক ব্যবসায়ী নিখিল দাধিচের অশালীন টুইট নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। বিতর্কের পর নিখিল টুইট থেকে মুছে দিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফলো করেন বলে গর্বিত’— এই পোস্টটি। কিন্তু বিরোধীদের হাজার চাপেও প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ‘আনফলো’ করেননি। বরং গুজরাত বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তির কর্মীরা প্রকাশ্যেই নিখিলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আর দলের পক্ষ থেকে সাফাই দেওয়া হয়েছে— প্রধানমন্ত্রী কাউকে ফলো করছেন, এটা তাঁর শংসাপত্র নয়।

আরও পড়ুন: অসাধু বাবাদের তালিকা বানালো সাধুদের পরিষদ

কিন্তু দেখা যাচ্ছে— প্রধানমন্ত্রী যে মুষ্টিমেয় ১৭৭৯ জনকে টুইটে ফলো করেন, তার মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা অতীতেও এ ধরণের অশালীন প্রচার করেছেন। যেমন রাহুল কৌশিক। নিজেকে ‘স্বয়ংসেবক’ দাবি করা রাহুল প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির বিরুদ্ধে অশালীন টুইট করেছেন। মোদী ‘ফলো’ করেন অঙ্কিত জৈন নামে এক জনকে, যাঁর গৈরিক প্রচার অনেক সময়েই শালীনতার গণ্ডি পেরিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দিল্লিতে ডেকে মোদী নিজে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন অঙ্কিতকে। তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানান টুইটারে! প্রশান্ত ভূষণের উপর হামলাকারী তেজেন্দ্র বগ্গা তো এখন দিল্লি-বিজেপির মুখপাত্র! তিনি আবার দশমীতে কলকাতায় প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে চান!

কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতে, ‘‘গোড়া থেকেই আমরা বলে আসছি, বিজেপি নেতৃত্বের মদত না থাকলে এ ধরনের ফৌজ সাহস পায় না। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ ধরনের অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও বিভাজনের প্রচার ও প্রসার ঘটছে।’’ প্রধানমন্ত্রী যে অঙ্কিত জৈনকে ‘ফলো’ করেন, তাঁর কথায়, ‘‘রাহুল গাঁধী যে মাত্র ৭৯ জনকে ‘ফলো’ করেন, তার মধ্যে অমরেন্দ্র সিংহ রাজা, সঞ্জয় নিরুপমের মতো ব্যক্তিরা স্মৃতি ইরানির প্রসঙ্গে অশালীন মন্তব্য করেছেন। দিগ্বিজয় সিংহ প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে প্রায়ই অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন।’’ যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, বিজেপির এই ফৌজ নানা ভাবে দেশে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। নিখিলকে প্রধানমন্ত্রী ‘আনফলো’ না করায় টুইটারে অনেকেই প্রধানমন্ত্রীকে ‘ব্লক’ও করেছেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE