Advertisement
০৭ মে ২০২৪
বেতন বাড়াও-১

আম-আদমির হরেক বায়নায় দিল্লি সরগরম

দলটা আম আদমির। দাবিটা খাস। বাড়ি ‘নেব না’, ‘নেব না’ করে অরবিন্দ কেজরীবালের এখন পাঁচ হাজার বর্গমিটার জুড়ে পাঁচ কামরার বাংলো। তাতে তিনটি বাগান। এসি ‘চাই না’ বলেও এখন ৩০টি ‘এসি’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০০:০৫
Share: Save:

দলটা আম আদমির। দাবিটা খাস।

বাড়ি ‘নেব না’, ‘নেব না’ করে অরবিন্দ কেজরীবালের এখন পাঁচ হাজার বর্গমিটার জুড়ে পাঁচ কামরার বাংলো। তাতে তিনটি বাগান। এসি ‘চাই না’ বলেও এখন ৩০টি ‘এসি’। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিল আসে এক লাখ টাকার বেশি! আগের ছোট

গাড়ি এখন বড় হয়েছে। সরকারের প্রচারের বাজেটই তৈরি হয়েছে পাঁচশো কোটি টাকার। ফলাও করে তা প্রচার হচ্ছে গণমাধ্যমে। তার মধ্যেই কেজরীবালের দলের বিধায়করা এ বার দাবি জুড়েছেন, ৮৪ হাজার বেতনে আর কুলোচ্ছে না। আরও চাই।

‘আম আদমিদের’ এই খাস দাবি নিয়েই তুলকালাম দিল্লি। বিজেপি বিধায়করা বলছেন, এক টাকা বেতনেও আমরা কাজ করতে রাজি। মানুষের সেবা করতে নিজের পকেট ভারী করতে হয় না কি? আম আদমির বিধায়করা কি ভোটের আগে জানতেন না তাঁদের মাইনে কত? ভোটের পরেই কেন ভোলবদল?

দিল্লি বিধানসভায় নেই কংগ্রেসের এক জন বিধায়কও। বিধায়কের মাইনে বাড়লে বা কমলেও কংগ্রেসের কিছু এসে যায় না। তাতে কী? কেজরী-বধে আসরে তারাও। অজয় মাকেনের অভিযোগ, ‘‘শুধু কি মাইনে বাড়ানোর দাবি! দলের লোককে সরকারে ঢুকিয়ে তাঁদের এখন দেদার লালবাতি দেওয়া হচ্ছে। বড় মুখ করে কেজরীবাল বলেছিলেন, নিরাপত্তা নেবেন না। বড় বাড়ি নেবেন না। লালবাতি মিটিয়ে দেবেন। এখন কী হল?’’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সব কথায় তো আগে রাস্তায় বসে জনতার রায় নিতেন। বিধায়কদের দিয়ে মাইনে বাড়ানোর দাবি তোলার সময় কি সে রায় নিচ্ছেন?’’

কিন্তু আম আদমি পার্টির বিধায়করা তাঁদের বাস্তব সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। আপ সূত্রের খবর, এক জন বিধায়ককে অনেক সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতে হয়। বিধায়কদের নিজেদের সচিব রাখতে হয়। আমজনতার অভাব-অভিযোগ শুনতে হয়। তাঁদের দাবিও মেটাতে হয়। বাড়ির পাশাপাশি একটি দফতর চালাতে হয়। মাইনে তো মাত্র ১২ হাজার টাকা। ভাতা মিলিয়ে ৮৪ হাজার টাকা তাঁরা হাতে পান। আপ বিধায়কদের তাই প্রশ্ন, সততার সঙ্গে কাজ করতে গেলে এ টাকায় কী করে সব দিক সামলানো সম্ভব? বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে

রোজ যে সব আম আদমি আসেন, তাঁদের অন্তত এক কাপ চা-তো খাওয়াতে হবে। আমাদের তো আর অন্য রোজগার নেই।

বিরোধীদের নিশানায় কেজরীবালের বাড়ির বিদ্যুতের বিলও। তাঁদের কটাক্ষ, এই কেজরীবালই তো ক্ষমতায় এসে পূর্ত দফতরকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তাঁর

বাড়ি থেকে এসি হটিয়ে দিতে। বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে দিল্লির উপকন্ঠে যেখানে তিনি থাকতেন, সে বাড়িতে ছিল মাত্র একটি এসি। তা-ও বাবা-মায়ের ঘরে। আগের বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময়েও নিয়েছিলেন একটি মাত্র এসি। এখন তাঁরই বাড়িতে কিনা ৩০টি এসি! আম আদমিদের সেই নেতার বাড়ির বিদ্যুৎ বিলই কিনা১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা!

এ ক্ষেত্রেও একই যুক্তি দিচ্ছেন আপের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা বিল শুধু তো কেজরীবালের বাড়ির বিদ্যুতের খরচ নয়। এর সঙ্গে বাড়ির লাগোয়া দফতরও রয়েছে। সেখানেও রোজ শয়ে শয়ে লোক আসেন। দলের কাজ হয়।

আপ-কর্তারা যে যুক্তিই দিন, বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ এখন বিলের বহর দেখে নোটিস পাঠানোর কথা ভাবছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। অভিযোগ উঠেছে, বাড়িতে ব্যবহারের জন্য মিটার নেওয়া হলেও তা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। কোনও বাড়িতে এত বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE