অকপট: তাঁর সঙ্গে কী হয়েছিল, জানিয়ে দিলেন বাইলস।
এ বার মুখ খুললেন রিও অলিম্পিক্সে পদকজয়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলস। জানিয়ে দিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জিমন্যাস্টিক্স দলের প্রাক্তন চিকিৎসক ল্যারি নাসার তাঁর যৌন হেনস্থা ও শ্লীলতাহানি করেছিলেন।
রিও অলিম্পিক্স থেকে জিমন্যাস্টিক্স-এ চারটি সোনা জিতে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন বাইলস। সেই পদকজয়ী তারকা জিমন্যাস্টই সোমবার রাতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে টিমের চিকিৎসকের হাতে নিজের যৌন হেনস্থা হওয়ার কথা জানিয়ে দেন।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বাইলস লেখেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ আমাকে চেনে হাসিখুশি, চনমনে স্বভাবের একটি মেয়ে হিসেবে। কিন্তু সেই মেয়েটিই ঘটনার পর একদম কুঁকড়ে গিয়েছিল মানসিক ভাবে। ওই সময় যতই মনের এই যন্ত্রণা চেপে রাখার চেষ্টা করতাম, ততই আরও ভয় বাড়ত।’
সিমোন বাইলস টুইটের সঙ্গে পোস্ট করা তাঁর চিঠিতে এও বলেন, ‘আমার সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে এখন আর ভয় করে না। অন্য অনেক অ্যাথলিটের মতো আমিও টিমের চিকিৎসক ল্যারি নাসার-এর হাতে যৌন হেনস্থা ও শ্লীলতাহানির শিকার। এত দিন ওই ঘটনা না জানানোর অনেক কারণ ছিল। কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি ওটা কোনও মতেই আমার দোষ ছিল না। ওই ঘটনার সবকিছু মুখে প্রকাশ করা আমার পক্ষে শোভনীয় নয়। তাই লিখেই তা প্রকাশ করতে হল।’
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মার্কিন জিমন্যাস্ট টিমের সেই চিকিৎসক ল্যারি নাসার এই মুহূর্তে শাস্তির মুখে দাঁড়িয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে মার্কিন মুলুকের প্রায় ১৪০ জন মহিলা অ্যাথলিট যৌন হেনস্থা ও শ্লীলতাহানি-র অভিযোগ এনেছেন। যৌন অপরাধের জন্য গত মাসেই যাকে ৬০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে মার্কিন আদালত। এ বার সিমোন বাইলস-সহ অ্যাথলিটদের অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে যাওয়ায় শাস্তির মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়াজগৎ। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে গত কয়েক মাস ধরেই যৌন হেনস্থা এবং শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে মহিলাদের সচেতন করতে একটি প্রচার চলছে। নিজের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা জানাতে সেই মঞ্চকেই বেছে নিয়েছেন বাইলস।
এই তারকা জিমন্যাস্টের কথায়, ‘‘একটা দীর্ঘ সময় ধরে ভেবে গিয়েছি, আমি কি খুব সরল ছিলাম? না কি দোষটা আমার? কিন্তু পরে ভেবে দেখেছি, আমার কোনও দোষ ছিল না। ল্যারি নাসারের মতো মানুষদের কুকীর্তি ফাঁস করতে আমারও এগিয়ে এসে নিজের অভিজ্ঞতা জানানো উচিত।’’
মার্কিন জিমন্যাস্ট টিমে সিমোন বাইলস-এর সতীর্থ অলিম্পিক্স পদক জয়ী অ্যালি রেইসম্যান, ম্যাকেলা মারুনি ও গ্যাবি ডগলাস ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন যে নাসার-এর হাতে তাঁদেরও যৌন হেনস্থা হয়েছিল। দ্বিতীয় জন ইতিমধ্যেই নাসারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আদালতে।
সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে সিমোন বাইলস বলেছেন, ‘‘বন্ধুদের এই অপমানের বৃত্তান্ত শোনার পরে মনে হয়েছিল, আমার চুপ থাকা একেবারেই উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy