Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আঁধারে আলোর আহ্বান গণনাট্য সঙ্ঘের

ভাটায় ঢেউ! রাজ্যে পরিবর্তনের পরে অধিকাংশ জায়গায় এখন পার্টি অফিসের তালা খুলতে পারছে না সিপিএম-সহ বামপন্থী দলগুলি। কোথাও কোথাও নির্বাচনী অফিস করা যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় আবার দেওয়াল লিখন বা পোস্টারে নিজেদের উপস্থিতি জানানোর সাহসটুকুও পাচ্ছেন না বাম কর্মী-সমর্থকেরা।

সুকান্ত সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

ভাটায় ঢেউ!

রাজ্যে পরিবর্তনের পরে অধিকাংশ জায়গায় এখন পার্টি অফিসের তালা খুলতে পারছে না সিপিএম-সহ বামপন্থী দলগুলি। কোথাও কোথাও নির্বাচনী অফিস করা যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় আবার দেওয়াল লিখন বা পোস্টারে নিজেদের উপস্থিতি জানানোর সাহসটুকুও পাচ্ছেন না বাম কর্মী-সমর্থকেরা। এই পরিস্থিতিতে কিন্তু ব্যতিক্রম বামপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠন গণনাট্য সঙ্ঘ। সংগঠনের সম্পাদক গোরা ঘোষ জানাচ্ছেন, আগে ভোটের সময় ২০-২২টা পথ নাটক তাঁরা করতেন। এ বার তাঁদের নাট্যকাররা ৫২-৫৩টি পথ নাটক রচনা করেছেন। আর এ বছর ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যে তাঁদের সব ক’টি ইউনিট মিলে প্রায় আড়াইশো শো করে ফেলেছে। যার মধ্যে শুধু কলকাতাতেই হয়েছে ৬০টি শো। ভোটের সময় এত শো গত বিশ বছরে কখনও হয়নি বলে গণনাট্য সঙ্ঘ সূত্রে জানা গিয়েছে।

সেই ১৯৪২-এ জন্ম লগ্ন থেকেই বামপন্থী আন্দোলনের সমর্থনে সাংস্কৃতিক কাজকর্ম করে আসছে গণনাট্য সঙ্ঘ। দেশ ভাগের পর, ১৯৫২ সালে প্রথম ভোট হয়। সেই সময় থেকেই বামপন্থীদের নির্বাচনী প্রচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণনাট্য কাজ করে এসেছে। গত সাড়ে তিন দশক ধরে ভোটের সময় বামপন্থী দলগুলি তাদের নির্বাচনী সভায় গণনাট্য-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দলকে অনুষ্ঠান করতে ডাকত। কিন্তু পরিস্থিতি এখন বদলেছে। কলকাতা এবং শহরে শো করতে পারলেও কোনও বামপন্থী দল গ্রামে তাঁদের দিয়ে সে ভাবে পথ নাটক করায়নি বলে গোরাবাবু জানিয়েছেন। এত দিন যে বাম দলগুলি ভোটের সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করত, এখন তারা নিজেদের প্রচারের ব্যবস্থা করে উঠতেই হিমশিম খাচ্ছে। গোরাবাবু জানান, এ বার গণনাট্যের হাজার পাঁচেক কর্মী প্রচারের আলোয় না থেকে নিজেদের মতো করে কাজ করছেন এবং তাতে মানুষের সাড়াও ভাল পাওয়া যাচ্ছে।

সরাসরি কোনও দল বা প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা নেই এই সব পথ নাটকে। দেশ জুড়ে দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, চাকরির নামে প্রতারণা, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলাএই সব বিষয় নিয়েই নাটক করছে গণনাট্য সঙ্ঘ। লাল পতাকা সঙ্গে না নিয়ে, এমনকী কোনও লাল দলের নাম উচ্চারণ না করেও নাটকে-গানে-কবিতায় গণনাট্যের কর্মীরা মানুষকে বলছেন জনমুখী নীতির পক্ষে ভোট দিতে।

তবে নাটক করতে গিয়ে বাধাও পাচ্ছেন তাঁরা। আরামবাগেই যেমন একটি শো করতে পারেননি সঙ্ঘের শিল্পীরা। গণনাট্যের হুগলি জেলার সম্পাদক শঙ্কর মুখোপাধ্যায় বললেন, “আমাদের শিল্পীদের গণসঙ্গীত, নাটক করতে বারণ করার পাশাপাশি হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল, ভোট দিতে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার ফলও ভুগতে হবে। তাই আরামবাগে আমরা কোনও ঝুঁকি নিয়ে শো করিনি।” পূর্ব মেদিনীপুরের নাট্যকর্মীরও এই ধরনের হুমকি পেয়েছেন। এবং তাঁরা এতটাই ভীত যে কলকাতায় নাটকের কর্মশালায় যোগ দিতেও এসেছেন লুকিয়ে। নদিয়ার গয়েশপুর এবং কল্যাণীর কিছু জায়গায় গণনাট্যের শিল্পীরা শো করতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাট্যকর্মী নির্মল ভট্টাচার্য। বর্ধমানের কিছু জায়গায় শো করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে আসেন গণনাট্যের কর্মীরা।

কিন্তু এই সব বাধা-বিপত্তি পিছনে ফেলেই গণনাট্য সঙ্ঘের কর্মীরা শো করছেন। আর গেয়ে উঠছেন, “ও আলোর পথযাত্রী, এ যে রাত্রি...।”

মদনের নাম দু’জায়গায়

ভোটার তালিকায় মন্ত্রী মদন মিত্রের নাম দু’জায়গায় রয়েছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। মদনবাবু থাকেন ভবানীপুরে এবং কামারহাটির বিধায়ক। ভোটার তালিকায় তাঁর নাম দু’জায়গাতেই রয়েছে। এই সংক্রান্ত নথিও দেখান সেলিম। দু’জায়গাতেই মদনবাবুর নাম, বাবার নাম একই থাকলেও বয়সে পার্থক্য রয়েছে। মদনবাবু অবশ্য বলেন, “আমি সিপিএম নেতাদের মতো একাধিক জায়গায় ভোট দেওয়াকে ঘৃণা করি।” জানান, তাঁর ভোটার কার্ডে ভবানীপুর ও কামারহাটির আইডি নম্বর এক। ফলে একই আইডি নম্বর নিয়ে দু’বার ভোট দেওয়া যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

campaign ellection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE