Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাতে পুলিশের দু’ঘণ্টা জেরা, ক্লান্ত বাবুল বেরোলেন হাসিমুখেই

পুলিশের সমন ছিলই। দিনভর প্রচারের পর রাতে হাজিরা দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। গোড়া থেকেই বাবুল বারবার বলছেন, হারার ভয়ে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ব্যতিব্যস্ত করতে চাইছে তৃণমূল। থানা-পুলিশ-আদালত দৌড় করিয়ে প্রচারের ময়দান থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে বলেও বিজেপি-র দাবি। মদ্যপান করে মন্দিরে ঢোকার অভিযোগের পরে এ বার মামলা হয়েছে অস্ত্র আইনে।

জামুড়িয়ার সার্কেল ইন্সপেক্টরের অফিসে বৃহস্পতিবার রাতে বাবুল। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

জামুড়িয়ার সার্কেল ইন্সপেক্টরের অফিসে বৃহস্পতিবার রাতে বাবুল। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৯
Share: Save:

পুলিশের সমন ছিলই। দিনভর প্রচারের পর রাতে হাজিরা দিলেন বাবুল সুপ্রিয়।

গোড়া থেকেই বাবুল বারবার বলছেন, হারার ভয়ে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ব্যতিব্যস্ত করতে চাইছে তৃণমূল। থানা-পুলিশ-আদালত দৌড় করিয়ে প্রচারের ময়দান থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে বলেও বিজেপি-র দাবি। মদ্যপান করে মন্দিরে ঢোকার অভিযোগের পরে এ বার মামলা হয়েছে অস্ত্র আইনে।

বৃহস্পতিবার কিন্তু মাঠ ছাড়লেন না বাবুল। সারা দিন ঠা-ঠা রোদ্দুরে ঘুরলেন। সকালে পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রায় নিহত পিসিসি-সিপিআই (এমএল) নেতা গণেশ পালের বাড়িতে গেলেন, পার্টি অফিসে গিয়ে তাঁর মূর্তিতে মালাও দিলেন। রাত ৮টা ৪০ নাগাদ সার্কেল ইনস্পেক্টর (রানিগঞ্জ) বামাপদ দাসের জামুড়িয়ার অফিসে যখন ঢুকছেন, চোখমুখ ক্লান্ত। দু’ঘণ্টা জেরার পরে বেরিয়ে বললেন, “হাসিমুখে বেরোচ্ছি যখন, মনে হচ্ছে পুলিশকে বোঝাতে পেরেছি যে তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং পরিকল্পিত। এটা আমার একটা অভিজ্ঞতা।”

তৃণমূলের সঙ্গে বচসার জেরে শাসক দলের তরফে মূল অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল ১২ এপ্রিল। তার ভিত্তিতে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয় সেই দিনই। এ দিন প্রথমে সেই এফআইআরের প্রতিলিপি না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হতে দেরি হয়। গোটাটাই ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়। মাঝে-মধ্যে গলার স্বরও চড়েছে। দরজার বাইরে থেকেই শোনা যায় বাবুল বলছেন, “এ বার আমায় ছেড়ে দিন। আমি খুব ক্লান্ত।” সিআই জানান, আরও প্রশ্ন বাকি আছে।

হাল ছেড়ে দিয়ে বাবুল বলেন, “তা হলে চা খাওয়ান। অভিযুক্ত হিসেবে না হোক, গায়ক হিসেবেই খাওয়ান।” সিআই বলেন, “গায়ক নয়, প্রতিবেশী হিসেবে খাওয়াব। আপনার বাড়ি উত্তরপাড়া আর আমার চুঁচুড়া।” চা আসে। খানিক পরেই ফের অধৈর্য হয়ে পড়েন বাবুল। বলেন, “এ বার তো আর প্রতিবেশীর মতো ব্যবহার করছেন না। বারবার একই প্রশ্ন করছেন। বুঝতেই চাইছেন না যে এটা মিথ্যে অভিযোগ!” রাতে আইনজীবী রাম ইকবাল সিংহকে নিয়ে বেরিয়ে এসে বিজেপি-র তারকা প্রার্থী জানান, “আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, এবং আমি কী অভিযোগ করেছি, বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে হল।”

সরকারি কাজে বাধা, বেআইনি জমায়েত, আমজনতার রাস্তা আটকানো, জাতীয় সড়কের ক্ষতি করা এই সব অভিযোগেও মামলা হয়েছিল বাবুলের বিরুদ্ধে। কমিশনের ভিডিওগ্রাফারের তোলা ফুটেজে অবশ্য অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।

রাতে জেরা থেকে বেরিয়ে বাবুল বলে গেলেন, “শিল্পী হিসেবে আমি ব্যথিত যে, এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হল। যখন ‘ইয়ে কেয়া হুয়া, ক্যায়সা হুয়া’ গাইব, দেখবেন আপনাদেরও খারাপ লাগবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

babul supriyo asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE