Advertisement
০৪ মে ২০২৪

হাসপাতালের সঙ্গে নজরে স্কুল, শিক্ষা-ব্যবসা রোখাও লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতার

মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চড়া ‘ডোনেশন’।বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচে লাগাম টানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার নজর ঘোরালেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ‘ডোনেশন’ এবং ফি-র দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চড়া ‘ডোনেশন’।

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচে লাগাম টানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার নজর ঘোরালেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ‘ডোনেশন’ এবং ফি-র দিকে। এ দিন বিধানসভায় স্বাস্থ্য বিল নিয়ে আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও ডোনেশন নেয়। বেশি চার্জ করে। এ ব্যাপারেও নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।’’ সিবিএসসি এবং আইসিএসই-র পরীক্ষা শেষ হলেই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলে এ দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ফি কাঠামো নিয়ে গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষের উদ্বেগ নতুন নয়। কলকাতায় এই ধরনের বহু স্কুল আছে, যারা বার্ষিক ফি বাবদ ছাত্র পিছু লক্ষাধিক টাকা আদায় করে। তা ছাড়া, বারো মাসে তেরো রকমের ‘প্রোজেক্ট-প্রোগ্রাম’ বাবদ টাকা নেওয়া তো রয়েছেই। ফলে প্রতিটি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই বেসরকারি স্কুলগুলির ফি কাঠামো নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যায় অভিভাবকদের মধ্যে। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ একেবারেই নির্ভুল বলেই অনেকের মত।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা আসলে গরিব-মধ্যবিত্তের নাড়ির গতি ধরে ফেলেছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপর লাগাম টানার চেষ্টায় মানুষ যে উচ্ছ্বসিত, তা বিলক্ষণ টের পেয়েছেন মমতা। যার সূত্রে তাঁকে সামনে পেয়ে ইদানীং অনেকেই বলেছেন, ‘দিদি, এ বার বেসরকারি স্কুলগুলোকে চেপে ধরুন!’ এমন সাড়া পেয়েই উৎসাহ বেড়েছে তৃণমূলনেত্রীর। বড় কথা হল, গরিব-মধ্যবিত্তের মন জয়ের মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দার দিকটিও রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘শোধরানোর সুযোগ দিচ্ছি খারাপদের, নয়তো আইন আইনের পথে চলবে’

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কিছুটা সময় নেব আরেকটা বিষয় নিয়ে ভাবার জন্য। আমি এখনও বলি আমাদের এখানে অনেক ভাল, বেসরকারি স্কুল রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ভাল। কিন্তু এরা এত বেশি চার্জ নেয়, ডিমান্ড করে, ডোনেশন নেয়!’’ মমতার কথায়, ‘‘যাঁরা দিতে পারেন, তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলার নেই। সেটা তাঁদের স্বাধীনতা। কে ভাত খাবেন, না মাছ খাবেন সেটা নিজের ব্যাপার। কিন্তু কোথাও তো একটা নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। তাদের কাজে হস্তক্ষেপ না করে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমি এক দিন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে বসব।’’

পরে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হয়, যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চড়া হারে টাকার বিনিময়ে ‘সিট’ বিক্রি করে, তাদের উপরেও এ বার সরকারের নজর থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটি পর্যবেক্ষণ হল, অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল ছাত্রছাত্রীদের বাংলা পড়ায় না। বাংলা পড়ানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উপর রাশ টানার ব্যাপারে সরকারের এক্তিয়ার নিয়ে সংশয়ে শিক্ষা দফতরের একাংশ। কারণ, এই স্কুলগুলি সিবিএসসি এবং‌ আইসিএসই বোর্ডের অধীনে। তাই রাজ্য সরকার তাদের উপর কোনও নিয়ম চাপাতে পারে কিনা, তার আইনি দিকটিও এখন খতিয়ে দেখছে শিক্ষা দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE