শিল্পের দাবিতে পদযাত্রা থেকে শুরু করে ডেঙ্গিতে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে মিছিল। একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছে না প্রথম সারির বাকি নেতাদের। তাঁদের বরং প্রশ্ন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজ্যে কংগ্রেসের কর্মসূচি কোথায়? এই ক্ষোভ থেকেই নোটবন্দির বর্ষপূর্তিতে আলাদা কর্মসূচি নিয়ে ফেলেছিল কংগ্রেসের পরিষদীয় দল। শেষ পর্যন্ত এআইসিসি-র নির্দেশে সে দিন ঐক্যবদ্ধ মুখ দেখাতে হচ্ছে রাজ্য কংগ্রেসকে!
সাংগঠনিক নির্বাচন-পর্ব হয়ে গেলেও এখনও প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ঘোষণা করেনি হাইকম্যান্ড। প্রদেশ সভাপতি পদেও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি। ভেঙে পড়া সংগঠন নিয়েও পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির সময়ে নানা কর্মসূচিতে যে ভাবে গোষ্ঠী বিভাজনের প্রভাব পড়ছে, তাতে হতাশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের একাংশ। নোটবন্দির প্রতিবাদে শেষমেশ অভিন্ন কর্মসূচি হতে চলায় তাঁরা আপাতত হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন!
আগামী ৮ নভেম্বর নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দি ঘোষণার প্রথম বর্ষপূর্তি। সে দিন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে ধর্না-বিক্ষোভ সভা করতে চান বলে লালবাজারে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। ঠিক হয়েছিল, পরিষদীয় দলের তরফে ওই ধর্না থেকেই নোটবন্দিতে মানুষের হয়রানির প্রতিবাদ জানানো হবে। পরিষদীয় দল যখন এই প্রস্তুতি চালাচ্ছে, তার মধ্যেই বিবাদী বাগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আ়ঞ্চলিক দফতরের সামনে প্রতিবাদ সভার পরিকল্পনা হয় প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে। কোন কর্মসূচি ছেড়ে কোনটায় যাবেন, দ্বিধায় পড়েছিলেন প্রধান বিরোধী দলের বিধায়কদের কেউ কেউ! তার পরেই এআইসিসি-র তরফে নির্দেশিকা এসেছে, সারা দেশে সাযুজ্য রেখে সব রাজ্যেই কংগ্রেস নেতৃত্বকে নোটবন্দির প্রতিবাদে নামতে হবে। ওই দিন রাত ৮টায় (মোদীর সেই ঘোষণার সময় মনে রেখে) করতে হবে মোমবাতি মিছিল।
সেইমতো ঠিক হয়েছে বুধবার আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ সভা এবং পরে মোমবাতি মিছিল হবে। তার পরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে পরিষদীয় দলের ধর্না-বিক্ষোভ। প্রসঙ্গত, ওই দিন বিরোধী বামেরাও মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পর্যন্ত মিছিল করবে। আর তৃণমূলের প্রতিবাদ হবে ব্লকে ব্লকে।
মৌলালি যুবকেন্দ্রে কংগ্রেসের সদ্য হয়ে যাওয়া প্রস্তুতি সভাতেও মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী বা অপূর্ব সরকারের মতো বিধায়ককে দেখা যায়নি। রাজ্য নেতাদের একাংশের অভিযোগ, প্রদেশ কংগ্রেসের কর্মসূচি ঠিকমতো তাঁদের জানানোই হয় না! যদিও প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘আমরা সকলেই আমন্ত্রণ জানাই। কে আসবেন, কে আসবেন না, তাঁদের ব্যাপার!’’ আর নোটবন্দির পরিষদীয় প্রতিবাদ বাতিল করার পরে বিরোধী দলনেতা বলছেন, ‘‘বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই উদ্দেশ্য ছিল। সেটা যখন হচ্ছে, আর আলাদা কর্মসূচির দরকার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy