শিল্প পরিকাঠামো উন্নত করতে হলে আশপাশের জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল করতে হবে, প্রশাসনের কাছে আর্জি জানালেন শিল্পপতিরা। সম্প্রতি বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকে তাঁরা এ ব্যাপারে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের আশ্বাস, সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
আসানসোলে শিল্পপতিদের নিয়ে কোর কমিটির ওই বৈঠকে ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তা, নানা বণিক সংগঠনের সদস্যেরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের পরিকাঠামোগত সমস্যা তুলে ধরা ছা়ড়াও একগুচ্ছ শিল্পোন্নয়নমুখী প্রস্তাবও দেন শিল্পপতিরা। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর কার্যকরি সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান দাবি করেন, আসানসোলের অর্থনীতি ও শিল্প-বাণিজ্যের উন্নতি করতে হলে পার্শ্ববর্তী দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। তাঁর প্রস্তাব, বার্নপুরকে মাঝে রেখে দামোদরের উপরে একটি সেতু নির্মাণ করে দিলেই আসানসোলের সঙ্গে ওই দুই জেলার যোগাযোগের মাধ্যম সহজ হয়ে যাবে। তার ফলে তিন এলাকারই অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রস্তাবটি ভাল। এ নিয়ে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।’’ ২০০৮-এ দামোদরের উপরে এই রকম একটি সেতু নির্মাণে উদ্যোগী হয় ইস্পাত মন্ত্রক। তৎকালীন ইস্পাতমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও করেছিলেন। কিন্তু তার পরে কাজ এগোয়নি।
জামুড়িয়ার বণিকসভার তরফে অজয় খেতান জানান, শেখপুর থেকে দরবারডাঙা পর্যন্ত রাস্তাটি ৫০ ফুট চওড়া করা হলে লাগোয়া জমিতে শিল্প পার্ক করা সম্ভব হবে। তাঁর দাবি, জামুড়িয়ার অনেক চাষের জমিতেই ক্ষুদ্র-মাঝারি কল-কারখানা তৈরি হয়েছে। কিন্তু জমিগুলির চরিত্র বদল করা হয়নি। কারখানার মালিকেরা এখনও সেই জমির খাজনা বাবদ একর পিছু কুড়ি টাকা করে দিচ্ছেন। কিন্তু জমির চরিত্র বদল করা হলে সরকারের ঘরে একর পিছু সাড়ে আট হাজার টাকা করে খাজনা জমা পড়বে। শিল্পপতিদের দাবি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে আবেদন করেও ফল হয়নি। অভিযোগ, জমির চরিত্র বদল না হওয়ায় তাঁরা প্রয়োজন মতো ব্যাঙ্ক ঋণ পাচ্ছেন না। জেলাশাসক বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
নতুন উদ্যোগের জন্য পর্যাপ্ত জমি আছে কি না, শিল্পপতিদের এই প্রশ্নে জেলাশাসক আশ্বাস দেন, শিল্পপতিরা প্রকল্প নিয়ে এলে জমি পাবেন। আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত বৈঠকে জানান, সরকারের তরফে জমির বন্দোবস্ত করা হলে আসানসোলে সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টায় শিল্প পার্ক করা যেতে পারে। তাঁর অনুরোধ, জাতীয় সড়কের পাশে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড তৈরির ব্যবস্থা করুক জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘শিল্পপতিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। সমস্ত প্রস্তাবই আমরা বিবেচনার মধ্যে রেখেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy