Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চুরি রুখতে ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল

আগামী তিন মাসের মধ্যে পাহাড়ের সমস্ত ‘পেপার’ রেশন কার্ড ডিজিটাল কার্ডে পরিণত করবার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্য সচিব। প্রাথমিক ভাবে অরাজি হলেও রাজ্যের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন জিটিএ-র অস্থায়ী প্রধান বিনয় তামাঙ্গ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

সর্বশেষ জনগণনার হিসেব বলছে দার্জিলিংয়ের জনসংখ্যা ৮ লক্ষ ১৯ হাজার। কিন্তু সেখানকার রেশন কার্ডের সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ। ফলে জনসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ মানুষকে ‘খাদ্য’ সরবরাহ করতে হয় রাজ্য সরকারকে। যাতে স্পষ্ট, আসলে ভূতুড়ে রেশন কার্ডের আড়ালে পাহাড়ে চলছে দেদার খাদ্য-দুর্নীতি। যার মোকাবিলায় শুক্রবার দার্জিলিংয়ে গিয়ে এ নিয়ে বৈঠক করলেন খাদ্য সচিব মনোজ অগ্রবাল।

আগামী তিন মাসের মধ্যে পাহাড়ের সমস্ত ‘পেপার’ রেশন কার্ড ডিজিটাল কার্ডে পরিণত করবার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্য সচিব। প্রাথমিক ভাবে অরাজি হলেও রাজ্যের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন জিটিএ-র অস্থায়ী প্রধান বিনয় তামাঙ্গ।

খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্যত্র ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি শুরু হলেও পাহাড়ে তা করা যায়নি। কারণ, মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গ ভূতুড়ে কার্ড বাতিল হয়ে যাক তা চাননি। ফলে কাজ শুরু হলেও ডিজিটাল কার্ড তৈরির কাজ থমকে গিয়েছিল। দফতরের এক কর্তা জানান, ২০১১ সালের জনসংখ্যার চেয়ে প্রায় ১.৮ গুণ বেশি মানুষকে প্রতি সপ্তাহে চাল-আটা দিতে হচ্ছিল। যদি ভুয়ো কার্ড বাতিল করা যেত, তা হলে পাহাড়ের রেশন সরবরাহ থেকেই কয়েকশো কোটি টাকা সাশ্রয় হত বলে জানিয়েছেন দফতরের কর্তারা। কিন্তু জনসংখ্যার অনুপাতে প্রাপ্যের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য তুলে তা খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগে এর আগে কয়েক জন রেশন ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ভুয়ো কার্ড বাতিল করতে পারেনি সরকার। খাদ্য দফতর মনে করে, বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে রেশন ডিস্ট্রিবিউটরদের যোগসাজশের ফলেই রাজ্যের অন্যত্র বাতিল হলেও পাহাড়ে কার্ড বাতিল করা সম্ভব হয়নি। নতুন অস্থায়ী বোর্ডও প্রাথমিকভাবে স্থিতাবস্থা বদলানোর পক্ষে ছিল না। কিন্তু চুরি আটকাতে নবান্ন কড়া মনোভাব নেওয়ার ফলেই ডিজিটাল কার্ডে এখন আর আপত্তি করছে না জিটিএ। তবে খাদ্য দফতরও জনসংখ্যার অনুপাতেই ২ টাকা কেজি চাল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তার পরেও দুর্নীতি ঠেকানো যাবে বলে মনে করছে না জেলা প্রশাসন। গত নভেম্বরে জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত রঙ্গিতের টাকভর চা বাগান, লিম্বু বস্তি, উত্তর টাকভর চা বাগান, সিঙ্গলা বাজারের বিভিন্ন রেশন দোকান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে যে ভাবে পোকা ধরা, পচা চাল বিলি হাতে নাতে ধরেছিলেন তাও সরকারকে রিপোর্টে জানিয়েছিলেন তিনি। জেলাশাসকের বক্তব্য, ‘‘নিম্নমানের চাল রেশনের দেওয়ার কথা সরকার জানে। ভুয়ো রেশন কার্ড বন্ধ করা গেলেই সমস্যা অনেকটা মিটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Card Fake Stealing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE