Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Migrant Labour Death

ভিন্‌ রাজ্যে মৃত্যু সাগরের শ্রমিকের

সঞ্জয়ের স্ত্রী, দুই মেয়ে। তিনিই ছিলেন পরিবারের প্রধান রোজগেরে। আর্থিক অনটন মেটাতে বহু বছর আগে থেকেই ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যেতে হত।

শোকে ভেঙে পড়েছে সঞ্জয়ের পরিবার।

শোকে ভেঙে পড়েছে সঞ্জয়ের পরিবার। ছবি: সমরেশ মণ্ডল 

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গাসাগর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৯
Share: Save:

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে এখনও আটকে এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা। এরই মধ্যে ভিন্‌ রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল বাংলার এক শ্রমিকের। মৃতের নাম সঞ্জয়কুমার মাইতি (৩২)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের কোম্পানিছাড় গ্রামের নতুন বাজার এলাকায়।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার অসমের করিমগঞ্জ এলাকায় কাজে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। সেখানে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে ঠিকা শ্রমিকের হিসেবে পাইপ লাইনের কাজ করতেন। সঙ্গে সাগরের আরও চার যুবক ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়ার পরে রাস্তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে ঘুমিয়েছিলেন সকলে। স্থানীয়দের দাবি, একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁবুতে ধাক্কা মারে। আহত তিন জনকে অন্য শ্রমিকেরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সঞ্জয়কে বাঁচানো যায়নি। শনিবার রাতে দেহ ফিরেছে সাগরের বাড়িতে।

সঞ্জয়ের স্ত্রী, দুই মেয়ে। তিনিই ছিলেন পরিবারের প্রধান রোজগেরে। আর্থিক অনটন মেটাতে বহু বছর আগে থেকেই ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যেতে হত। কিছু দিন আগে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। ফের ভিন্‌ রাজ্যে কাজে যান। স্ত্রী পার্বতী বলেন, ‘‘সংসারটা ভেসে গেল। এখন কী ভাবে সব সামলাব, জানি না!’’

তিন ভাইয়ের মধ্যে মেজো সঞ্জয়। সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। সদ্য সন্তানহারা বাবা সুভাষের আক্ষেপ, ‘‘ঠিকাদার যদি ওদের রাস্তার পাশে না রেখে অন্যত্র নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করত, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না। ভিন্‌ রাজ্যে কাজে গিয়ে নিরাপত্তা নেই, তবু পেটের টানে যেতে হয়।’’

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সন্দীপ পাত্র এই প্রসঙ্গে একশো দিনের কাজের কথা টেনে এনে প্রকারান্তরে দায় ঠেলেছেন কেন্দ্রের দিকে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র একশো দিনের কাজের টাকা দীর্ঘ দিন বন্ধ করে রেখেছে। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের বহু মানুষ ভিন্‌ রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছেন।’’

স্থানীয় বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস পাল্টা বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের টাকার হিসাব দিতে না পারায়, আজকে গ্রাম বাংলার যুবকেরা ভুগছেন বেকারত্বের জ্বালায়। এর জন্য রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী দায়ী।’’

সাগরের বিডিও কানাইয়াকুমার রায় বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা আগে খতিয়ে দেখব, ওই শ্রমিকের নাম শ্রম দফতরে নথিভুক্ত আছে কি না। যদি থাকে, তা হলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই পরিবারকে সাহায্য করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sagar Island
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE