Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Kolkata Municipal Corporation

সবুজায়ন বাড়াতে তৎপর নয় পুরসভা, উঠছে অভিযোগ 

স্বল্প জায়গায় বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রেও গাছ লাগানো নিয়ে বন দফতরের আইনে সংস্থান আছে। কিন্তু, সব আইনই খাতায়কলমে থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

An image of Kolkata Municipal Corporation

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৮:৫০
Share: Save:

সবুজায়নে জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে কলকাতা পুরসভা এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে, এমনই অভিযোগ ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। অথচ, বনদফতরের আধিকারিকেরা দাবি করছেন, শহর কলকাতায় বহুতলের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে মোট নির্মাণস্থলের নির্দিষ্ট অংশে গাছ লাগানো বাধ্যতামূলক। বন দফতরের আইন অনুযায়ী, ২০ হাজার বর্গমিটার জায়গা বা তার বেশি এলাকা জুড়ে কোনও নির্মাণ হলে মোট আয়তনের কুড়ি শতাংশ এলাকায় গাছলাগাতেই হবে। স্বল্প জায়গায় বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রেও গাছ লাগানো নিয়ে বন দফতরের আইনে সংস্থান আছে। কিন্তু, সব আইনই খাতায়কলমে থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, শহরে বহুতলের সংখ্যা বাড়ছে। সেই তুলনায় গাছ কমছে। তার মধ্যে অল্প ঝড়়বৃষ্টিতেই গাছ ভেঙেপড়ে। বন দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কলকাতায় বাড়ি তৈরির অনুমোদনের সময়ে আইন মেনে যাতে গাছ লাগানো হয়, সে বিষয়ে পুরসভার বিল্ডিং দফতরকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। শহরে গাছ লাগাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না করলে দূষণ মাত্রাতিরিক্ত বাড়বে।’’

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘শহরে গাছ বাঁচানো কার্যত চ্যালেঞ্জের। বাড়ি তৈরির সময়ে নির্দিষ্ট জায়গা জুড়ে গাছ লাগানোর কথা আইনে থাকলেও বাস্তবে মানা হয় না। আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনও চুপ!’’

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র মনে করেন, ‘‘শহর কলকাতায় গাছ লাগানো ও বাঁচানো কলকাতা পুর প্রশাসনের দায়িত্বে। শহরে সবুজায়নে জোর দিতে পুরসভার আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন।’’

রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘শহরে গাছের দেখাশোনা করে কলকাতা পুরসভা। গাছ নিয়ে পুরসভা অভিযোগ করলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিই।’’

অন্য দিকে, প্রতিবেশী নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) এক আধিকারিকজানাচ্ছেন, সেখানকার ছবিটা একটু আলাদা। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িই হোক বা ফ্ল্যাট, নিউ টাউনে নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ৮০ বর্গমিটারেএকটি করে গাছ লাগানো বাধ্যতামূলক। এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিল্ডিং বিভাগের কাছে হলফনামা জমা করলে তবেই মেলে কাজের ছাড়পত্র। বছর তিনেক আগেই এমন পদক্ষেপে উদ্যোগী হয়েছে এনকেডিএ।’’

যদিও সবুজায়ন নিয়ে অভিযোগ মানতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, ‘‘বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে গাছ লাগানো সমস্ত নিয়মকানুন মেনেই হয়। তা না হলে নির্মাতারা বাড়ি তৈরির অনুমতি পেতেন না।’’ উদ্যান বিভাগের একশীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘আগামী দু’বছরে শহরে দু’লক্ষ চারা রোপণ করা হবে। তার দরপত্র সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চলছে।’’

কিন্তু, সেই সবচারার যথাযথ দেখাশোনা হবে কি? বাঁচল কতগুলি চারা, সেই হিসাবকি থাকবে পুর নথিতে? সেইপ্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি পুর আধিকারিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkata municipal corporation Environmental awareness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE