Advertisement
০১ মে ২০২৪
Protest

পুরসভা বেআইনি ঘোষণা করেছে, হাই কোর্ট ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে, তবু অক্ষত বিধাননগরের ক্লাব

এ দিন দুপুরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবটি ভাঙতে গেলে সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। কেরোসিন ছুড়ে দেওয়া হয় পুলিশ ও পুর আধিকারিকদের গায়ে।

An image of a club

বাধা: সল্টলেকের নয়াপাট্টিতে একটি ক্লাবের বেআইনি বলে ঘোষিত হওয়া ভবন প্রশাসনের তরফে ভাঙতে যাওয়া হলে অবরোধ করেন ক্লাবের কিছু সমর্থক। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:০৩
Share: Save:

পুরসভা ক্লাবটিকে বেআইনি ঘোষণা করেছে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে পুরসভার সেই ঘোষণাকে মান্যতা দিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট ক্লাবটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে। যা বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টও। অথচ ক্লাবের সমর্থকদের বাধায় দু’বার সেই নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হল বিধাননগর পুরসভা।

সল্টলেকের নয়াপট্টি অঞ্চলে ৯ জানুয়ারি ক্লাবটি ভাঙতে গিয়ে একই কারণে ফিরে যায় পুরসভা ও পুলিশ। শুক্রবারেও তার পুনরাবৃত্তি হল। এ দিন দুপুরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবটি ভাঙতে গেলে সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়।কেরোসিন ছুড়ে দেওয়া হয় পুলিশ ও পুর আধিকারিকদের গায়ে। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও শোনা যায় বিক্ষোভকারীদের। শেষে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় তাঁদের। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশ তাঁরা পাননি।

২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টি অঞ্চলে রয়েছে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে তেতলা ক্লাবটি। সেটির সভাপতি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্কর। একটি মামলাকে ঘিরে আগেই ক্লাবটি বেআইনি ঘোষণা করে সেটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল বিধাননগর পুরসভা। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করলেও জয়দেব হেরে যান। বিধাননগর পুরসভা হাই কোর্টে জানিয়েছিল, ক্লাবটির বৈধ নকশা নেই। তিনি যে ক্লাবের সভাপতি, তা-ও আদালতকে মামলা দাখিলের নথিতে উল্লেখ করেছিলেন জয়দেব। হাই কোর্ট জয়দেবের আবেদন খারিজ করে ক্লাব ভেঙে দিতে বলে। সেই রায় বহাল থাকে ডিভিশন বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টে।

শুক্রবারের অভিযানের আগাম খবর পেয়ে সকাল থেকেই ক্লাবের সামনে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। পুরসভার আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্লাবের কাছাকাছি যেতেই, তাঁদের পথ আটকানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ হস্তক্ষেপ করতেই তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। এমনকি প্রশাসনের পথ আটকাতে মহিলাদের এগিয়ে দেওয়া হয়। শুরু হয় বিক্ষোভ প্রদর্শন। প্রায় এক ঘণ্টার কাছাকাছি এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পরে ফিরে যায় পুলিশ ও পুরসভা।

বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। একই কথা জানান বিধাননগর পুরসভার আধিকারিকেরাও। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখনও অবধি যা পরিস্থিতি, তাতে আদালতের রায়কে মান্যতা দিতে হবেই। আগামী দিনে আরও বড় বাহিনী নিয়ে অভিযান চলবে।’’ এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী।

যে পরিবারটি পুলিশ ও আদালতের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল, ক্লাবটি তাদের জমি দখল করে গড়ে উঠেছে, সেই পরিবারের সদস্য বাপ্পা প্রামাণিকের দাবি, ‘‘স্থানীয় মানুষ কোনও বাধা দেননি। প্রশাসনের কাজে যাঁরা বাধা দিয়েছেন তাঁরা বহিরাগত। জয়দেব এই এলাকার পুরপ্রতিনিধি নন। তিনি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি। সেখান থেকে লোক জোগাড় করে এনে কোর্টের নির্দেশ পালনে প্রশাসনকে বাধা দিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE