Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Upendranath Brahmachari

কালাজ্বরের ওষুধের আবিষ্কর্তা হয়েও উপেন্দ্রনাথ কেন ‘বিস্মৃত’, উঠছে প্রশ্ন

উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর হাত ধরেই কালাজ্বরের প্রকোপ রুখতে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় এল ‘ইউরিয়া স্টিবামাইন’— যার প্রয়োগে কালাজ্বরে মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়ায় ১-২ শতাংশে।

An Image Of The Statue

এন আর এসে বসেছে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:০৭
Share: Save:

তৎকালীন ক্যাম্পবেল হাসপাতালের (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল) বিদ্যুৎ, গ্যাস, জলের সংযোগহীন একচিলতে একটি ঘর। সেখানেই কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে মারণ ব্যাধির ওষুধ আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ এক বাঙালি চিকিৎসক। সেই উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর হাত ধরেই কালাজ্বরের প্রকোপ রুখতে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় এল ‘ইউরিয়া স্টিবামাইন’— যার প্রয়োগে কালাজ্বরে মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়ায় ১-২ শতাংশে।

কিন্তু কিংবদন্তী ওই গবেষককে মনে রেখেছেন ক’জন? বুধবার চিকিৎসক উপেন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে এন আর এস হাসপাতালে ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল’ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আয়োজিত অনুষ্ঠানে উঠে এল সেই প্রশ্নই। তাঁর নাতনিদের গলাতেও শোনা গেল অভিমানের সুর। ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল’-এর সম্পাদক শুভব্রত রায়চৌধুরী বললেন, ‘‘মানুষ ভুলতে বসেছে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীকে। বিশ্বের দরবারেও ওঁর আবিষ্কার যুগান্তকারী। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের।’’ এ দিন অনুষ্ঠানে ছিলেন অধ্যাপক সৈকত মৈত্র-সহ অন্যান্য বিজ্ঞানী, গবেষক ও চিকিৎসকেরা।

১৯২৯ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের জন্য ভারত থেকে এক জনের নাম সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল সুইডিশ অ্যাকাডেমির দুই সদস্য হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান জ্যাকব্‌স ও গোরান লিলজেস্ট্রেন্ডকে। তাঁরা উপেন্দ্রনাথের নাম পাঠান। কিন্তু বাছাই তালিকায় প্রথমে নাম থাকলেও নোবেল পাননি উপেন্দ্রনাথ। ১৯৪২ সালে ফের তাঁর নাম পাঠানো হলেও নোবেলপ্রাপ্তি হয়নি। শুভব্রত জানান, তাঁর নামে একটি স্ট্যাম্পও কেউ প্রকাশ করেননি।

এন আর এসের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বহুতলটি রয়েছে উপেন্দ্রনাথের নামে। এ দিন কেন্দ্রীয় অপারেশন থিয়েটার ভবনের বারান্দায় তাঁর মূর্তি উন্মোচন করা হয়। কারণ ওই ভবনেরই একটি ঘরে আবিষ্কার হয়েছিল কালাজ্বরের ওষুধ। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘মানুষ যাতে আরও বেশি করে ওঁর সম্পর্কে জানতে পারেন, তারই প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’’ দাদুর স্মৃতি বাঁচাতে সচেষ্ট দুই নাতনি চিত্রিতা চট্টোপাধ্যায় ও কণা চট্টোপাধ্যায়। চিত্রিতা বলেন, ‘‘কেউ সে ভাবে ওঁকে মনে রাখলেন না। দাদুর বাড়িটাও ধরে রাখতে পারিনি। থাকার মধ্যে রয়েছে ওঁর নামে একটা রাস্তা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE