—প্রতীকী ছবি।
ছোট থেকেই বুক ধড়ফড় করত। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছিল শ্বাস নেওয়ার সমস্যা। অনেক জায়গা ঘুরে শেষে পিজিতে আসেন বছর পঁচিশের যুবক। পরীক্ষায় দেখা যায়, জন্মগত ভাবে হৃৎপিণ্ডের একটি জটিল সমস্যায় আক্রান্ত তিনি। হৃদ্যন্ত্র পুরো না কেটে ক্যাথিটারের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করে ওই রোগীকে সুস্থ করলেন পিজির চিকিৎসকেরা।
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা সঞ্জয় নস্কর সম্প্রতি এসএসকেএমের কার্ডিয়োলজি বিভাগে এসেছিলেন। সেখানে পরীক্ষার সময়ে তাঁর হৃৎপিণ্ডে কিছু অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল বলে জানান হৃদ্রোগ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল। এর পরে ইকো-কার্ডিয়োগ্রাফি, সিটি স্ক্যান এবং অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফিতে দেখা যায়, ওই যুবক ‘অ্যায়োর্টো-ভেন্ট্রিকিউলার টানেল’ রোগে আক্রান্ত। অর্থাৎ, তাঁর মহাধমনী থেকে একটি টানেল বা সুড়ঙ্গপথ তৈরি হয়ে জুড়ে রয়েছে ডান নিলয়ের সঙ্গে। সরোজ বলেন, ‘‘সমস্যাটি অত্যন্ত বিরল এবং জন্মগত। তবে জন্মগত যত হৃদ্যন্ত্রের ত্রুটি মেলে, তার মধ্যে এমন সমস্যা দেখা যায় ০.১ শতাংশেরও কম রোগীর ক্ষেত্রে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মহাধমনী থেকে শরীরে রক্ত সঞ্চালিত হওয়ার পাশাপাশি তা ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে হৃৎপিণ্ডেও ঢুকে যাচ্ছিল। সেই কারণেই অস্বাভাবিক শব্দ শোনা যাচ্ছিল এবং অন্য সমস্যাগুলি দেখা দিচ্ছিল। চিকিৎসকেরা আরও জানাচ্ছেন, সাধারণত হৃৎপিণ্ডের ধমনীগুলি মহাধমনী থেকে বেরোয়। কিন্তু, সঞ্জয়ের ক্ষেত্রে ধমনীগুলি বেরিয়েছে ওই টানেল থেকে। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো সরোজ মণ্ডল-সহ শুভাংশু পাল, সায়ন্তন পণ্ডা, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়দের দল অস্ত্রোপচার করেন।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কুঁচকির কাছে ছোট ফুটো করে ক্যাথিটার প্রবেশ করিয়ে তার মাধ্যমে ওই যুবকের হৃৎপিণ্ডের ধমনীগুলি বিশেষ ভাবে সুরক্ষিত করার পরে দু’টি ডিভাইসের মাধ্যমে টানেলটি বন্ধ করা হয়েছে। যাতে তার মধ্যে দিয়ে আর রক্ত প্রবাহিত হতে না পারে। সরোজের দাবি, ‘‘এমন সমস্যায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বে ৩০-৩৩টির মতো অস্ত্রোপচার নথিভুক্ত আছে। যার সিংহভাগই ওপেন হার্ট সার্জারি। সেটাই আমরা এ বার ক্যাথিটারের মাধ্যমে করলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy