Advertisement
০২ মে ২০২৪
Plastic Usage

দায় শেষ গড়িয়াহাটে, শহরের বহু অংশে ফুটপাত জুড়ে এখনও প্লাস্টিক

তৃণমূল পুর বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে শহরের সৌন্দর্যায়নের উপরে যথেষ্ট জোর দিয়েছিল। কিন্তু, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, রাস্তার দু’দিকে প্লাস্টিকের নোংরা ও বিপজ্জনক উপস্থিতি।

An image of Plastic

উদাসীন: ফুটপাতে সার দিয়ে প্লাস্টিকের ছাউনি। বৃহস্পতিবার, শ্যামবাজারের কাছে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:৫৯
Share: Save:

শুধু গড়িয়াহাটেই কি দায় শেষ!

কলকাতা শহরের ফুটপাতে প্লাস্টিকে মোড়া জতুগৃহের ছবিটা বদলাল না এত দিনেও। বছরকয়েক আগে গড়িয়াহাটের ফুটপাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শহরের ফুটপাতগুলিতে যে সমস্ত হকার ব্যবসা করেন, তাঁরা আর প্লাস্টিকের ছাউনি ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও গড়িয়াহাট বাদে অধিকাংশ জায়গাতেই সেই পরিস্থিতির কোনও বদল ঘটেনি।

তৃণমূল পুর বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে শহরের সৌন্দর্যায়নের উপরে যথেষ্ট জোর দিয়েছিল। কিন্তু, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, রাস্তার দু’দিকে প্লাস্টিকের নোংরা ও বিপজ্জনক উপস্থিতি। কালীঘাট মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের দু’পাশে ফুটপাতের রেলিং বরাবর নোংরা প্লাস্টিকে ঢাকা। সেখানে বসে থাকা হকারেরা ওই প্লাস্টিক ছাউনি হিসাবে ব্যবহার করছেন। কয়েক বছর আগের গড়িয়াহাটের স্মৃতি উস্কে দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছিলেন, ‘‘কালীঘাট মন্দিরে নিত্যদিন প্রচুর মানুষ যাওয়া-আসা করেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড দিয়েই পুণ্যার্থীরা মন্দিরের পথে হেঁটে যান। ফুটপাতে প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে হকারদের স্টলগুলি যে ভাবে জতুগৃহের চেহারা নিয়েছে, তাতে আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আগুন লাগলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।’’

ফুটপাত থেকে প্লাস্টিক সরানোর কাজে পুর প্রশাসন যে কার্যত ব্যর্থ, তা পরিষ্কার মেনেই নিচ্ছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন)
দেবাশিস কুমার। বর্তমান পুর বোর্ডের এক বছর পূর্তিতে মেয়র স্বীকার করেছিলেন, ‘‘অনেক কাজ করতে পেরেছি। কিন্তু ফুটপাত থেকে প্লাস্টিক সরানোর কাজটা অধরাই রয়ে গেল।’’ সেই কাজ আদৌ কোনও দিন হবে কি না, বা হলেও কবে, তার নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমাও বেঁধে দিতে পারছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার মেয়র পারিষদ (হকার পুনর্বাসন) বলেন, ‘‘গড়িয়াহাট ও লেক মার্কেটের ফুটপাত থেকে প্লাস্টিক সরানোর কাজটা করতে পেরেছি। বাকি কাজও হবে।’’ কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও ফুটপাত থেকে প্লাস্টিক সরানোর কাজটা এখনও শেষ করা গেল না কেন? মেয়র পারিষদের জবাব, ‘‘আপনারা লিখুন। লিখলেই কাজ হবে।’’

কলকাতার মোট ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রায় চার লক্ষ হকার রয়েছেন। অভিযোগ, তাঁদের দাপটে সাধারণ মানুষ ফুটপাতে হাঁটাচলাই করতে পারেন না। গোদের উপরে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে হকারদের মাথায় থাকা প্লাস্টিকের ছাউনি। এই হকারদের নিয়ন্ত্রণ করে ‘হকার সংগ্রাম কমিটি’। কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষের সাফাই, ‘‘আমরা গড়িয়াহাটে হকারদের জন্য প্লাস্টিকের বদলে টিনের ছাউনি বানিয়েছি। শহরের বাকি অংশেও ধীরে ধীরে ওই কাজ হবে।’’ কিন্তু কবে সেই কাজ হবে, তা বলতে পারেননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

plastics footpaths sidewalks Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE