Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Single Use Plastic

বেলাগাম ব্যবহার চলছেই, বেআইনি প্লাস্টিক কারখানাকে জরিমানা

গত বছরের পয়লা জুলাই থেকে দেশ জুড়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক। তার পরেও বিভিন্ন জায়গায় তার ব্যবহার হয়েই চলেছে।

An image of plastic bags

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৬
Share: Save:

কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক বেআইনি প্লাস্টিক কারখানার (এককালীন ব্যবহারযোগ্য
প্লাস্টিক) উপরে জরিমানা ধার্যের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কারণ রাজ্যে যে অবাধে এখনও এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি হচ্ছে, সে ব্যাপারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেই মতো তারা রাজ্যকে পদক্ষেপ করতে বলে। তার পরেই এ ব্যাপারে সক্রিয় হয় রাজ্য।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, বেআইনি প্লাস্টিক কারখানা চিহ্নিত করে অভিযান
চালানো হয়েছে। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিক, কাঁচামাল সরবরাহকারী-সহ সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পর্ষদের কর্তারা। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক প্রস্তুতের কাঁচামাল সরবরাহ করা যাবে না। তার পরেও যারা নিয়মভঙ্গ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রের খবর। পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘বেআইনি কারখানা বন্ধের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের জরিমানাও করা হয়েছে।’’

মূলত পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও দিল্লিতে এখনও নিষিদ্ধ প্লাস্টিক তৈরি হচ্ছে এবং তা অন্যত্র
সরবরাহ করা হচ্ছে— নিষিদ্ধ হওয়া এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎস সন্ধানে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এমনকি, বেআইনি প্লাস্টিক প্রস্তুতকারকের সংখ্যার নিরিখে এ রাজ্য বিহার ও দিল্লিকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছিল তাদের রিপোর্ট। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযানে চিহ্নিত হওয়া বেআইনি প্লাস্টিক প্রস্তুতকারী অথবা সরবরাহকারী ৭৭টি সংস্থার মধ্যে ৬০টিই পশ্চিমবঙ্গের! বিহারে ওই সংখ্যা ১৫টি এবং দিল্লিতে ২টি। পরিস্থিতির গুরুত্ব পর্যালোচনা করে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি ব্যবসার ছাড়পত্র বাতিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বছরের পয়লা জুলাই থেকে দেশ জুড়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক। তার পরেও বিভিন্ন জায়গায় তার ব্যবহার হয়েই চলেছে। সে কারণে চলতি বছরের পয়লা মার্চ দেশের সমস্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন
দফতরকে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেখানে মার্চ থেকে অগস্ট— এই ছ’মাসের প্রতি মাসে চার দিন করে বেআইনি প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেই মতোই বেআইনি প্লাস্টিক উৎপাদনকারী কারখানার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তারা জানাচ্ছে, ১২০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের তৈরি প্লাস্টিক ব্যাগের উৎপাদন, মজুত, সরবরাহ, বিক্রি ও আমদানি বন্ধের জন্য ধারাবাহিক জনসচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। তা ছাড়া প্লাস্টিকের স্টিক লাগানো ‘ইয়ার বাডস’, বেলুন, লজেন্স, আইসক্রিমে প্লাস্টিক স্টিকের ব্যবহার বন্ধ, প্লাস্টিকের পতাকা, সাজানোর জন্য থার্মোকল, প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাস, কাঁটা চামচ, ছুরি, স্ট্র, ট্রে-সহ একাধিক এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উপকরণ যে পুরোপুরি নিষিদ্ধ, সেটা জানানোর জন্য জন-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘তবে নাগরিকেরা যত দিন ন‌া প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে সচেতন হবেন, তত দিন শুধু অভিযান চালিয়ে বা জরিমানা করে এর ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE