দেড় বছর ধরে তিনি ‘বিচারাধীন বন্দি’। কিন্তু জেলের মুখ দেখলেন না সারদা কাণ্ডে ধৃত মনোরঞ্জনা সিংহ। পুরো সময়টাই কাটিয়ে দিলেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি। আর এর মাঝেই সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সারদার একটি মামলায় জামিন পেয়ে গেলেন মনোরঞ্জনা। এই জামিন পাওয়ার অর্থ, তিনি কালই অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এমন নয়। কারণ, আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় তিনি জামিন পেলেও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর করা মামলায় এখনও জামিন পাননি তিনি। ফলে, এখনও খাতায় কলমে তিনি জেল হেফাজতেই থাকবেন। যদিও জেলের জায়গায় হাসপাতালেই থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, মনোরঞ্জনা উত্তর-পূর্ব ভারতে ফ্রন্টিয়ার নিউজ চ্যানেল নামে একটি সংবাদ চ্যানেলের নিউজ এডিটর ছিলেন। ২০১২ সালে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে ওই চ্যানেলের ৪২ কোটি টাকা চুক্তি হয়েছিল। ওই সময় সারদার তরফে প্রাথমিক ভাবে ২২ কোটি টাকা মনোরঞ্জনাকে দেওয়া হয়েছিল। সুদীপ্তর অভিযোগ, মনোরঞ্জনা টাকা নিলেও সম্প্রচারের কোনও শর্তই পুরণ করেননি। চুক্তির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সুদীপ্ত-র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগ পাওয়ার পরে বেশ কয়েকবার জেরা শেষে ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর মনোরঞ্জনাকে কলকাতার সিবিআই অফিসে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ হেফাজত থেকেই তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। তারপর থেকে গত দেড় বছর ধরে শুধু বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে থাকছেন তিনি। সিবিআইয়ের এক তদন্তকারীর কথায়, হাসপাতালে থাকার জন্য প্রতি দিন প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে তাঁর।
মনোরঞ্জনা আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী মনোর়ঞ্জনা সংবাদ সম্প্রচার করেছিলেন। সব তথ্যই সিবিআইয়ের কাছে পেশ করা হয়েছে। মনোরঞ্জনা যে কোনও অপরাধ করেননি, তা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই প্রমাণিত।’’
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অরুন মিশ্র ও বিচারপতি অমিতাভ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ১কোটি টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে মনোরঞ্জনার জামিন মঞ্জুর করেন। শর্ত অনুযায়ী, সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার ও নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া মনোরঞ্জনা কলকাতার বাইরে থাকতে পারবেন না। নিম্ন আদালতে তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। প্রতি সপ্তাহে তদন্তকারী অফিসারের কাছে ও নিম্ন আদালতে হাজির হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy