রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। — ফাইল চিত্র।
দণ্ডি-কাণ্ডে দলের অন্দরে সাজার মুখে পড়লেও পুলিশ দাবি করেছে, জেলার প্রাক্তন তৃণমূল মহিলা সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে দোষী আপাতত বলা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় তফসিলি জাতি জনজাতি কমিশনের কাছে পাঠানো রিপোর্টে ওই ঘটনায় কাউকেই এখন পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ। আর তা নিয়েই নতুন করে সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, কেউ দোষী না হলে, কেনই বা দু’জন গ্রেফতার হলেন! দণ্ডি কাটার ঘটনা কী ভাবে আগেই প্রদীপ্তা জানতে পারলেন?
গত ৭ এপ্রিল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার ‘ভুলে’ চার আদিবাসী মহিলা দণ্ডি কেটে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করে তৃণমূলে ফেরেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয় আদিবাসী সংগঠনগুলি এবং বিরোধীরা। বিতর্কে জড়িয়ে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদীপ্তা পদ হারান। ঘটনায় কেন্দ্রীয় তফসিলি জনজাতি কমিশন জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করে। জেলা পুলিশের পাঠানো রিপোর্টটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসে। তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’ রিপোর্টে পুলিশ দাবি করেছে, অভিযুক্ত মহিলারা কারও বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেননি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দণ্ডি কাটার সময় এলাকায় থাকা কয়েক জনের বয়ান নেয় পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে ঘটনায় কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই তৃণমূল কর্মীর ১৮ এপ্রিল শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করে আদালত। তবে মামলাটি এখনও বিচারাধীন। এ দিন একটি ভিডিয়ো-বার্তায় সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কেউ দেখেননি, মহিলারাও অভিযোগ করেননি কারও বিরুদ্ধে, কারও কোনও ক্ষোভ নেই, তা হলে শাসকদল এক জনকে সরালো (পদ থেকে) কেন? আর দু’জন গ্রেফতার কেন হল?’’ পুরো ঘটনায় পুলিশ কেন প্রদীপ্তার বয়ান ‘রেকর্ড’ করল না, সে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। যদিও প্রদীপ্তা ঘটনার পরে দাবি করেন, তিনি দণ্ডি কাটতে বলেননি। সংবাদমাধ্যমে প্রদীপ্তা আগে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, ওই মহিলারা মনে করেছিলেন বিজেপিতে গিয়ে যে তাঁরা ভুল করেছিলেন। তার ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতেই তাঁরা দণ্ডি কাটেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার প্রদীপ্তা কোনও কথা বলতে চাননি। তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠিয়েও জবাব মেলেনি।
ঘটনায় এখনও আদিবাসী সমাজের ক্ষোভ স্তিমিত হয়নি। প্রকৃত অভিযুক্ত গ্রেফতার না হলে, বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রেখেছে আদিবাসী সংগঠনগুলি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই পরিস্থিতি কি ‘অস্বস্তিকর’ নয় শাসক দলের পক্ষে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘আমরা পুলিশকে বলেছিলাম, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে। আশা করব, পুলিশ সে তদন্তই করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy