অভিনব: হাসপাতালে দেখা যাচ্ছে এ রকম বহু সংলাপ। নিজস্ব চিত্র
‘আমার কাছে হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স আছে, তোমার কাছে কি আছে?’ শশী কাপুর প্রশ্নের উত্তরে জানাচ্ছেন, ‘আমার মুখে পান আছে।’ সংলাপের ধরনটা চেনা লাগছে কি? দিওয়ার সিনেমার সেই বিখ্যাত সংলাপই একটু বদলে নিয়ে এখানে সচেতনতা প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে সেখানে পানের পিক, থুতু ফেলা নিয়ে সচেতনতার প্রসারে এ ভাবেই সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ ব্যবহার করা হচ্ছে মালদহের গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে। সূত্রের খবর, এতে ফলও মিলছে হাতেনাতে।
পানের পিক, থুতু ফেললে দিতে হবে জরিমানা। তারপরেও স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সদের চোখ আড়াল হতেই ভবনের কোণে মুখ থেকে ছিটকে পড়ে পানের পিক, থুতু। ফলে নিয়ম অনুযায়ী দিনে দু’বেলা সাফাই করেও পরিষ্কার রাখা যায় না হাসপাতাল ভবন। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতে স্বাস্থ্য দফতরের হাতিয়ার এ বার জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার সংলাপ। মালদহের একাধিক গ্রামীণ হাসপাতালে ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’-এর মতো সিনেমার বহুচর্চিত সংলাপগুলি দিয়ে ঝোলানো হয়েছে সাইনবোর্ড। কর্তৃপক্ষের দাবি, সিনেমার সংলাপ থাকায় হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনদের দ্রুত নজরে পড়বে।
সাফাইকর্মীর অভাব রয়েছে গ্রামীণ হাসপাতাল গুলিতে। পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় নিয়মিত সাফাই করা যায় না হাসপাতালের ওয়ার্ড গুলি। তারপরেও রোগীর আত্মীয় পরিজনদের একাংশ হাসপাতালের আনাচে-কানাচে পান, গুটকা খেয়ে থুতু ফেলে দেন। এমনকি, ওয়ার্ড পরিষ্কার করার পরেও যত্র-তত্র থুতু, নোংরা আবর্জনা ফেলে দেওয়া হয়। ফলে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষদের। কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে যত্র-তত্র পানের পিক, থুতু ফেললে জরিমানা করা হবে বলে সাইন বোর্ড ঝোলানো হয়েছে। তারপরেও থুতু, পানের পিক ফেলা থামানো যায় নি।
হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী আরএনরায় গ্রামীণ হাসপাতাল ঢুকতেই চোখে পড়বে শোলে সিনেমার ভিলেন গব্বর-এর ছবি দেওয়া সাইন বোর্ড। সেখানে গব্বর তার সঙ্গী সাম্ভাকে জিজ্ঞেস করছে, ‘হাসপাতাল নোংরা করার জন্য সরকার কত জরিমানা রেখেছে? সাম্ভা উত্তর দিয়ে জানাচ্ছে, পুরো ২০০ টাকা সর্দার।’’ জরুরি বিভাগে ঢুকতেই সামনের সাইন বোর্ডে হাজির অমিতাভ বচ্চন ও শশী কাপুর হাজির ‘দিওয়ার’ এর সেই সংলাপ নিয়ে।
এখানেই শেষ নয়, বাবুমশাই রাজেশ খান্নারও সিনেমার সংলাপ ঝুলছে হাসপাতাল জুড়েই। পিন্টু সিংহ, প্রতাপ সিংহেরা জানান, সিনেমার বিষয় দ্রুত নজরে পড়ে, মনে থাকেও। জরিমানার কথা লেখা থাকলে অনেকে পড়েও দেখবে না। সেখানে সিনেমার সংলাপ আকারে থাকলে সকলেই পড়বেন। আশা করা যায় একটু সচেতনও হবেন মানুষ। বুলবুলচণ্ডীর মতোই গাজল গ্রামীণ হাসপাতাল হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতেও সিনেমার সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে। জেলার প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতালেই তা ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহাজান নিজাম বলেন, ‘‘সিনেমার সংলাপ ব্যবহার করায় ভাল প্রচার হচ্ছে। ফলে সাফল্য মিলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy