বনমন্ত্রীর জেলায় এক মাসের ব্যবধানে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু চারটি বাইসনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবেশপ্রেমী মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ঘুমপাড়ানি গুলিতেই ওই বন্যপ্রাণীদের মৃত্যু ভবিতব্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাইসনের মৃত্যু এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া থেকে স্থানান্তরের ধকল এড়ানোর মতো বিষয়ে নতুন করে ভাবনার দাবিও উঠেছে। গোটা ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে বনকর্তাদের।
বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “প্রাণহানির আশঙ্কা এড়াতেই ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়তে হয়। তা ছাড়া বাইসনের হৃদযন্ত্র দুর্বল। দৌড়দৌড়ির ধকল তারা সহ্য করতে পারে না। বিকল্প পন্থা নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের প্রেমেরডাঙা এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়া দু’টি বাইসন তাণ্ডব চালায়। জলদাপাড়া থেকে প্রশিক্ষিত বনকর্মীদের পাঠানো হয় বাইসন দু’টিকে কাবু করতে। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবুও করা হয়।
পরে চিলাপাতার জঙ্গলে ওই বাইসন দু’টির মৃত্যু হয়। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেও কোচবিহারের চিলকিরহাট, চান্দামারি এলাকায় দু’টি বাইসন ঢুকে পড়েছিল। কয়েক জন বাইসনের হামলায় জখমও হন। ঘুমপাড়ানি গুলি করে চিলাপাতার জঙ্গলে ছাড়ার জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এমন ঘটনার আরও নজির রয়েছে।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন ঘটছে। এটাকে ভবিতব্য বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বন্যপ্রাণী বাঁচাতে বিকল্প কী করা যায় তা ভাবার সময় এসেছে।”
ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “ঘুমপাড়ানি ওষুধের ডোজের গোলমালেই এমন ঘটছে কিনা সে ব্যাপারেও দেখা দরকার।” পরিবেশপ্রেমীরা জানিয়েছেন, কাবু বাইসনকে ধরে বেঁধে যে ভাবে গাড়িতে তোলা হয় তা কষ্টকর। ক্রেন দিয়ে গাড়িতে তোলা হলে ধকল অনেকটা কমবে।
বনকর্তাদের অবশ্য দাবি, ডোজের গোলমালের ব্যাপার নেই। তা হলে বহু এলাকায় ঘুমপাড়ানি গুলির পরে বাইসন উদ্ধার করে জঙ্গলে ছাড়া সম্ভব হতো না। উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক বলেন, “প্রচুর বাইসন বেঁচেছে। অনেক সময় প্রচুর ভিড়ের জন্যও সমস্যা হয়। ওই বন্যপ্রাণীদের নিয়ে দৌড়াদৌড়ি কম হলে, ঘটনাস্থল থেকে যে জঙ্গলে ছাড়া হবে তার দূরত্ব কম হলে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই কম থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy