এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বুধবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে শামুকতলার ভাটিবাড়িতে। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে দুই ব্যক্তি মোটর সাইকেলে করে রক্তাক্ত এক যুবককে ভাটিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। মোটর সাইকেলটিও জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে যায় তারা। চিকিত্সা শুরুর আধ ঘন্টার মধ্যেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ জানিয়েছে মৃত যুবকের নাম নিমাই দাস (১৯)। বাড়ি শামুকতলা থানার কুমারিজান গ্রামে। পেশায় দিন মজুর ওই যুবক ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন। মাস চারেক আগে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। ভাইফোঁটার পর ফের কাজে যাওয়ার কথা ছিল। এদিন তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওই যুবক কে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে তার পরিবারের লোকেদের অভিযোগ।
এই ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিবেশী পাঁচ যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে চারজনকে ছেড়ে দিলেও এক যুবককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃত যুবকের মোবাইল ফোনটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। মৃত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।” মৃত যুবকের দাদা সিন্ধুলাল দাস জানান, মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁর ভাই প্রতিবেশী দুই যুবকের সঙ্গে ভাটিবাড়ি বাজারে গিয়ে মোটর সাইকেলে তেল ভরে। আটটা নাগাদ একাই বাড়িতে ফিরে আসে। এরপর একটি ফোন পেয়ে ফের বেড়িয়ে যায়। মোবাইল ফোনটি বাড়িতে রেখে যাওয়ায় তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। বুধবার সকালে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। সিন্ধুলালবাবু বলেন, “আমার ভাইকে রীতিমত পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। মুখে মারের চিহ্ন রয়েছে। মুখ চোখ ও কান দিয়ে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়েছে।”
ভাটিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার ভাস্কর সেন বলেন,“এদিন রাত দু’টোর সময় অচৈতন্য অবস্থায় ওই যুবক কে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যান দু’জন। চিকিত্সা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। তাঁর বাঁ চোখে আঘাতের চিহ্ন এবং মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। বাইরে থেকে আঘাত করা হলেই এমনটা হওয়ার কথা। পুলিশ কে জানিয়েছি।” আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক জগদীশ মজুমদার বলেন, “মৃত যুবক এলাকায় ভাল ছেলে বলেই পরিচিত ছিলেন। ওর এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy