Advertisement
১১ মে ২০২৪
Israel-Hamas Conflict

রাফায় শঙ্কাবৃদ্ধি, মিশর সচেষ্ট যুদ্ধবিরতির জন্য

প্রথমে বন্দুকের নলের সামনে রেখে উত্তর গাজ়া ফাঁকা করিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। একে একে মধ্য ভূখণ্ডও গ্রাস করেছে তারা। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ধূলিসাৎ করেছে সব।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
তেল আভিভ শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০১
Share: Save:

সারা মুখে চাপচাপ রক্ত। ছাল উঠে মাংস বেরিয়ে গিয়েছে। বিস্ফোরণে ঝলসে গিয়েছে হাত। রক্তমাখা আঙুল উচিয়ে রয়েছে বালিকা। ধিক্কার জানাচ্ছে ইজ়রায়েলকে। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে এই ছবি। কমেন্ট বক্সে লোকজন লিখেছেন, ‘একটা হলোকস্টের যুক্তি কিছুতেই অন্য একটা হলোকস্ট হতে পারে না!’

প্রথমে বন্দুকের নলের সামনে রেখে উত্তর গাজ়া ফাঁকা করিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। একে একে মধ্য ভূখণ্ডও গ্রাস করেছে তারা। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ধূলিসাৎ করেছে সব। তার পর টানা হামলা চলেছে দক্ষিণে, খান ইউনিসে। এ বার নিশানা গাজ়া ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণপ্রান্ত রাফা। একফালি ছোট্ট একটা অঞ্চলে গা ঘেঁষাঘেষি করে কোনও মতে বেঁচে রয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। কারও মাথার উপরে ত্রিপলের অস্থায়ী ছাউনি জুটেছে, কারও তা-ও নেই। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার নেই, জল নেই। দুর্ভিক্ষ, মহামারি লাগল বলে। অনেকেই বলছেন, গাজ়ার ছবি দেখে নাৎসি জমানার ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’ মনে পড়ে যাচ্ছে। ইজ়রায়েল অবশ্য সে সব শুনতে রাজি নয়। গত কাল মিশরের প্রতিনিধিদল রাফার পরিস্থিতি, যুদ্ধবিরতি ও বন্দি-বিনিময় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিল। সেখানেও ইজ়রায়েলি আধিকারিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, বন্দিদের দেখিয়ে হামাস কিছুতেই রাফা আক্রমণ ঠেকাতে পারবেন না। তাঁরা রাফায় অভিযান শুরু করবেনই। কারণ ওখানে হামাসের জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে।

ইজ়রায়েলের এই দাবি অবশ্য নতুন নয়। উত্তর গাজ়ায় যখন প্রথম স্থল-অভিযান শুরু করেছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী (আইডিএফ), তখনও তারা বলেছিল ওখানে হামাসের ডেরা রয়েছে। আল শিফা হাসপাতাল ধ্বংসের পিছনেও তারা একই কারণ দেখিয়েছে। তবে রাফা-পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় মিশর। রাফা সীমান্ত পেরোলেই মিশর। তাদের আশঙ্কা, কোণঠাসা হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি প্রাণ বাঁচাতে মিশরে অনুপ্রবেশ করবেন। তাতে সে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের ছায়া পড়বে। এই পরিস্থিতি এড়াতে মিশর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হামাস-ইজ়রায়েল শান্তিচুক্তিতে পৌঁছতে। সপ্তাহের শুরুতে ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘চিফ অব স্টাফ’ জেনারেল হার্জ়ি হালেভি কায়রো গিয়েছিলেন। গত কাল মিশরের প্রতিনিধিরা তেল আভিভ আসেন। তাঁরা বন্দি বিনিময় নিয়ে ইজ়রায়েল ও হামাসকে সহাবস্থানে পৌঁছনোর জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও আশার আলো দেখতে পাওয়া যায়নি। বৈঠক শেষে এক শীর্ষস্থানীয় ইজ়রায়েলি আধিকারিক একটি হিব্রু মিডিয়াকে বলেছেন, ‘‘আলোচনা সদর্থক ভাবে এগোচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য স্থির রয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, মিশর জানে এই পরিস্থিতিতে সময় কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা সময় নষ্ট করছে না। সমঝোতায় পৌঁছনোর জন্য হামাসের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে মিশর। ওই ইজ়রায়েলি আধিকারিক আরও বলেছেন, ‘‘সমঝোতায় পৌঁছলেও, হামাস কত জন ইজ়রায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, তার উপর নির্ভর করছে কত দিন যুদ্ধবিরতি চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Israel-Palestine Conflict gaza Egypt ceasefire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE